Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
East Midnapore

Midnapore: প্লাস্টিক বন্ধ নয় পুরোপুরি, কিছুটা সাড়া

কাঁথি শহরের বিভিন্ন বাজারে আনাজ, মাছ দোকানে অন্যান্য দিনের মত এ দিনও প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করে বেচাকেনা চলেছে।

পলিথিন হাতে বাড়ির পথে। তমলুকের রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

পলিথিন হাতে বাড়ির পথে। তমলুকের রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
পূর্ব মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২২ ০৭:১৬
Share: Save:

চালু হয়েছে আইন। সেই আইন কেউ মানলেন। কেউ ভাঙলেন।

সিঙ্গল ইউজ় প্লাস্টিক দ্রব্য তৈরি, আমদানি, সরবরাহ ও বিক্রিতে দেশ জুড়ে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে শুক্রবার থেকে। ইতিমধ্যে ৭৫ মাইক্রনের কম প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিয়ম কার্যকর হওয়ার প্রথম দিনে পূর্ব মেদিনীপুরে দেখা গেল মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ নিয়ম মেনে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ (নির্ধারিত মানের চেয়ে কম মাইক্রন) দিতে অস্বীকার করলেন। কোথাও আবার রথের মেলায় প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে দেদার বিক্রি হল জিলিপি।

বাজারে দোকানপাটে জিনিসপত্র বেচাকেনার ক্ষেত্রে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের বন্ধের আগে প্রশাসনের তরফে জোর দেওয়া হয়েছিল প্রচারে। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মানুষকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করতে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুক শহরের বিভিন্ন বাজারে কয়েকদিন আগে থেকে মাইক প্রচার চালানো হচ্ছিল। খোদ পুরপ্রধানের নেতৃত্বে শহরের দোকানে দোকানে ঘুরে প্রচার চালানো হয়। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরী হওয়ার প্রথমদিন শুক্রবার সকালে তমলুক শহরে বড়বাজারের অধিকাংশ মুদি, খাবার, মাছ দোকান-সহ বিভিন্ন স্থায়ী দোকানে দেখা গিয়েছে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার হয়নি। বড়বাজারের একটি পাউরুটি দোকানে একজন ক্রেতা পাউরুটি কেনার পর প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ দেওয়ার জন্য দোকানদারকে দেওয়ার অনুরোধ জানালেও তা দিতে রাজি হননি তিনি। প্রয়োজনে জিনিস না দিয়ে টাকা ফেরত দিতে চান ওই ব্যবসায়ী।

বড়বাজারে দেখা গিয়েছে অন্য ছবিও। অস্থায়ী ফুল, আনাজ, ফলের দোকানে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে ভরেই জিনিসপত্র দিতে দেখা গিয়েছে। এ দিন তমলুক শহরের জেলখানা মোড় এলাকায় মহাপ্রভু মন্দিরের রথযাত্রা উপলক্ষে পুজোর সামগ্রীর কয়েকটি অস্থায়ী দোকান বসেছে। ওইসব দোকানে জিনিসপত্র দেওয়ার জন্য প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ পরিবর্তে কাগজের ঠোঙা ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে। তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, ‘‘জিনিসপত্র বেচাকেনায় প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করতে দোকানদার ও ক্রেতাদের সচেতন করতে পুরসভার তরফে আগে থেকে প্রচার চালানো হয়েছিল। প্রথম দিনে শহরের অধিকাংশ ব্যবসায়ী নিয়ম মেনে চলেছেন। এখনও যাঁরা নিয়ম মানেননি তাঁদের সচেতন করতে ফের প্রচার চালানো হবে।’’ শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকেরডিমারি রথের মেলা ও মেচেদা বাজারে ইস্কনের রথের মেলায় জিলিপি- সহ বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার দেখা গিয়েছে।

এ বারের রথের মেলায় প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে প্রশাসন থেকে আগে প্রচার করা হয়েছিল। তবে গ্রামাঞ্চলে এ নিয়ে কড়াকড়ি না থাকায় পাঁশকুড়ার পঞ্চমদুর্গা, বলরামপুর রথের মেলায় মিষ্টির দোকানে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার হয়েছে। কোলাঘাটের রাধামাধব মন্দিরের রথের মেলায় প্রচুর দর্শনার্থীর ভিড় হয়েছিল। তবে প্রশাসনের পাশাপাশি মেলার উদ্যোক্তারা প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগী হয়েছিলেন। এখানকার মেলায় দোকানদাররা কাপড়ের ক্যারিব্যাগে মিষ্টি-সহ অন্য খাবার বিক্রি করেন।

শিল্পশহর হলদিয়ার টাউনশীপ, দুর্গাচক, চিরঞ্জীবপুর ও ব্রজলালচক বাজারে এ দিন অধিকাংশ দোকানে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার প্রায় বন্ধ ছিল। যদিও জেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী মহিষাদলের রথের মেলায় এবারও অস্থায়ী খাবার দোকানগুলিতে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার হচ্ছে ।

কাঁথি শহরের বিভিন্ন বাজারে আনাজ, মাছ দোকানে অন্যান্য দিনের মত এ দিনও প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করে বেচাকেনা চলেছে। পর্যটন কেন্দ্র দিঘায় প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ও থার্মোকলের ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে বৃস্পতিবার দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ণ পর্ষদ ও রামনগর-১ ব্লক প্রশাসনের তরফে প্রচার চালানো হয়েছিল। যদিও দিঘা, মন্দারমণিতে কিছু কিছু জায়গায় প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে। কাঁথি মহকুমায় ৩০০ বছরের প্রাচীন রথের মেলা বসে ডেমুরিয়া’তে । এদিন এই রথের মেলায় বসা দোকানে কাঁঠাল, জিলিপি সহ বিভিন্ন খাবার বিক্রি হয়েছে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে ভরেই। কাঁথি-৩ ব্লকের ঐতিহ্যবাহী বাহিরী রথের মেলাতেও বিভিন্ন দোকানে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে ভরে জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছে । প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার নিষেধ হলেও বাজার ও রথের মেলায় কোথাও এ দিন প্রশাসনের নজরদারি ছিল না বলে অভিযোগ।

এগরা মহকুমার বিভিন্নস্থানে রথের মেলাতেও বিভিন্ন খাবারের দোকানে দোকানপাটে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার চলেছে অভিযোগ। এগরা শহর, বাসুদেবপুর, পটাশপুরের টেপরপাড়ায় রথের মেলায় আম, কাঁঠাল, চপ, জিলিপি প্রভৃতি খাবার দোকান, এমনকি খেলনার দোকানে প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। রথের মেলায় পুলিশ মোতায়েন থাকলেও এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এগরা শহরে রথের মেলায় আসা স্থানীয় বাসিন্দা জয়ন্ত মাইতি বলেন, ‘‘প্লাস্টিক ক্যারি ব্যাগ নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে কিছু জানা নেই। দোকানদার প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে ভরে জিনিস দিয়েছে, এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলেনি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

East Midnapore plastic bag
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy