ধৃতদের তোলা হচ্ছে হলদিয়া আদালতে। নিজস্ব চিত্র।
নন্দীগ্রামে বিজেপিকর্মী খুনের ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের জামাই-সহ ১১ তৃণমূলকর্মীকে গ্রেফতার করল সিবিআই। শনিবার সকলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের তিন দিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগে এই প্রথম এত জনকে একসঙ্গে গ্রেফতার করা হল। নন্দীগ্রামে ওই খুনের মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল সুফিয়ানের বিরুদ্ধেও। তবে হলদিয়া মহকুমা আদালতে সিবিআই যে চার্জশিট জমা দিয়েছে তাতে সুফিয়ানের নাম নেই। ওই ঘটনাকে ‘নৈতিক জয়’ হিসাবেই দাবি করেছেন সুফিয়ান। যদিও ওই কাণ্ডে সিবিআই সুফিয়ানের জামাই শেখ হাবিবুলকে গ্রেফতার করেছে।
রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরনোর পর নিহত হন নন্দীগ্রামের চিল্লোগ্রামের বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি। তাঁকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার তদন্ত শনিবার আচমকা নয়া মোড় নিল। হলদিয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১১ জনকে ডেকে পাঠায় সিবিআই। তাঁদের প্রথমে আটক করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। এর পর তাঁদের গ্রেফতার করে হলদিয়া মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। ধৃতদের মধ্যে একঝাঁক তৃণমূলের নেতা-কর্মী রয়েছেন।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শেখ সাহাউদ্দিন, শেখ বাইতুল ইসলাম, শেখ হাবিবুল, শেখ মুখতার রহমান, শেখ মহিদুল ইসলাম, হায়াতুল ইসলাম শেখ, শেখ আতুল রহমান, শেখ মুখতাদির, শেখ মুস্তাক রহমান, আব্দুল হাই শেখ এবং শেখ নাজিরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে শেখ সাহাউদ্দিন কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী। শেখ বাইতুল ইসলাম নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী এবং শেখ হাবিবুল মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। এ ছাড়া হাবিবুল সুফিয়ানের জামাই।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই গোটা নন্দীগ্রাম জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিজেপি-র অভিযোগ, গত ২ মে রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর নন্দীগ্রামের কেন্দামারি-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় একদল উন্মত্ত তৃণমূলকর্মী। নিজের বাড়িতে হামলা চলাকালীন তা প্রতিহত করতে গিয়েই গুরুতর জখম হন চিল্লোগ্রামের বাসিন্দা দেবব্রত। পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
দেবব্রত খুনের তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে। গত ৩০ আগষ্ট দেবব্রত খুনের ঘটনায় সিবিআই একটি মামলা দায়ের করে। দিন কয়েক আগে ওই মামলায় হলদিয়া আদালতে চার্জশিটও জমা দেয় সিবিআই। সেখানে কেবলমাত্র তিন জনের নাম ছিল। ওই কাণ্ডে সুফিয়ানকেও জেরা করে সিবিআই। শনিবার নতুন করে ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হলদিয়ায় ডেকে পাঠানো হয়। ইতিমধ্যেই এই মামলায় আরও এক অভিযুক্ত জেল হেফাজতে রয়েছেন। যদিও আরও দুই অভিযুক্ত এখন জামিনে মুক্ত।
সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন অভিযুক্তদের আইনজীবী বিমলকুমার মাজি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই মামলায় ৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। এর পর সিবিআই তদন্তে নেমে গত ৫ অক্টোবর চার্জশিট জমা দেয় আদালতে। সেখানে ধৃত তিন জনের নাম উল্লেখ ছিল। চার্জশিটে কোথাও অন্য কারও জড়িত থাকার কথা বলা নেই।’’ তিনি আরও বলেন,‘‘এই ১১ জনকে এর আগেও ৩ বার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা প্রতি বার হাজির হয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy