Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

নোটের চোটে মন্দা কেকের বাজারেও

নোটের চোটে কেকের বাজারে মন্দার ছায়া! দিন কয়েক বাদেই বড়দিন। অন্য বছর এই সময় খড়্গপুর শহরের পাঁচবেড়িয়ার প্রায় ২০টি বেকারিতে এখন কাজে ভাটা।

কাজ কম বেকারিতে। — রামপ্রসাদ সাউ।

কাজ কম বেকারিতে। — রামপ্রসাদ সাউ।

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

নোটের চোটে কেকের বাজারে মন্দার ছায়া!

দিন কয়েক বাদেই বড়দিন। অন্য বছর এই সময় খড়্গপুর শহরের পাঁচবেড়িয়ার প্রায় ২০টি বেকারিতে এখন কাজে ভাটা। একদিকে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা পেতে ভোগান্তি, অন্য দিকে খুচরোর আকাল। অনেক বেকারি এখনও কেক তৈরিই শুরু করতে পারেননি কারিগররা।

খড়্গপুরে প্রতিবছরই বড়দিন ঘিরে উদ্দীপনা থাকে চোখে পড়ার মতো। পাঁচবেড়িয়ার বেকারিগুলি থেকেই রেলশহরের অধিকাংশ জায়গায় পাউরুটি, পেস্ট্রি কেক, বিস্কুট সরবরাহ হয়। পুরনো ৫০০-১০০০ টাকার বাতিলের পর থেকেই নোটের আকালে কাঁচামাল কিনতে সমস্যায় পড়ছেন বেকারির মালিকেরা। ফলে উৎপাদনও কার্যত লাটে উঠেছে। আবার বাজারেও খুচরোর আকালের দরুন অনেক দোকানদার কেক-বিস্কুটের দাম বকেয়া রাখছেন। ফলে সমস্যা আরও বাড়ছে।

গত কয়েকদিন ধরে কমিশন বৃদ্ধির দাবিতে হকারদের ডাকা ধর্মঘটে আরও ক্ষতি বেড়েছে। বড়দিনের আগে পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হবে, তা নিয়েও সংশয়ে বেকারি মালিকরা। পাঁচবেড়িয়ার সাত্তারচকের একটি বেকারি কারখানার মালিক ইকবাল হুসেন বলেন, “বাজারে নতুন নোট এলেও খুচরোর অভাব। ব্যাঙ্ক থেকেও টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। বড়দিনের জন্য কেক তৈরি করে আদৌ লাভ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।”

পাঁচবেড়িয়ার বামনিআড়া এলাকার এক বড় কেক প্রস্তুতকারী কারখানার মালিক মুন্সি জোবেদ আলি, শেখ মইনুদ্দিনেরাও বলছিলেন, “প্রতিবার বড়দিনের আগে কেকে তৈরির জন্য প্রায় ২০ গামলা কাঁচামাল লাগে। মূলত ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই কেক তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এ বার এখনও বড়দিনের কেক তৈরি শুরু হয়নি।’’ তাঁদের কথায়, ‘‘বাজারে খুচরোর আকাল। এ বার এত টাকা খরচ করে কেক তৈরি করব। তার পরে বিক্রি না হলে কী হবে!”

অন্য এক বেকারির মালিক আবু জাহেদের কথায়, “ব্যাঙ্ক থেকে টাকা পেলে তো কাঁচামাল কিনব। এনতিতেই হকারদের ধর্মঘটে ক্ষতি বেড়েছে। এ বার বড়দিনের কেক তৈরি করতে না পারলে লোকসান আরও বাড়বে। প্রতিবার যেখানে এক হাজার পাউন্ড কেক তৈরি হয় এ বার সেখানে উৎপাদন ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছি।”

শুধু বেকারি মালিক নয়, সমস্যায় শ্রমিকেরাও। প্রতিবছর এই সময়ে বসার সময় পান না শ্রমিকেরা। বেকারি কারখানার শ্রমিক ঝাড়খণ্ডের পাঁচু আনসারি বলেন, “বড়দিনের কেক তৈরির জন্য প্রতিবার বাড়তি রোজগার হয়। এ বার এখন কেক তৈরিই শুরু হয়নি। তাই বেশি কাজ হওয়ার সম্ভাবনাও নেই।’’ তাঁরা বলেন, ‘‘মজুরিও ঠিকভাবে পাচ্ছি না। বাড়িতে কী ভাবে টাকা পাঠাব জানিনা।” সমস্যার কথা স্বীকার করে বেকারি হকার সংগঠনের সভাপতি ভুট্টু খান বলেন, “৫০ শতাংশ বিক্রি কমে গিয়েছে। বড়দিনের কেক বিক্রিতে এর প্রভাব পড়ছে। বাড়ছে লোকসানের বহর।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bakery industries Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy