সবে রাতের খাওয়া শুরু করেছিলেন মলয় হালদার। সংবাদমাধ্যমের ফোন পেয়ে খাওয়া মাথায় উঠল! জলজ্যান্ত মানুষটি বিনপুরের শিলদা অঞ্চলের ছোটশুকজোড়া গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন, অথচ তাঁকে নাকি পুলিশ গ্রেফতার করেছে! তাও আবার এক তৃণমূল সমর্থক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে!
সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার রাতে এমন মেসেজ মোবাইলে মোবাইলে ছড়িয়ে পড়েছিল। এ বার বিধানসভা নির্বাচনে শিলদা পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য বছর আটত্রিশের মলয়বাবু বিনপুরের জোটপ্রার্থীর সমর্থনে সক্রিয় প্রচার-কর্মসূচিতে নেমেছিলেন। এলাকার পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে বিডিও’র কাছে প্রায়ই তিনি অভিযোগ জানিয়ে থাকেন। তাহলে কী এ সব কারণেই ফের শাসকের রোষে পড়েছেন তিনি? আশঙ্কায় সারা রাত চোখের পাতা এক করতে পারেননি।
২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য নির্বাচিত হন মলয়বাবু। ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে বেলপাহাড়ি থানায় মলয়বাবুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন এক তৃণমূল সমর্থক মহিলা। ওই মামলায় গ্রেফতার হয়ে টানা তিন মাস জেলবন্দি ছিলেন মলয়বাবু। পরে জামিনে ছাড়া পান।
মলয়বাবুকে ফের গ্রেফতার করেছে পুলিশ- বৃহস্পতিবার রাতে এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়তেই আশঙ্কিত হয় বিরোধীরা। যদিও বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “মলয়বাবুর বিরুদ্ধে নতুন করে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়নি। পুরোটাই গুজব।” তা-ও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছেন না বিরোধীরা।
ভোটের ফল প্রকাশ হতে এখনও মাস খানেক দেরি। কিন্তু তার আগেই জঙ্গলমহল জুড়ে বিরোধী সমর্থকদের নানা ভাবে ‘সমঝে’ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ভোটের পরে নয়াগ্রাম ব্লকের বালিচৌরিয়া গ্রামে সজলধারা প্রকল্পের জল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ওই গ্রামে বেশিরভাগ বিজেপি-র সমর্থক লোকজনের বাস। বিরোধীদের শায়েস্তা করতেই জল বন্ধ হয়েছে বলে অভিযোগ। নয়াগ্রামের যুগিশোল গ্রামে বিরোধী সমর্থকের বাড়ি-বাড়ি হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ, যুগিশোল গ্রামের এক বিজেপি কর্মীর দোকান ১৯ মে-র পরে ভাঙচুর করা হবে বলে লাগাতার হুমকি দিচ্ছে তৃণমূলের বাহিনী। ঝাড়গ্রাম ব্লকের নহরিয়া গ্রামে শাসকদলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের ধানের গোলায় আবার আগুন লাগার ঘটনাতেও বিরোধীদের ষড়যন্ত্রের হাত দেখছে তৃণমূল। যদিও তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি চূড়ামণি মাহাতো বলেন, “বিরোধীরা বুঝে গিয়েছে, ওঁরা হেরে ভূত হবে। তাই তার আগে মিথ্যে কিছু অভিযোগ তুলে হইচই করে নিচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy