ব্লক অফিসের সামনে পরিষেবা পেতে অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র
বিডিও-পঞ্চায়েত সমিতির সংঘাত। আপাতত বিডিও ব্লক অফিসে এসে কাজ করছেন। কিন্তু আসছেন না তাঁর পদত্যাগের দাবিতে অনড় পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষেরা।
বদলি বা পদত্যাগ চাইলেও যে সব সময় তা শাসকদলের পক্ষে যায় না। সেটা এখন টের পাচ্ছেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। বিডিওকে বয়কটের আন্দোলনে শামিল হওয়ায় ব্লক অফিসে আসা বন্ধ করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষরা। যা অনেকটাই বিসদৃশ। যদিও পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের একাংশের বক্তব্য,"এ দুর্নীতিগ্রস্ত বিডিওর শেষ দেখে ছাড়ব। বদলি তাঁকে হতেই হবে।" প্রশাসনের পারস্পরিক সহযোগিতা না থাকায় পঞ্চায়েত সমিতিকে ছাড়াই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে বিডিওকে।
গত ১৮ মে থেকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নমিতা সিংহ, সহ সভাপতি গণেশ মাইতি-সহ তৃণমূলের কর্মাধ্যক্ষরা অফিসে আসছেন না। তবে বিডিও নিয়মিত তাঁর চেয়ারে এসে বসছেন এবং কাজ সারছেন। পারস্পরিক এই গোলমালে আপাত সমস্যায় পড়ছেন মকরামপুর এলাকার পশুপতি পরামাণিক, আরতি কোটাল, পাকুড়সেনীর তপন হান্দলদের মতো অনেকেই। কিছু কাজ বিডিওর হস্তক্ষেপে যদিও হচ্ছে। তবে পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি গণেশ মাইতি বলেন," সব কাজ হচ্ছে। আমরা সভাপতি-সহ অন্যরা দলীয় কার্যালয়ে বা স্কুলে বিভিন্ন জায়গায় বসে যাদের যা প্রয়োজন সইসাবুদ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানদের সেই মতো বলা আছে।" তাঁর আরও বক্তব্য," টেন্ডার-সহ আমাদের দিক থেকে যা যা কাজ সব করে দেওয়া আছে। শুধু ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া বাকি। তাতে আমাদের প্রয়োজন নেই।" অফিসে এসে যাঁরা ফিরে যাচ্ছেন তাদের বক্তব্য," জনপ্রতিনিধিরা জনগণের কাজ করবেন। এটাই প্রধান লক্ষ্য। অফিসেই তাদের পাওয়া যাবে। বিডিওর সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলা হচ্ছে কেন ? আমাদের ওসব জানার কথা নয়। আমাদের পরিষেবা চাই।" পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরীর দাবি, "উন্নয়নের কাজ ঠিকঠাকভাবেই চলছে। যেখানে সমস্যা থাকে, তার সমাধানে সেখানে পদক্ষেপও করা হয়।"
বিডিও কৃশানু রায়ের সঙ্গে অসহযোগিতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে তাঁর জন্য বরাদ্দ গাড়িটিকেও অফিসে আসতে 'না' বলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে তাঁর কাজের ক্ষেত্রেও অসুবিধা হচ্ছে। গত ১৭ মে থেকে গাড়ি তিনি পাচ্ছেন না। নারায়ণগড় ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি ও বর্তমান জেলা কমিটির সদস্য মিহির চন্দ বলেন," সমিতির অভিযোগ যদি অসত্য হয় তাহলে তাদের বুঝিয়ে বলা দরকার আর যদি অভিযোগ সত্য হয় তাহলে বিডিওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এটা কেন প্রশাসন বুঝছে না। তবেই তো সমাধান হয়ে যেত।" অপরদিকে সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ তথা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুকুমার জানা বলেন," নিষ্পত্তির ব্যপারটা একেবারেই প্রশাসনের হাতে।"
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দে কাজকর্মের গতি এখানে সন্তোষজনক নয়। সমিতির এক সূত্রে খবর, গত মার্চ ২০২০-২০২১ সালের অগস্ট পর্যন্ত প্রায় তিনকোটি টাকা খরচ হয়। যার কারণ বিডিওর সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির গোলমাল। তখন মার্চের এক সময় দেখা গিয়েছিল, তখনও পর্যন্ত কমিশনের বরাদ্দ ২ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে। সাপ্তাহিক খরচের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৯ লক্ষ টাকা। সেখানে খরচ করা সম্ভব হয়েছিল মাত্র ১৪ লক্ষ টাকা।
যতই সংঘাত হোক তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনই বিডিওর কোনও বদলির নির্দেশ হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই কাজ চালাতে পারবেন বিডিও। মঙ্গলবার দীর্ঘক্ষণ বিডিও কৃশানু রায়ের সঙ্গে জেলা শাসক খুরশেদ আলি কাদেরীর বৈঠক হয়েছে। সেখানে স্পষ্টতই কৃশানুকে 'রক্ষা কবচ' দেওয়া হয়েছে বলেই খবর।
(সহ প্রতিবেদন: বরুণ দে) চলবে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy