আলোচনা: সভায় বক্তব্য রাখছেন উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
হালে এই মারণ খেলার ফাঁদে পড়ে গিয়েছে একের পর এক প্রাণ। পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থেকে বাঁকুড়া— বিপদ না বুঝেই ব্লু হোয়েল গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছে স্কুল থেকে কলেজের পড়ুয়ারা। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত সচেতনতা সভায় তাই নীল তিমির গ্রাস থেকে বাঁচতে সচেতনতার উপরই জোর দিলেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর কথায়, “এই মারণ গেমের কথা অনেকেই শুনেছেন। কী মারাত্মক খেলা। এ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।”
মেদিনীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাঘরে বুধবার আয়োজিত আলোচনাসভায় রঞ্জনবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তা তপন চট্টোপাধ্যায়, খড়্গপুর আইআইটি-র অধ্যাপক পার্থসারথি দে প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পাশাপাশি শিবিরে ছিল মেদিনীপুরের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারাও।
আলোচনাসভায় বক্তারা সকলেই স্বীকার করে নেন, এই ধরনের খেলা যে সব সাইট থেকে ডাউনলোড করা হয় সেই সব সাইট বন্ধ করা মুশকিল। কিন্তু চাইলে এ নিয়ে সর্বত্র সচেতনতা বাড়ানো যেতে পারে। ব্লু হোয়েলের বিপদ কাটাতে অভিভাবকদের সতর্ক হওয়ার কথা বলা হয়। পরামর্শ দেওয়া হয়, মোবাইল বা কম্পিউটারে ছেলেমেয়েরা কী খেলছে তা নজরে রাখার দায়িত্ব অভিভাবকদেরই। অস্বাভাবিক কিছু দেখলে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলা দরকার।
তপনবাবু বলছিলেন, “পড়ুয়াদের মধ্যে এই বিপজ্জনক খেলার প্রতি আসক্তি রয়েছে কি না তা বাবা-মায়েদেরই বোঝার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে গল্পের ছলে জানতে হবে। সচেতনতাই পারে এই বিপদ দূর করতে।” পার্থসারথিবাবুরও বক্তব্য, “বাবা-মা অচেতন হলে সন্তান সচেতন হবে কী করে? বাবা-মা’র উচিত ছেলেমেয়ের বন্ধু হয়ে ওঠা। ছেলেমেয়ে কী করছে তা সব সময় নজরে রাখার চেষ্টা করা।”
শিবিরে ‘ব্লু হোয়েল’ গেম কী, এই গেমের খপ্পরে ছেলেমেয়েরা কী ভাবে পড়ে, খপ্পরে পড়ার পর ছেলেমেয়েরা কেমন আচরণ করতে শুরু করে, সেই সব দিকই বোঝানো হয়। উপাচার্য রঞ্জনবাবু বলছিলেন, “এটি একটি অনলাইন সুইসাইড গেম। এই গেম বানানোই হয়েছে কমবয়সী ছেলেমেয়েদের আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য। ৫০ ধাপের এই খেলার শেষ ধাপে আসে
আত্মহত্যার চ্যালেঞ্জ।’’
তিনি বলেন, ‘‘সমাজে ভাল-মন্দ দু’টোই থাকবে। ভালটাকে নিতে হবে। মন্দটাকে বর্জন করতে হবে। মন্দটাকে বর্জন করা শেখাতে পারে সচেতনতাই।”
ব্লু হোয়েলের মতো মারণ খেলা কীভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে তাও দেখার কথা বলেন রঞ্জনবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘আজ আমাদের চারপাশের পরিবেশ দ্রুত বদলে যাচ্ছে। এই বদলে যাওয়ার ফলে কোথাও একটা শূন্যতা তৈরি হচ্ছে। শৈশবটা যেন আর শৈশব থাকছে না। এমন পরিস্থিতিতে এই মারণ খেলা কী ভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে সেটাও দেখতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy