বিকল হয়ে যাওয়া সেই ট্রলার। শঙ্করপুরে। নিজস্ব চিত্র।
প্রবল ঝড়ো হাওয়া আর বৃষ্টি। দুইয়ের জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উত্তাল ছিল সমুদ্র। তার মধ্যেই মাছ ধরে ফেরার পথে সমুদ্রে একটি ট্রলার বিকল হয়ে পড়ায় আটকে পড়েন তার মৎস্যজীবীরা। তবে শেষ পর্যন্ত এ দিন সন্ধ্যা নাগাদ আটকে পড়া ওই ট্রলার ও তার মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করে নিরাপদে শঙ্করপুরে ফিরে আসেন অন্য ট্রলারের মৎস্যজীবীরা।
গভীর নিম্নচাপের জন্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মৎস্য দফতর মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। জেলার সহ মৎস্য অধিকর্তা (মেরিন) রামকৃষ্ণ সর্দার বলেন, ‘‘আগামী ২৪ ঘণ্টা মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে যাঁরা সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছেন, তাঁদের অবিলম্বে উপকূলে ফিরে আসার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’’
মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দিঘায় ফিরে আসছিল ‘আজমাতুলবাহার’ নামে ওই ট্রলারটি। গত বুধবার ৯ জন মৎস্যজীবীকে নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিল ট্রলারটি। কিন্তু দিঘা থেকে প্রায় চার নটিক্যাল মাইল দূরে সমুদ্রে ট্রলারটি হঠাৎ বিকল হয়ে পড়ে। মৎস্যজীবীরা সেখানেই ট্রলারটি নোঙর করেন এবং ট্রলারের মালিক জুনপুটের বাসিন্দা শেখ ফৈজুদ্দিনকে খবর পাঠান। এ দিন শঙ্করপুরে ফিরে আসার পর ওই ট্রলারের এক মৎস্যজীহী শেক মাজেদ বলেন, ‘‘প্রথমে ট্রলারের জ্বালানি ফুরিয়ে যায়। তারপর সেটি বিকল হয়ে পড়ে। ওয়্যারলেস খারাপ হয়ে যায়। তবে আমরা সবাই নিরাপদেই ছিলাম। তবে সৌভাগ্য যে সমুদ্র পাড় থেকে বেশি দূরে ছিলাম না ফেরার পথে ট্রলার আমাদের দেখতে পায়। তাঁদের সাহায্যে ফিরে আসতে পেরেছি।’’
ওই ট্রলারের মালিক শেখ ফৈজুদ্দিন বলেন, “ট্রলারে আটকে পড়া মৎস্যজীবীদের সঙ্গে প্রথম থেকেই যোগাযোগ রেখেছিলাম। কাছাকাছি থাকা অন্য ট্রলারগুলিতে চেপে তাঁদের ফিরে আসতে বলেছিলাম। পরে ট্রলারটিও ঠিক হয়। সকলেই নির্বিঘ্নে ফিরে আসতে পেরেছে।’’ রামকৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘ট্রলার ব্রেকডাউনের খবর পেয়েছিলাম। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে ওই ট্রলার ও তার মৎস্যজীবীদের উদ্ধারে খবরও পাঠিয়েছিলাম।’’
দিনভর ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও প্রবল ঝোড়ো বাতাসে সমুদ্র উত্তাল থাকায় পর্যটকদের উদ্দেশে সমু্দ্রে না নামার জন্য বৃহস্পতিবার মাইকে প্রচার করেছে পুলিশ। নুলিয়া ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদেরও তৈরি থাকতে বলা হয়। শুক্রবার পর্যন্ত এই সতর্কতা থাকবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঝোড়ো হওয়ার কারণে রাতে জোয়ারের সময় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছে পুলিশ। তাই সমুদ্রের কাছে যাতে কেউ না যান সে জন্য চলছে কড়া নজরদারি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy