রচনা দাস।
হস্টেল থেকে উদ্ধার হল মেদিনীপুর কলেজের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ। মৃত রচনা দাস (১৮) রসায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। শনিবার সকালে কলেজের হস্টেলেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ মেলে। রচনার বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির কিশোরনগরে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমরা সবাই শোকাহত।”
কলেজের এক সূত্রে খবর, শুক্রবার প্রথম সেমেস্টারের ফলপ্রকাশ হয়েছে। প্রত্যাশিত নম্বর পাননি রচনা। তাই ফলপ্রকাশের পর থেকে মনমরা হয়েছিলেন তিনি। সেই অবসাদে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করে থাকতেন পারে বলে মনে করছে পুলিশের একাংশ। জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলেন, “এটা তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
মেদিনীপুর কলেজের অদূরে গোলকুয়াচকের কাছে রয়েছে মেদিনীপুর কলেজের গার্লস হস্টেল। সেখানে শতাধিক ছাত্রী থাকেন। কলেজের এক সূত্রে খবর, রচনার ঘরে আরও তিনজন থাকতেন। এ দিন সকালে সাড়ে দশটার সময় যখন ওই ঘটনা ঘটে, তখন তাঁদের দু’জন কলেজে চলে গিয়েছিলেন। ঘরে ছিলেম রচনা এবং তাঁর এক সহপাঠিনী। তাঁকে হঠাৎই স্নান করতে যেতে বলেন রচনা। ওই ছাত্রী জানান, তিনি একটু পরে স্নান করতে যাবেন। তখন রচনা তাঁকে খানিক জোরাজুরি করেই স্নানঘরে পাঠান। তারপর ফাঁকা ঘরে গলায় কাপড়ের ফাঁস লাগিয়ে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলে পড়েন রচনা। স্নানঘর থেকে ফিরে ঘরে ঢুকেই চমকে ওঠেন আর এক ছাত্রী। তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন অন্য আবাসিকেরা।
খবর দেওয়া হয় কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা সহ অনান্য শিক্ষকদের। কলেজ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে।। খবর পেয়ে হস্টেলে আসে পুলিশ। ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুপুরের দিকে রচনার পরিজনেরাও মেদিনীপুরে আসেন। বিকেলে কলেজের পড়ুয়ারা মেদিনীপুর শহরে মোমবাতি মিছিলও করেন।
মেদিনীপুর কলেজের এক সূত্রে জানা গিয়েছে, রচনা মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকেও তিনি খুব ভাল ফল করেছিলেন। তাঁর এই অপমৃত্যুর পিছনে প্রাইভেট টিউশনের কোনও রকম সম্পর্ক রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে নেমে পুলিশের কানে এমন কথাও এসেছে যে, প্রাইভেট টিউশন না পড়ার জন্যই না কি সেমেস্টার আশানুরূপ ফল করতে পারেননি রচনা। রচনার বাবা রামশঙ্কর দাস বলেন, ‘‘মেয়ে বলেছিল পরীক্ষা খারাপ হয়েছে। ওকে বলেছিলাম, এটা কোনও ব্যাপারই নয়। তাও কেন এমন করল বুঝতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy