চলছে গোলমাল। বুধবার খড়্গপুর শহরে। নিজস্ব চিত্র
অযোধ্যায় হবে রামমন্দির। বুধবার সেখানে ভূমিপুজোয় ইট গাঁথা হয়েছে। অভিযোগ, রেলশহরে গেরুয়া সমর্থকদের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এসডিপিও সুকোমল দাস-সহ এক কনস্টেবল।
গোলমালের আশঙ্কা ছিলই। কারণ, লকডাউন ভেঙে মন্দিরে পুজোপাঠের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। দিন কয়েক আগে থেকেই বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনায় চড়ছিল উত্তেজনার পারদ। এ দিন দেখা গেল, কথা মতোই শহরের একাধিক জায়গায় লকডাউন বিধি ভেঙে পুজোয় শামিল হলেন গেরুয়া নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা। পুলিশের সঙ্গে সংঘাতেও জড়ালেন তাঁরা। খড়্গপুর পুর এলাকার অধীনের থাকা খড়্গপুর টাউন থানায় ৭০ জন ও গ্রামীন থানায় ৩০জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, ধৃতদের মধ্যে বিজেপির নেতা-কর্মী ছাড়াও তৃণমূলের ৭ জন কর্মী রয়েছেন।
সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ছড়িয়েছে তালবাগিচা রথতলায় পুজো ঘিরে। সেখানে গিয়ে বিজেপি কর্মীদের সতর্ক করার পরেও পুজো বন্ধ না হওয়ায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নেতৃত্বে ছিলেন এসডিপিও সুকোমল দাস। তিনি বলেন, “ধৃতদের নিয়ে আসার সময়ে মহিলা-সহ বিজেপির কয়েকজন আমাদের দু’টি গাড়ি ঘেরাও করে। তখন আমরা মহিলা পুলিশ ডেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে ইট ছুড়তে থাকে ওঁরা। তাতে আমি ও কয়েকজন কর্মী চোট পেয়েছি।” বিজেপির অভিযোগ, তালবাগিচায় পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে।
লকডাউন কার্যকর করতে মন্দিরে-মন্দিরে বসানো হয়েছিল সিসিটিভি ক্যামেরা। অবশ্য তার পরেও নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। শহরের ইন্দা, সুভাষপল্লি, ওল্ড মালঞ্চ, তালবাগিচা রথতলা-সহ একাধিক হনুমান মন্দিরে পুজোপাঠের আয়োজন করে বিজেপি। এ দিন ওল্ড মালঞ্চর হনুমান মন্দিরে পুজো চলাকালীন মন্দিরে ঢুকে বিজেপির খড়্গপুর বিধানসভার পর্যবেক্ষক অভিষেক অগ্রবাল-সহ ১১জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে সাংসদ কার্যালয়ে নিবিঘ্নে হয়েছে যজ্ঞ-পুজো করেছেন বিজেপির শহর নেতা গৌতম ভট্টাচার্য। ইন্দায় হনুমান মন্দিরে নিবিঘ্নে পুজো দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তৃণমূল বিধায়ক প্রদীপ সরকার প্রশাসনের উপর ‘চাপ’ বাড়িয়ে মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘বিজেপি মন্দিরে পুজো করলে, আমরা মন্দিরে গিয়ে রাম বন্দনা করব।’’ যদিও এ দিন মন্দিরমুখো হয়নি তৃণমূল। এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি প্রদীপ।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ আসলে তৃণমূলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছে। তৃণমূলের হয়ে পুলিশ আমাদের কর্মীদের মারধর করে গ্রেফতার করেছে। তালবাগিচায় বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের মেরেছে। এভাবে দেশের পাঁচশো বছরের রামমন্দির আন্দোলনের ইতিহাস মুছে দেওয়া যাবে না।” যদিও বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “লকডাউন ভাঙায় শুধু বিজেপি নয়, তৃণমূলের কয়েকজনকেও আমরা গ্রেফতার করেছি। তাই এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। লাঠিচার্জ হয়নি।”
পুজোপাঠ ঘিরে অশান্তি ছাড়া রেলশহর এবং গোটা মহকুমায় বড় কোনও গোলমালের খবর মেলেনি। সম্পূর্ণ লকডাউনে দোকানপাট ছিল বন্ধ। যানবাহনও তেমন চলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy