তির-ধনুক হাতে অবরোধে মহিলারা। নিজস্ব চিত্র
বন্ধ বাড়ি থেকে আদিবাসী এক যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধারে উত্তেজনা ছড়াল পিংলায়। শুরু হল রাজনৈতিক চাপানউতোরও।
শনিবার পিংলার কুসুমদা পঞ্চায়েতের বীরসিংহপুর গ্রামের এক বন্ধ বাড়ি থেকে স্থানীয় যুবক সূর্যকান্ত হেমব্রম (২৪)-এর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বাড়ির মালিক ডেবরার বাসিন্দা শেখ মইদুল। গত ২৪ জুলাই থেকে নিখোঁজ ছিলেন সূর্যকান্ত। ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে শেখ মইদুল ও তাঁর বাবা শেখ মহসিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের মা সারমণি হেমব্রম। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। যাঁর বাড়ি থেকে দেহ পাওয়া গিয়েছে তাঁকেও জেরা করা হচ্ছে। পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী মামলা হবে।”
ঘটনায় জুড়েছে রাজনীতিও। দোষীদের শাস্তির দাবিতে এ দিন পিংলার মুণ্ডমারিতে গ্রামবাসীদের পথ অবরোধ চলাকালীন সেখানে পৌঁছন বিজেপির জেলা সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “এলাকার লোক বলেছে ওই যুবক আমাদের দলের কর্মী। আর যাঁর বাড়ি থেকে দেহ পাওয়া গিয়েছে তিনি তৃণমূলের কর্মী। আমাদের ধারণা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই খুন করা হয়েছে।” ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন সিপিএম নেতারাও। দলের এরিয়া কমিটির সম্পাদক কালীপদ মান্ডির দাবি, “ওই যুবকের পরিবার আমাদের দলের সমর্থক। ওঁর কোনও শত্রু ছিল না। রাজনৈতিক অভিসন্ধি থাকতে পারে।”
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শেখ সবরাতির বক্তব্য, “যাঁর বাড়ি থেকে দেহ পাওয়া গিয়েছে তিনি পিংলায় থাকনে না। তাই আমাদের দলের কর্মী কিনা জানা নেই। অকারণে ঘটনায় তৃণমূলকে জড়িয়ে রাজনীতির চেষ্টা হচ্ছে।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, বাবা চরণ হেমব্রমের সঙ্গে চাষবাস করতেন সূর্যকান্ত। বছর তিনেক আগে তিনি বিয়ে করেছিলেন। বছর দু’য়েকের ছেলেও রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে আদিবাসী এই পরিবার সিপিএমের কৃষক সংগঠনের সমর্থক। গত ২৪ জুলাই পাশের গ্রাম মোহনপুরে বন্ধুর বিয়েতে যাবে বলে বেরিয়েছিলেন সূর্যকান্ত। দু’দিন পরেও বাড়ি না ফেরায় শুক্রবার খোঁজখবর শুরু করে পরিবার। তবে খোঁজ মেলেনি। এ দিন ভোরে স্থানীয় ফুলচাষিদের কয়েকজন দেখেন, শেখ মইদুলের বন্ধ বাড়ি থেকে পচাগলা দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। পরে থানায় গিয়ে সূর্যকান্তের মা সারমণি দেহ শনাক্ত করেন। খুনের অভিযোগ দায়ের হয়।
সারমণি বলছিলেন, “গত বুধবার বিয়েবাড়ি যাবে বলে আমার থেকে দশ টাকা নিয়ে বেরিয়েছিল ছেলে। কিন্তু আর ফিরল না। মনে হচ্ছে ওকে খুন করেছে শেখ মইদুল ও তার বাবা মহসিন। ওদের শাস্তি চাই।” স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ গ্রামবাসীর সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই দেহ উদ্ধার করেছে। পড়শি বিধান মান্ডি বলেন, “সূর্যকান্তকে প্রথমে মাথায় লাঠি দিয়ে মেরে তার পরে বিদ্যুতের তার হাতে জড়িয়ে খুন করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করুক।” পরে পুলিশ মইদুলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy