Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
toutists

‘নোঙর’ উঠুক নৌকাবিহারের, আর্জি

সমস্ত নিয়ম মেনে ফের নৌকাবিহারের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছেন এলাকার মাঝিরা।

পর্যটকের অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র।

পর্যটকের অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোলাঘাট শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:০৪
Share: Save:

এক দশক আগের একটি মর্মান্তিক নৌকাডুবি। তাতে মারা গিয়েছিলেন ২০ জন পর্যটক। ওই ঘটনা পাল্টে দিয়েছে কোলাঘাটের রূপনারায়ণের মাঝিদের বড়দিনের বাড়তি রোজগারের পথ। নৌকা বিহার বন্ধ থাকায় ওই এলাকায় আগের মতো পর্যটকও আসেন না বলে দাবি। তাই সমস্ত নিয়ম মেনে ফের নৌকাবিহারের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছেন এলাকার মাঝিরা।

২০১০ সালের আগে কোলাঘাটে রূপনারায়ণ নদে চালু ছিল নৌকা বিহার। দুই মেদিনীপুরের পাশাপাশি হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, দুই চব্বিশ পরগনা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পর্যটক এখানে আসতেন পিকনিক আর নৌকা বিহারের টানে। গোটা শীতের মরসুমে নৌকা বিহারের জন্য প্রায় ১০০টি নৌকো রূপনারায়ণ বক্ষে ভেসে বেড়াত। মাছ ধরার পাশাপাশি শীতের মরসুমে নৌকা বিহার করে বাড়তি আয়ের মুখও দেখেতেন এলাকার মৎস্যজীবীরা।

২০১০ সালের ৪ জানুয়ারি কলকাতার উল্টোডাঙা থেকে কোলাঘাটে পিকনিক করতে আসে একটি দল। ওই দলের ২৫ জন সদস্যকে নিয়ে কোলাঘাট রেল ব্রিজের কাছে ডুবে যায় একটি নৌকাটি। তাতে ১৯ জনের মৃত্যু হয়। একজন নিখোঁজ থেকে যান। ওই ঘটনার পর থেকে কোলাঘাটে নৌকা বিহার বন্ধ করে দেয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।

নৌকা বিহার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বড়দিন-সহ শীতের মরসুমে কোলাঘাটে পর্যটকের ভিড় কমে গিয়েছে। পাল্লা দিয়ে কমেছে রূপনারায়ণে মাছের জোগান। রুজিতে টান পড়েছে এলাকার অন্তত ১৬০টি মৎস্যজীবী পরিবারের। শীতের মরসুমে নৌকা বিহার করে যে আয় হত তা-ও বন্ধ আজ দশ বছর। পেটের দায়ে অনেক বদলে ফেলেছেন পেশা। কেউ কেউ আবার মাছ কিনে এনে ব্যবসা করেন। তাই প্রশান্ত, গোপাল, মহাদেবদের মতো বহু মৎস্যজীবীই চান নির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করে ফের নৌকা বিহারে অনুমতি দিক প্রশাসন। কোলা গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত খাঁড়া বলেন, ‘‘বৃদ্ধ বাবা, মা, স্ত্রী-সহ ছ'জনের সংসার। বছর দশেক আগের বড়দিনগুলি আমাদের কাছে সত্যিই বড়দিন ছিল। সারাদিন পর্যটকদের নিয়ে ঘুরতাম। দিনের শেষে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতাম। সবাই মিলে বাড়িতে ভাল-মন্দ রান্না করে খেতাম। কিন্তু একটা দুর্ঘটনাই আমাদের জীবনে অন্ধকার নিয়ে এসেছে।’’

সাহাপুর গ্রামের গোপাল বারিক বলছিলেন, ‘‘পথ দুর্ঘটনা হলে কি আর যান চলাচল চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফের নৌকা বিহার চালু করার জন্য আমরা প্রশাসনের দেওয়া সমস্ত শর্ত মানতে রাজি। নৌকা বিহার চালু হলে এলাকার আর্থ সামাজিক চিত্রটা বদলে যাবে।’’ মৎস্যজীবীদের ওই দাবির বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘ওঁদের দাবিটি চিন্তাভাবনা করে দেখা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

toutists Kolaghat Boating Boatmen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE