বিধিভঙ্গের নালিশের নিরিখে সেয়ানে-সেয়ানে লড়াই চলছে খড়্গপুর আর ঘাটালের! ঠোকাঠুকি লাগার উপক্রম!
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, খড়্গপুর (সদর) বিধানসভা এলাকা থেকে যেখানে বিধিভঙ্গের অভিযোগ এসেছে ২৯৮টি, সেখানে ঘাটাল বিধানসভা এলাকা থেকে বিধিভঙ্গের অভিযোগ এসেছে ২৬০টি। নালিশের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছেও! প্রতিদিন, প্রতি ঘণ্টায়!
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, “এ বার রেকর্ড সংখ্যক অভিযোগ আসছে। অবশ্য সমস্ত অভিযোগই খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” অভিযোগ পাওয়ার পরে এসসিসি (মডেল কোড অব কনডাক্ট) সেলের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা দ্রুত পদক্ষেপও করছে। এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে ফ্লাইং স্কোয়াড।
ঠিক কী রকম অভিযোগ আসছে? এমসিসি সেলের দায়িত্বে থাকা এক কর্মী বলছেন, “বিধিভঙ্গের কত রকম অভিযোগ আসছে। কোথাও দলীয় পতাকা খুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে, কোথাও আবার বিধি না মেনে দলীয় পতাকা লাগানোর অভিযোগ উঠছে। দলীয় অফিসে হামলা থেকে কর্মী- সমর্থকদের মারধর, নির্বাচন সংক্রান্ত নানা ধরনের অভিযোগ আসছে।” ওই কর্মীর দাবি, “এর আগেও বিধানসভা, লোকসভা এমনকী পঞ্চায়েত ভোটেও এমসিসি সেলে কাজ করেছি। অভিযোগ এলে নথিভুক্ত করেছি। এত অভিযোগ আগে কখনও আসেনি! এ বার একেবারে হিমশিম অবস্থা!”
বিধানসভা নির্বাচনে এ বার নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে নির্বাচন কমিশন। যে প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজে কমিশনে অভিযোগ জানানো যাচ্ছে। তাই বিধিভঙ্গের নালিশের সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করছেন অনেকে। এ বার সুবিধা, সমাধান, সুগম নামে তিনটি অ্যাপ-সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিধানসভা নির্বাচনে কোথায় কী ঘটনা ঘটছে তা জানতে শুধু ভোটকর্মীদের ভরসায় বসে থাকতে চায়নি কমিশন। সাধারণ মানুষও যাতে ঘটনার খবর পৌঁছে দিতে পারে, তার জন্যই সমাধান নামে মোবাইল অ্যাপ এনেছে কমিশন। কোথাও কোনও গোলমাল হলে যে কেউ এই অ্যাপের মাধ্যমে সেই ছবি পাঠিয়ে দিতে পারেন। এরপর পরিস্থিতি অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেবে কমিশন। যিনি ছবি বা খবর পাঠাবেন, তাঁর পরিচয় গোপন রাখা হবে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “ভোটের দিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তো অভিযোগ জানিয়েই থাকে। কিন্তু সমাধান অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষও কার্যত ভোট- পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করতে পারেন।” কার্যক্ষেত্রে তাই হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ এসেছে ২,১২৩টি। এরমধ্যে খড়্গপুর (সদর) থেকে ২৯৮টি, ঘাটাল থেকে ২৬০টি, পিংলা থেকে ১২২টি, চন্দ্রকোনা থেকে ১০৪টি, দাঁতন থেকে ৩৪টি, খড়্গপুর (গ্রামীণ) থেকে ৭১টি, ডেবরা থেকে ৩৩টি, দাসপুর থেকে ৬৬টি, গড়বেতা থেকে ১৩টি, কেশপুর থেকে ৫৯টি, কেশিয়াড়ি থেকে ১০টি, নারায়ণগড় থেকে ৯৫টি, সবং থেকে ১৭টি। এই ১৩টি বিধানসভা এলাকায় ভোটগ্রহণ ১১ এপ্রিল। অন্য দিকে, ৪ এপ্রিল জেলার যে ৬টি বিধানসভা এলাকায় ভোটগ্রহণ হয়েছে তারমধ্যে মেদিনীপুর থেকে ১৬২টি, বিনপুর থেকে ১১টি, শালবনি থেকে ৩৬৪টি, নয়াগ্রাম থেকে ১৬টি, গোপীবল্লভপুর থেকে ১৫৬টি এবং ঝাড়গ্রাম থেকে ১৪৯টি বিধিভঙ্গের অভিযোগ এসেছিল। শাসক দলের এক কর্মী বলছেন, “নির্বাচন কমিশনের কড়া নজরদারির গেরোয় এ বার সেই ভাবে সর্বত্র পতাকা- ফেস্টুন লাগানো যায়নি। অনেক জায়গা থেকে পতাকা- ফেস্টুন খুলে দেওয়া হয়েছে।” যা শুনে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, “সরকারি জায়গায় যে পতাকা- ফেস্টুন লাগানো যায় না সেটা তো জানা উচিত।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২,১২৩টি অভিযোগের মধ্যে ২,০৩৮টিরই নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy