প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় আগেই ঘর তৈরির টাকা পেয়েছিলেন স্বামী। সেই টাকায় নতুন ঘরও তৈরি হয়ে গিয়েছে। এ বার বাংলার বাড়ি প্রকল্পে নাম তুলে আরও একটি বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল স্ত্রীর বিরুদ্ধে। তবে ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই মান বাঁচাতে তাঁর দাবি, ‘‘স্বামীর সঙ্গে তো ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে।’’
নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের সোনাচূড়া পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। ইতিমধ্যেই ওই মহিলাকে নোটিস ধরিয়েছে ব্লক প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, খেজুরি ২ ব্লকের মানসিংহবেড় গ্রামের বাসিন্দা শেখ সেরাজুল হোসেন ২০১৭-১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য টাকা পেয়েছিলেন। সেই টাকায় তিনি একটি বাড়িও তৈরি করেছেন। পাশের নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের সোনাচূড়ার ভাঙাবেড়া এলাকায় সেরাজুলের একটি জায়গা রয়েছে। একটি কাঁচা বাড়িও রয়েছে সেখানে। তালপাটি খালে মাছ ধরতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই ওই বাড়িতে যান সেরাজুলের স্ত্রী সাইমা বিবি। অভিযোগ, সেখানে একটি পাকা বাড়ি তৈরি করতেই বাংলা আবাস যোজনায় আবেদন করেছিলেন তিনি।
তদন্তে নেমে ব্লক প্রশাসন জানতে পেরেছে, প্রথমেই খেজুরি থেকে নাম কাটিয়ে নন্দীগ্রামের ভোটার তালিকায় নাম তুলেছিলেন সাইমা। এর পর ভাঙাচোরা মাটির বাড়িটি দেখিয়ে নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া পঞ্চায়েতের মাধ্যমে বাংলা বাড়ি প্রকল্পে নাম তোলেন। কিছু দিন আগে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা সাইমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল। এর পরেই স্থানীয় কয়েক জন বিষয়টি ব্লক প্রশাসনের নজরে নিয়ে আনেন।
বিষয়টি নজরে আসার পর নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের বিডিও সেরাজুল ও তাঁর পরিবার সম্পর্কে বিশদ জানতে খেজুরি ২ ব্লকের বিডিওকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেন। সেই তদন্তেই সবটা উঠে আসে। খেজুরি ২ বিডিওর তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই সাইমার কাছ থেকে টাকা ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে নন্দীগ্রাম ১-এর ব্লক প্রশাসন।
সোনাচূড়া গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, ব্লক প্রশাসনের নোটিস সাইমার হাতে তুলে দেওয়া হলে তিনি দাবি করেন, স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। যদিও সূত্রের খবর, ভাঙাবেড়ায় সাইমা যে নতুন বাড়ি বানাতে শুরু করেছেন, সেই কাজের নিয়মিত তদারকি করছেন তাঁর স্বামী সেরাজুল। তাই সাইমার কথাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ ব্লক প্রশাসন। নন্দীগ্রাম ১ ব্লক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইমাকে আগামী শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে। স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তার সত্যতা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।