বারকোড হাতে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা।—ছবি পিটিআই।
কেউ ডাক পেলেন। কেউ পেলেন না। কেউ জেলা কোর কমিটির সদস্য হয়েও ডাক পেলেন ব্লক কমিটির সদস্য হিসেবে। আবার কারও নামে একসঙ্গে দু’টি কার্ড চলে এল।
সোমবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের সাংগঠনিক সভা ছিল। মূল বক্তা ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই সভার মূল দায়িত্বে ছিল ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা। প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত এই সভার জন্য জেলায় জেলায় বার কোড- সহ পাস পাঠানো হয়েছিল। ঝাড়গ্রামে দলের অনেক পদাধিকারী সেই পাস পাননি। পশ্চিম মেদিনীপুরেও বেশ কয়েকজনের নামে ছাপানো পাস আসেনি। পরে তাঁরা অবশ্য হাতে লেখা পাস পেয়েছেন। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বিরবাহা সরেন মেনেছেন, কারা ওই সভায় যাবেন তা উপর মহল থেকেই ঠিক হয়েছে। কিছু ভুলভ্রান্তিও হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মহলকে জানানো হয়েছে। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, কলকাতার বৈঠকে যাঁদের যাওয়ার কথা ছিল, তাঁরা সকলেই গিয়েছিলেন। এ নিয়ে কারও কোনও ক্ষোভ নেই।
ঝাড়গ্রামে যাঁরা পাস পাননি তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মানিকপাড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহাশিস মাহাতো। তিনি জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্যও বটে। মহাশিসের প্রশ্ন, ‘‘অন্য দল থেকে তৃণমূলে এসেছি বলেই কী আমাদের সভায় যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হল না?’’ চুবকা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উদয় সেন বলেন, "গত পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় দলের খারাপ ফল হলেও চুবকা গ্রাম পঞ্চায়েত জিতেছি। গত লোকসভা ভোটেও আমার অঞ্চলে তৃণমূলের লিড ছিল। তারপরও এমন অসম্মান মেনে নিতে পারছি না।’’ সাপধরা পঞ্চায়েতের প্রধান বিনোদ মাহাতোর ক্ষোভ, ‘‘রবিবারও জেলা কার্যালয়ে গিয়ে খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু আমার নামে কোনও কার্ড আসেনি।’’
ঝাড়গ্রাম জেলা কোর কমিটির সদস্য অমল কর আবার গোপীবল্লভপুর-১ নম্বর ব্লক কমিটির সদস্য হিসেবে পাস পেয়েছেন। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসা এই নেতার কথায়, ‘‘জেলা কোর কমিটির সদস্য হলেও আমাকে কেন ব্লক কমিটির সদস্য হিসেবে পাস দেওয়া হয়েছে বুঝলাম না। তাই যাইনি।’’ ঝাড়গ্রাম শহরের বিশ্বরঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের আবার দাবি, তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি হলেও সেই ওয়ার্ডে সভাপতি হিসেবে অন্য একজন পাস পেয়েছেন। তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের ঝাড়গ্রাম জেলা কার্যকরী সভাপতি শেখ ইরশাদ আলিও পাস পাননি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ছবিটা কিছুটা আলাদা। মেদিনীপুর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের যুব তৃণমূল সভাপতি তন্ময় বসাক সহ অনেকেই গোড়ায় পাস পাননি। তবে জেলা নেতৃত্বকে জানানোর পরে সোমবার নেতাজি ইন্ডোরের সামনে থেকেই হাতে লেখা পাস পেয়েছেন তাঁরা। জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রথমে ১,০৮১ জনের নামে পাস এসেছিল। পরে আরও ৪৮ জনকে পাস দেওয়া হয়েছে। নেতাজি ইন্ডোরের সামনে থেকে পাস নিয়েছেন ১৬ জন। জেলা তৃণমূলের এক নেতার স্বীকারোক্তি, ‘‘প্রথমে প্রায় ১২০ জনের নামে পাস আসেনি। পরে বলে কয়ে আনাতে হয়েছে।’’ খড়্গপুরে অবশ্য জনপ্রতিনিধিদের প্রায় সবাই পাস পেয়েছিলেন। পিংলা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, “আমাদের এলাকার সকলেই সভায় গিয়েছিলেন। তবে গেট খুঁজতে সময় লেগেছিল।” মোহনপুর ও কেশিয়াড়ির তৃণমূল নেতাদের কয়েকজনের ক্ষোভ, "জনপ্রতিনিধিরা ভিআইপি পাস পেয়েছেন। আমরা সাধারণ। এ কেমন ব্যবস্থা!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy