Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Ram Mandir Inauguration

লোকসভাপিছু যাবেন ৬ হাজার ‘ভক্ত’, গেরুয়া প্রচারে এখন রামলালার দর্শন

লোকসভা ভোট পর্যন্ত রামমন্দির হাওয়া জিইয়ে রাখতে তৎপর গেরুয়া শিবির। অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের এ বার প্রচার শুরু হল রামমন্দির দর্শনের।

রামমন্দির হাওয়া জিইয়ে রাখতে তৎপর গেরুয়া শিবির।

রামমন্দির হাওয়া জিইয়ে রাখতে তৎপর গেরুয়া শিবির। —ফাইল চিত্র।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:২১
Share: Save:

শেষ হয়ে হইল না শেষ।

লোকসভা ভোট পর্যন্ত রামমন্দির হাওয়া জিইয়ে রাখতে তৎপর গেরুয়া শিবির। অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের এ বার প্রচার শুরু হল রামমন্দির দর্শনের। প্রচারে সামনে থাকছেন সঙ্ঘের স্বেচ্ছাসেবকেরা, পিছনে বিজেপির নেতা-কর্মীরা। পশ্চিম মেদিনীপুরে দু’টি লোকসভা- মেদিনীপুর এবং ঘাটাল। প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্র থেকে ৬ হাজার, অর্থাৎ জেলা থেকে সবমিলিয়ে ১২ হাজার ‘রামভক্ত’কে অযোধ্যায় নিয়ে গিয়ে রামমন্দির দর্শনের উদ্যোগ হয়েছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর।

সব ঠিক থাকলে আগামী ২৯ জানুয়ারি থেকেই অযোধ্যা-সফর শুরু হবে। চলবে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, এই পর্বে অযোধ্যাগামী ট্রেন পাওয়া যাবে প্রতিদিনই। সামান্য অনুদানের মাধ্যমে এই সফরের শরিক হতে পারেন ইচ্ছুক ‘রামভক্ত’রা। ওই সময়কালে দক্ষিণবঙ্গ থেকে দিনে একটি করে ট্রেন অযোধ্যা রওনা দেবেই। জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ রায় বলেন, ‘‘অযোধ্যায় যেতে আগ্রহী অনেকেই ট্রাস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁদের রামমন্দির দর্শনেনিয়ে যাওয়া হবে।’’ খরচ কত? গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, হাওড়া থেকে গেলে খরচ ১,৬০০ টাকা। বর্ধমান থেকে ১,৪০০ টাকা। আসানসোল থেকে ১,২০০ টাকা। এর মধ্যেই ট্রেনে যাতায়াত, রাত্রিবাস, আহারাদি- সব হয়ে যাবে।

প্রচারে জানানো হচ্ছে, যাত্রারম্ভের কমপক্ষে ১২ দিন আগে অবশ্যই অনুদান জমা করতে হবে। সঙ্গে জমা দিতে হবে আধার কার্ডের প্রতিলিপি, পাসপোর্ট সাইজের ছবি। এ দিয়ে নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। এই সফরের জন্য জেলায় একাধিক যোগাযোগ প্রমুখও নিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি দেখছেন। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, সারা দেশের ৩২ লক্ষ ৫৮ হাজার মানুষকে অযোধ্যায় রামমন্দির দর্শনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের ১২ হাজার জন রয়েছেন। জেলা বিজেপির এক নেতা আশাবাদী, তাঁরা লক্ষ্যমাত্রা ছোঁবেনই। তাঁর সংযোজন, ‘‘এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়ে যে কেউ রামমন্দির দর্শনে যেতে পারেন। তাঁকে বিজেপি করতে হবে, এমন কোনও মানে নেই!’’

সালটা ১৯৯০। অযোধ্যায় করসেবায় গিয়ে পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছিলেন কলকাতার বড়বাজারের বাসিন্দা রাম ও শরদ কোঠারি। করসেবক হিসেবে সে দিন অযোধ্যায় ছিলেন মেদিনীপুরের মনোরঞ্জন কবি। পুলিশের চোখে ‘ধুলো’ দিয়ে তিনি পৌঁছেছিলেন সেখানে। এখন তিনি ৮২। অশীতিপর এই বৃদ্ধ আরএসএসের সক্রিয় কর্মী। জরুরি অবস্থার সময় তিন মাস জেল খেটেছিলেন। পেশায় ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক। সেই মনোরঞ্জন বলছেন, ‘‘রামমন্দির হয়েছে। খুব খুশি আমরা। যাব আরেকবার ওখানে।’’

রামমন্দিরের উদ্বোধনের আবেগ ছড়িয়ে দিতে তৎপর ছিল সঙ্ঘ পরিবার। সে দিন সন্ধ্যায় অকাল দীপাবলি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। সঙ্ঘ সূত্রের দাবি, এতে আশাতীত সাড়া মিলেছে। লোকসভা ভোটের আগে পর্যন্ত এই উন্মাদনা জিইয়ে রাখতে তৎপর হয়েছে গেরুয়া শিবির। ইতিমধ্যে নির্দেশ পৌঁছেছে, এলাকার সাধারণ কোনও মানুষ অযোধ্যায় যেতে চান কি না, তার খোঁজ নিতে হবে। রামমন্দির দর্শনের জন্য অযোধ্যার যোগাযোগ ব্যবস্থা কী কী থাকছে, কোন কোন পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে, সে সব তাঁদের জানাতে হবে। ইচ্ছুকদের নাম নথিভুক্ত করতে হবে।

স্পষ্টভাবে এও জানানো হয়েছে যে, রামমন্দির দর্শনের সময় বিজেপির পতাকা ব্যবহার করা যাবে না। তবে ট্রেন-সফরে ‘তিসরি বার, মোদী সরকার’- এমন স্লোগান কেউ দিলে, আপত্তির কিছু নেই। এ সবের ব্যবস্থাপনায় জেলায় না কি তিনজনের কমিটি গঠন করা হয়েছে? সদুত্তর এড়িয়ে জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘এটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। এর সঙ্গে দলের সরাসরি যোগ নেই।’’

বিজেপি-বিরোধীদের বক্তব্য, রাম-আবেগ উস্কে ভোট পেতে চাইছে বিজেপি। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষের কথায়, ‘‘ভোটে জিততে রামের শরণাপন্ন হয়েছে ওরা। ধর্ম নিয়ে ওরা রাজনীতি করে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Ayodhya Ram Mandir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy