প্রতীকী ছবি
করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলার প্রথম কোনও বাসিন্দার মৃত্যুর পরে বাড়তি তৎপর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। মৃত বৃদ্ধ চন্দ্রকোনা রোডের গুইয়াদহের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর পরোক্ষ সংস্পর্শে কারা এসেছেন তা-ও খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নজরে রয়েছে জেলার একটি ব্যাঙ্ক এবং একটি নার্সিংহোমও। জানা যাচ্ছে, বাড়ির বাইরে ওই বৃদ্ধের অন্য কোথাও যাতায়াতের তথ্য নেই। শুধু পেনশন তুলতে চলতি মাসে একবার ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন। পরে অসুস্থ হয়ে নার্সিংহোমে যান। পরে সেখান থেকে তিনি কলকাতার এক হাসপাতালে পাঠানো হয় তাঁকে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা মানছেন, ‘‘ওই বৃদ্ধের পরোক্ষ সংস্পর্শে কারা এসেছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উদ্বেগের কিছু নেই।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এখনও ওই বৃদ্ধের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসায় যাঁদের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাঁদের সকলেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তবে কী ভাবে বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধ করোনায় সংক্রমিত হলেন, তা নিয়ে ধন্দে জেলার একাংশ স্বাস্থ্য আধিকারিক, তাঁর পরিজনেরাও। এক পরিজনের কথায়, ‘‘ওঁর করোনার উপসর্গই ছিল না।’’ জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকও মানছেন, ‘‘দেড়- দু’মাসে ওই বৃদ্ধের বাইরে যাতায়াতের কোনও তথ্য নেই।’’ অনেকের অনুমান, ওই বৃদ্ধ কলকাতায় গিয়েই সংক্রমিত হয়েছেন।
অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক ওই বৃদ্ধ শুক্রবার গভীর রাতে কলকাতার এক হাসপাতালে মারা যান। কলকাতার অন্য এক হাসপাতালেই তাঁর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। পরে তাঁকে ওই হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। জানা যাচ্ছে, কলকাতার এক হাসপাতালে তাঁর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই অবশ্য মৃত্যু হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে কলকাতা— এই সময়ের মধ্যে ওই বৃদ্ধের গতিবিধি ঠিক কী ছিল?
জেলা স্বাস্থ্যভবনের এক সূত্রে খবর, গায়ে জ্বর নিয়ে ওই বৃদ্ধ চন্দ্রকোনা টাউনের এক নার্সিংহোমে যান ১৩ মে। ওই নার্সিংহোমের এক জরুরি ওয়ার্ডে ২-৩ ঘন্টা ছিলেন তিনি। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো এক স্বাস্থ্যকর্মী বৃদ্ধকে ইঞ্জেকশন এবং ওষুধপত্র দিয়েছিলেন। পরে গাড়ি ভাড়া করে তিনি কলকাতা রওনা হন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে-সহ দু’জন। পূর্ব মেদিনীপুরের মেচোগ্রামের কাছে গাড়ি বদলে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয় ওই বৃদ্ধকে। প্রথমে তাঁকে ভর্তি করানো হয় কলকাতার সায়েন্স সিটির কাছের এক হাসপাতালে। পরে অন্য হাসপাতালে যান। ১৯ মে তাঁর লালারসের নমুনা নেওয়া হয়। ২০ মে তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরে তাঁকে কলকাতার অন্য একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই মৃত্যু হয়।
জানা যাচ্ছে, গত ৩ মে ওই বৃদ্ধ পেনশন তুলতে ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন। আর বাড়ি থেকে বেরোননি ওই বৃদ্ধ। সূত্রের খবর, বৃদ্ধের সরাসরি সংস্পর্শে এসেছেন ৮ জন। এর মধ্যে তাঁর স্ত্রী, ছেলে, বৌমা যেমন রয়েছেন, তেমনই চন্দ্রকোনা শহরের ওই নার্সিংহোমের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছেন। পরোক্ষ সংস্পর্শে ঠিক কতজন এসেছেন? সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ৪ জনের নাম মিলেছে। এর মধ্যে ভাড়া করা গাড়ির চালক, ভাড়া করা অ্যাম্বুল্যান্সের চালক, বৃদ্ধের বাড়ির পরিচারকও রয়েছেন। জেলা স্বাস্থ্যভবনের এক সূত্রের দাবি, ওই বৃদ্ধের কিডনির সমস্যার পাশাপাশি তাঁর রক্তে শর্করা বা সুগারের মাত্রা বেশি ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy