পাখি শিকারের টোপ তৈরি করা হচ্ছে।
এলাকায় রয়েছে বাগুই এবং কেলেঘাইয়ের মতো নদী। সেই নদীর অববাহিকায় রয়েছে জীববৈচিত্র্যের প্রাচুর্য। শীতের মরসুমে পরিযায়ী পাখি থেকে অন্য একাধিক বিরল প্রজাতির পাখির ভিড় লেগেই থাকে। আর আসন্ন শীতের মুখে সেই পাখি শিকারে আসতে শুরু করেছে পাখি শিকারীরা।
পটাশপুর থানা এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়েই রয়েছে বাগুই ও কেলেঘাই নদী। পটাশপুর-১ ব্লকের গোকুলপুর, গোপালপুর, চিস্তিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ১৪ কিলোমিটার অংশ জুড়ে রয়েছে কেলেঘাই নদীর বিস্তীর্ন অববাহিকা। মিষ্টি জলে পুষ্ট কেলেঘাই নদীতে মাছের আনাগোনা। নদী সংলগ্ন জলাভূমিতে পোকামাকড় এবং নদীর পাড়ে হিজল, হেতাল গাছের ভিড় থাকায় পাখিদের বাসবাসের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, শীতের শুরুতে রাশিয়া ও সাইবেরিয়ার বহু পাখি বাগুই ও কেলেঘাই নদী সংলগ্ন এই জলাভূমিতে আসে। এছাড়া, সারা বছর বক, জলপিপি, বন মোরগ, শামুকখোলের পাখিরা তো রয়েছেই।
এই সব পাখির মাংসের লোভে এক শ্রেণির লোকেরা হামেশাই হানা দেয় কেলেঘাইয়ের জলাভূমি এলাকায়। যাদের মধ্যে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং এলাকার উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকেরা। শীতের মরসুমে তাঁদের আনানগোনা বেড়ে যায়। দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী ওই পরিবারগুলি পুষ্টিকর খাবারের সন্ধানে পাখি শিকার করে। এবার শীতের শুরুতে ফের সক্রিয় হয়েছে সেই সকল চোরা শিকারীরা। পটাশপুর-১ ব্লকের জীব বৈচিত্র্য কমিটির সম্পাদক সোমনাথ দাস অধিকারী বলেন, ‘‘এক সম্প্রদায়ের মানুষ সুস্বাদু মাংসের চাহিদায় পাখি শিকার করে। এটা অপরাধ। প্রশাসনের উচিত এলাকায় সচেতনতা বাড়িয়ে পাখি শিকার বন্ধ করা।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, অভিনব ভাবে চুনোপুঁটি মাছের মধ্যে বিষ ঢুকিয়ে পাখিদের খাবারের টোপ তৈরি করে শিকারিরা। তা কোনও জলাভূমি ও ঝিলের ধারে ফেলে রাখে। পাখিরা তা খেয়েই শিকারিদের হাতে ধরা পড়ছে। এই পন্থায় প্রতিদিন শয়ে শয়ে জলপিপি, শামুকখোল, বকের মতো পাখি মারা হচ্ছে বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পক্ষী শিকারি বলছেন, ‘‘খাবারের জন্যই শিকার করি। এত আইন বুঝি না।’’ বেআইনি পাখি শিকার প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন দফতরের আধিকারিক অনুপম খান বলেন, ‘‘এই বিষয়টি আমাদের নজরে নেই। দ্রুত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানুষকে সচেতনতার জন্য এলাকায় প্রচারও চালানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy