Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ষাঁড়ের গুঁতো, ক্ষিপ্ত দাঁতাল পিষে মারল চারটি গরুকে

চলার পথে পর পর তিনটি বাড়িতে চড়াও হয় ক্ষিপ্ত হাতিটি। উঠোনে বাঁধা চার-চারটি গরুকে দাঁত দিয়ে আঘাত করে। তারপর পা দিয়ে পিষে মেরে ফেলে। হাতির আক্রমণে আরও দু’টি গরু জখম হয়েছে। দু’টি বাড়িও আংশিক ভেঙেছে। 

ঝাড়গ্রামের ডাহিপাল গ্রামে হাতির হানায় ভেঙেছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

ঝাড়গ্রামের ডাহিপাল গ্রামে হাতির হানায় ভেঙেছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৫৮
Share: Save:

গ্রামের রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো দলছুট হাতিটিকে গুঁতিয়ে দিয়েছিল একটি ষাঁড়। হাতির তাড়ায় পরে সেই ষাঁড় চম্পট দিলেও হাতি গেল খেপে। নিল প্রতিশোধও।

চলার পথে পর পর তিনটি বাড়িতে চড়াও হয় ক্ষিপ্ত হাতিটি। উঠোনে বাঁধা চার-চারটি গরুকে দাঁত দিয়ে আঘাত করে। তারপর পা দিয়ে পিষে মেরে ফেলে। হাতির আক্রমণে আরও দু’টি গরু জখম হয়েছে। দু’টি বাড়িও আংশিক ভেঙেছে।

সোমবার রাতে ঘটনা ঘটেছে ঝাড়গ্রামের বাঁধগোড়া অঞ্চলের ডাহিপাল গ্রামে। বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত দশটা নাগাদ রামরামার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে একটি হাতি ডাহিপাল গ্রামে ঢুকে পড়ে। রাস্তায় হাতিটি একটি ষাঁড়ের সামনে পড়ে যায়। ষাঁড়টি গুঁতিয়ে দেয় হাতিটিকে। হাতিটি খেপে গিয়ে তাড়া করতেই ষাঁড়টি পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের দাবি, এরপরেই হাতিটি পর পর তিনটি বাড়িতে চড়াও হয়।

প্রথমে সিভিক ভলান্টিয়ার প্রদীপ দাসের বাড়ির সামনে বাঁধা একটি গরুকে শুঁড়ে আছড়ে পিষে মারে হাতি। আওয়াজ শুনে ছুটে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন প্রদীপের মেজদা নির্মল। তিনি বলেন, ‘‘হাতিটি দুলছিল। মনে হচ্ছিল উন্মত্ত।’’ কাছেই নির্মলের কাকা বনমালী দাসের বাড়ি। হাতিটি বন‌মালীর বাড়ির উঠোনে বাঁধা একটি গরুকেও লাথি মেরে ঘষটে নিয়ে যায় নির্মল-প্রদীপের বাড়ির দিকে। গরু বাঁচাতে নির্মল তড়িঘড়ি দু’-তিনটি গরুর দড়ি খুলে দেন। হাতি দেখে উঠোনে বাঁধা বাকি গরুগুলি দড়ি ছিঁড়ে পালায়। এরপরই হাতিটি চড়াও হয় নির্মলের জেঠতুতো দাদা নৃপেন দাসের বাড়িতে। নৃপেনের মাটির বাড়ির একাংশ ভেঙে দেয় হাতিটি। ওই উঠোনেই ছিল একটি বাছুর। হাতিটি বাছুরটিকে শুঁড়ে জড়িয়ে আছড়ে মারে। নির্মল বলেন, ‘‘ইট-পাটকেল ছুঁড়ে হাতিটিকে কোনও মতে তাড়াই।’’

তাড়া খেয়ে হাতিটি কিছুটা দূরে সুরজিৎ দাসের উঠোনে হামলা চালায়। সেখানে বাঁধা একটি গরুর পেটে দাঁত ঢুকিয়ে মেরেও ফেলে। গ্রামবাসীদের হইহট্টগোলে শেষে দাঁতালটি বাঁশতলার জঙ্গলের দিকে চলে যায়। নির্মলের মেয়ে মানিকপাড়া কলেজের ছাত্রী পৌলমী দাস বলেন, ‘‘রাতে পড়ছিলাম। আচমকা হাতির এমন তাণ্ডব দেখে ভয় পেয়ে যাই। হাতিটি আশেপাশের বাড়ি ভাঙতে থাকায় প্রাণভয়ে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিই।’’ হাতির হামলায় নির্মল দাসের আরও দু’টি গরু গুরুতর জখম হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, বহু বার এলাকায় হাতি ঢুকেছে। কিন্তু এভাবে হাতিকে কখনও গরু মারতে দেখা যায়নি।

ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হলাইচ্চিও বলছেন, ‘‘সাধারণত হাতিকে কখনও এমন করতে দেখা যায়নি। হাতিটির উপর নজর রাখা হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পাবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant Cow
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy