Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪

পুলিশকেই জেলে পোরার হুমকি ভারতীর

সে দিন ভারতীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘নতুন পুলিশ সুপার আসার পরে যে কেশপুর রিকভারি প্ল্যান বানিয়েছেন, আমরা তা জানি। জেলার পুলিশ সুপারকে বলে যাচ্ছি, আপনার প্ল্যান- প্রোগ্রাম আমরা জেনে গিয়েছি।

বক্তা ভারতী ঘোষ। পাশে সায়ন্তন বসু। নিজস্ব চিত্র

বক্তা ভারতী ঘোষ। পাশে সায়ন্তন বসু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ০০:৩৮
Share: Save:

সপ্তাহ তিনেক আগেও কেশপুরে এসে পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার কেশপুরে এসে সেই পুলিশকেই মামলায় জড়িয়ে জেল খাটানোর হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি নেত্রী তথা জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ।

সে দিন ভারতীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘নতুন পুলিশ সুপার আসার পরে যে কেশপুর রিকভারি প্ল্যান বানিয়েছেন, আমরা তা জানি। জেলার পুলিশ সুপারকে বলে যাচ্ছি, আপনার প্ল্যান- প্রোগ্রাম আমরা জেনে গিয়েছি। আপনাদের যেমন সিআইডি রয়েছে, আমাদের তেমন সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স রয়েছে।’’ সুর আরও চড়িয়ে এ দিন তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমরা সব জানি। প্রতিটি জিনিস নজরে রাখছি। আইপিএস থেকে কনস্টেবল—ভাল করে শুনুন, আমরা হিসেব ঠিক চুকিয়ে দেব। আমরা ক্ষমতায় এসে আপনাদের নামে কেস দিয়ে ঠিক ওখানেই (জেলে) পাঠাব, যেখানে আমাদের কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে আপনারা পাঠাচ্ছেন।’’

লোকসভা ভোট ফুরিয়েছে। তবে দিনে দিনে ‘তপ্ত’ হচ্ছে কেশপুর। তৃণমূল ও বিজেপি—কেউ কাউকে বিনা লড়াইয়ে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ। সপ্তাহ খানেক আগে কেশপুরে এসে পদযাত্রা করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের সেই পদযাত্রা শুরু হয়েছিল সরুই থেকে। পদযাত্রা শেষে কেশপুর বাসস্ট্যান্ডে সভা হয়। মঙ্গলবার বিজেপির মিছিল শুরু হয় বারো মাইল থেকে। মিছিল শেষে সেই কেশপুর বাসস্ট্যান্ডেই সভা হয়েছে। সভায় ভারতীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এখানে মাঝে মাঝে একজন নায়ক (পড়ুন দেব) আসেন। নায়ক এসে অভিনয় করেন। ভাল ভাল কথা বলেন। মানুষ কি বোঝে না? মানুষ কি বোকা? কেশপুরকে আর ঠকানো যাবে না।’’ পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘৭ জুলাই যখন মহানায়ক (পড়ুন শুভেন্দু) এখানে আসেন, আমাদের সব পতাকা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে পরে আমাদের দলের কয়েকজন কর্মী আক্রান্তও হন।’’ এ দিন দলের এক কর্মীর লেখা কবিতাও পাঠ করেছেন ভারতী। তাঁকে পড়তে শোনা গিয়েছে, ‘‘ক্ষুদিরামের মাটি দুর্গম ঘাঁটি, দুর্বার, দুর্জয়...।’’ কর্মীদের ভিড় থেকে তখন স্লোগান উঠেছে, ‘জয় শ্রীরাম।’

ভারতী ছাড়াও বিজেপির কর্মসূচিতে ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। সায়ন্তনও পুলিশকে একহাত নেন। পুলিশ- প্রশাসন তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘এখানকার পুলিশের ওসিকে বলছি, দাদা, আর কত বছর চাকরি করবেন? দিদিমণি তো আর এক বছর আছেন। তারপর তো বিজেপি সরকারের আমলে চাকরি করতে হবে।’’ ঘটনাচক্রে ক'দিন আগেই কেশপুর থানার ওসি- র বদলি হয়েছে। প্রশান্ত কীর্তনিয়ার জায়গায় নতুন ওসি হয়েছেন বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি খড়্গপুর লোকাল থানার ওসি ছিলেন। প্রশান্তকে খড়্গপুর টাউন থানায় পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার সভা চলাকালীন কেশপুর বাসস্ট্যান্ডে পানীয় জলের পাইপ লাইন ভেঙে দেয় বিজেপির একদল লোক। তাদের অভিযোগ, পাইপ লাইনে জল সরবরাহ ইচ্ছে করে বন্ধ রাখা হয়েছিল। যদিও তৃণমূল প্রভাবিত কেশপুর বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এই অভিযোগ মানেনি। তাদের দাবি, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় সময় মতো ট্যাঙ্কে জল তোলা যায়নি।

কেশপুরে এ দিন বিজেপির সভা থেকে তো সরাসরি পুলিশকেই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে? পুলিশ কি কোনও ব্যবস্থা নেবে? পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে যে ব্যবস্থা নেওয়ার সেটা নিশ্চিতভাবেই নেওয়া হবে।’’ পুলিশের এক সূত্রে খবর, কেশপুর থানার কাছ থেকে এ নিয়ে রিপোর্টও তলব করেছেন জেলা পুলিশ সুপার।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Bharati Ghosh Keshpur Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy