ভারতী ঘোষ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রাজনীতিতে রামজীবনপুর পুরসভা যে তাদের পাখির চোখ সেটা আগেই বুঝিয়েছে বিজেপি। সাম্প্রতিক দলবদলের পরে এই পুরসভায় অনাস্থাও এনেছে তারা। বুধবার সেই রামজীবনপুর থেকেই ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার গাঁধী সঙ্কল্প যাত্রা শুরু করল গেরুয়া শিবির। সেখানে গিয়ে ভারতী ঘোষ বলে দিলেন, “রামজীবনপুর দিয়েই এই জেলায় বিজেপির পুরসভার জয়যাত্রা শুরু হবে। আগামী দিনে জেলার সব পুরসভা বিজেপির দখলে আসবে।” একই সঙ্গে এ দিন বিকেল কেশপুরের আনন্দপুর বাসস্ট্যান্ডে দলীয় ধিক্কার সভায় গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তিনি।
এ দিন সকালে রামজীবনপুর থেকে শুরু হয়ে শ্রীনগর, পলাশচাবড়ি হয়ে বিজেপির সঙ্কল্প যাত্রা শেষ হয় চন্দ্রকোনায়। বৃহস্পতিবার ঘাটাল থেকে ওই যাত্রা শুরু হবে। তারপর দাসপুর, কেশপুর পর্যায়ক্রমে চলবে ওই কর্মসূচি। সামনেই রাজ্যের অনেক পুরসভায় নির্বাচন হওয়ার কথা। দিলীপ ঘোষ সাংসদ হয়ে যাওয়ার পরে খড়্গপুর (শহর) আসনটিতেও যে কোনও সময়ে উপনির্বাচন হতে পারে। সেই আবহেই এ দিন রামজীবনপুর থেকে সঙ্কল্প যাত্রা শুরু হয়। বিজেপির ঘাটাল সাংগাঠনিক জেলার সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য জানান, বুধবার রামজীবনপুর থেকে সঙ্কল্প যাত্রা শুরু করা হল। এ বার ঘাটাল, দাসপুর, কেশপুর-সহ সব এলাকাতেই নির্দিষ্ট দিনেই ওই কর্মসূচি পালিত হবে। এছাড়া কাল, শুক্রবার রামজীবনপুরের পুরাতনহাট এলাকায় সভাও করবে বিজেপি।
রামজীবনপুর পুরসভায় অনাস্থা আনার পরে পুরপ্রধান বা উপ পুরপ্রধান কেউই তলবি সভা ডাকেননি। বিজেপির অভিযোগ, অনাস্থায় হার নিশ্চিত বুঝেই তলবি সভা ডাকছে না তৃণমূল। গত সপ্তাহে দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে বিজেপির তিন কাউন্সিলর সেই তলবি সভা ডেকেছেন। আগামী ২৩ অক্টোবর সেই সভা হওয়ার কথা। বিজেপির স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ, তাদের কাউন্সিলরদের উপরে নজরদারি চালাচ্ছে তৃণমূল। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, এ সব মিথ্যা অভিযোগ। তাদের কাছে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।
লোকসভা ভোটের পর থেকে কেশপুরেও বিজেপির সক্রিয়তা লক্ষ্যনীয় ভাবে বেড়েছে। এ দিন রামজীবনপুরে দলের গাঁধী সঙ্কল্প যাত্রার সূচনা করে কেশপুরের আনন্দপুরে চলে আসেন ভারতী। গত কয়েকদিন ধরেই তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে আনন্দপুরের বিভিন্ন এলাকা তেতে উঠেছে। দিন কয়েক আগেই আনন্দপুর থানার ওসি বদলি হয়েছেন। দলীয় কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগে বুধবার সেই থানাই ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। সেখানে পথসভায় পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দেগে ভারতী বলেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগে দলের আর কেউ গ্রেফতার হলে প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া হবে।’’
এ দিন আনন্দপুর থানার সামনে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল পুলিশ। বিজেপির কেশপুর মধ্য মণ্ডলের সভাপতি রঙ্গলাল বটব্যালের দাবি, ‘‘মঙ্গলবার রাতে দলের নির্দেশে আমরা আনন্দপুর থানা ঘেরাওয়ের ডাক দিই। বুধবার সকালে উঠে শুনি আনন্দপুর থানায় সামনে ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ। গাঁধী অহিংসায় বিশ্বাসী ছিলেন। তাই এ দিন আমরা থানা ঘেরাও কর্মসূচি বাতিল করে কানাশোল থেকে আনিন্দপুর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার ধিক্কার মিছিল ও আনন্দপুর বাসস্ট্যান্ডে পথসভা করি।’’ পুলিশ অবশ্য ১৪৪ ধারা জারি করার অভিযোগ মানেনি। জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি বিবেচনা করেই আনন্দপুর থানা চত্বরে কিছু ব্যবস্থা করেছিল। এর বেশি কিছু নয়।’’
এ দিন আনন্দপুরের মিছিলে আসার পথে দলের মহিলা কর্মীদের তৃণমূল বাধা দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে বিজেপি। অভিযোগ অস্বীকার করে কেশপুরের তৃণমূল নেতা মহম্মদ রফিক বলেন, ‘‘আমরা কাউকে বাধা দিইনি। বিজেপিই আনন্দপুরকে অশান্ত করতে চাইছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy