Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Belpahari

দিদিকে বলেই জুটল পাকা রাস্তা

দেড় দশক আগে মাওবাদীরা-শাসন করত ওই এলাকা। পচাপানি গ্রামের রাস্তাটির দাবিতে ওই সময় পোস্টারও সাঁটিয়েছিল মাওবাদীরা।

নারকেল ফাটিয়ে রাস্তার কাজের সূচনা করছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি। নিজস্ব চিত্র

নারকেল ফাটিয়ে রাস্তার কাজের সূচনা করছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁশপাহাড়ি শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ০০:৫৬
Share: Save:

‘দিদিকে বলো’য় অভিযোগ জানিয়ে অবশেষে পাকা রাস্তা পেল বেলপাহাড়ির বাঁশপাহাড়ি পঞ্চায়েতের পচাপানি গ্রাম। শনিবার পচাপানিতে রাস্তার কাজের সূচনা করলেন ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস। ছিলেন বিনপুরের বিধায়ক খগেন্দ্রনাথ হেমব্রম, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো প্রমুখ।

শুভ্রা জানান, জেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রায় আড়াই কিমি ওই রাস্তার কাজ হবে মোট তিনটি পর্যায়ে। টেন্ডার করে তিনটি ঠিকাদারি সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। আগামী ছ’মাসের মধ্যে রাস্তার কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। বাঁশপাহাড়ি থেকে জোড়ামহুল হয়ে পচাপানি পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিমি রাস্তার কাজের জন্য মোট বরাদ্দ হয়েছে ৯৩ লক্ষ ৩৭ হাজার ৭০৪ টাকা। রাস্তার কিছুটা পিচের হবে এবং বাকি কংক্রিটের ঢালাই রাস্তা হবে।

দেড় দশক আগে মাওবাদীরা-শাসন করত ওই এলাকা। পচাপানি গ্রামের রাস্তাটির দাবিতে ওই সময় পোস্টারও সাঁটিয়েছিল মাওবাদীরা। বাম জমানায় পচাপানি গ্রামের রাস্তা আর তৈরি হয়নি। পরে তৃণমূলের জমানায় বিক্ষিপ্ত ভাবে রাস্তাটির কিছু অংশ ঢালাই ও পিচের হয়। কিন্তু পচাপানি গ্রামের জনবহুল এলাকার রাস্তাটি মাটিরই থেকে গিয়েছিল। বাঁশপাহাড়ি চক থেকে পচাপানি হয়ে চাকাডোবা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিমি রাস্তাটি দিয়ে রোজই এলাকার ১০-১২টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। বছর তিনেক আগে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় চাকাডোবা থেকে পচাপানির দিকে আড়াই কিমি অংশ রাস্তাটি পিচের হয়। কিন্তু বাঁশপাহাড়ি থেকে জোড়ামহুল হয়ে পচাপানি যাওয়ার প্রায় আড়াই কিমি অংশ এখনও মাটির। খানাখন্দে ভরা ওই রাস্তায় বৃষ্টি হলে যাতায়াত করাই যায় না। এই রাস্তা দিয়ে পচাপানির পড়ুয়ারা সাইকেলে বাঁশপাহাড়ির হাইস্কুলে যায়। সাইকেল থেকে পড়ে অনেকে জখমও হয়।

পচাপানি থেকে বাঁকুড়ার পুতলাডাঙা মোড় হয়ে শর্ট-কাটে বাঁকুড়ার বারিকুল ও রাইপুরে যাওয়া যায়। ফলে পণ্যবাহী লরি ও যানবাহনও চলে এই রাস্তায়। বহুবার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েও রাস্তাটির কাজ হয়নি। রাস্তার দাবিতে একাধিক বার অবরোধ করেছেন বাসিন্দারা। বেহাল রাস্তায় ধানগাছ পুঁতে প্রতিবাদও জানিয়েছিলেন। গত বছর অক্টোবরে পচাপানিতে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে গিয়ে রাস্তার দাবিতে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিনপুরের বিধায়ক খগেন্দ্রনাথ হেমব্রম। শেষ পর্যন্ত ‘দিদিকে বলো’য় ফোন করে অভিযোগ জানান গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা।

এরপরেই নবান্নের নির্দেশে সক্রিয় হয় ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদ। রাস্তার টেন্ডার ডাকা হয়। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো মানছেন, মাটির রাস্তাটি ঢালাই হলে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের যন্ত্রণা লাঘব হবে।

সূত্রের খবর, ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে বাঁশপাহাড়ি পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করে আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ। রাজনীতির ‘আমরা-ওরা’র কারণেই এতদিন রাস্তা তৈরির হয়নি বলে অভিযোগ একাংশ বাসিন্দার। যদিও জেলা সভাধিপতি মাধবী বলেন, ‘‘রাজ্য থেকে প্রকল্প অনুমোদন করিয়ে বরাদ্দ মেলার পরে কাজ শুরু হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Belpahari Didi Ke Bolo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy