ছবি- সংগৃহীত
করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা দু’শো ছাড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। মূলত পরিযায়ীদের সূত্রেই এই বাড়বাড়ন্ত। আর সেখানে জুড়েছে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাতের নাম। জেলা প্রশাসনের পর্যবেক্ষণ, জেলায় সংক্রমিতের প্রায় ৮৬ শতাংশই পরিযায়ী শ্রমিক। পরিসংখ্যান বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা আক্রান্ত ২১৭ জন। এর মধ্যে ১৮৭ জনই ভিন্ রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিক।
ভিন্ রাজ্য থেকে পরিযায়ীরা ফিরলে আক্রান্ত বাড়ার আশঙ্কা অনেকেই করেছিলেন। সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। জেলা জেলা প্রশাসন অবশ্য অভয় দিচ্ছে। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ যাঁরা শনাক্ত হয়েছেন, তাঁদের কোয়রান্টিন করা হয়েছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডলেরও বক্তব্য, ‘‘বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে আক্রান্তদের বেশিরভাগের তেমন কোনও উপসর্গ নেই। ফলে, আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।’’
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, করোনা নমুনা পরীক্ষার পরিমাণ বেড়েছে বলে আক্রান্তের সংখ্যাও স্বাভাবিকভাবে উধ্বর্মুখী হয়েছে। জানা যাচ্ছে, জেলায় যত পরিযায়ী করোনা সংক্রমিত হয়েছেন, তার ৫৬ শতাংশই মহারাষ্ট্র ফেরত। ৩৬ শতাংশ দিল্লি ফেরত। যে এলাকায় পরিযায়ী সব থেকে বেশি ফিরেছেন সেই দাসপুরেই আক্রান্ত সব থেকে বেশি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় যে ২১৭ জন আক্রান্তের হদিস মিলেছে, তার মধ্যে দাসপুরেরই ৮৮ জন। দাসপুর-১ ব্লকের ৭৪ জন এবং দাসপুর ২-এর ১৪ জন।
ভিন্ রাজ্য ফেরতদের মধ্যে মহারাষ্ট্র থেকে আসা লোকজনই বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গড়বেতায় যে ২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মহারাষ্ট্র ফেরত ৭ জন, দিল্লি ফেরত ১৪ জন। কেশপুরের ৩১ জন আক্রান্তের মধ্যে মহারাষ্ট্র ফেরত ২১ জন, দিল্লি ফেরত ৫ জন, অন্য রাজ্য ফেরত ২ জন। দাসপুরের ৮৮ জন আক্রান্তের মধ্যে মহারাষ্ট্র ফেরত ৪১ জন, দিল্লি ফেরত ৩০ জন, গুজরাত ফেরত ১১ জন, অন্য রাজ্য ফেরত ২ জন। মেদিনীপুর সদর ব্লকে যে ৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের সকলেই মহারাষ্ট্র ফেরত। উদ্বেগের বিষয় হল, কয়েকজন এমন ব্যক্তি করোনা সংক্রমিত হয়েছেন, যাঁদের ভিন্ রাজ্যযাত্রার ইতিহাস নেই। লকডাউনের মধ্যেই কী ভাবে তাঁরা কোভিড- ১৯ আক্রান্ত হলেন, তাই নিয়েই ঘুম উড়েছে জেলা স্বাস্থ্যভবনের। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই আক্রান্তরা কোনও সংক্রমিতের সংস্পর্শে এসেছেন কি না তা দেখা হচ্ছে।’’
উদ্বেগের আরও একটি বিষয় হল, ভিন্ রাজ্য ফেরত সকলের এখনও করোনা পরীক্ষা হয়নি। জানা যাচ্ছে, জেলায় প্রায় ৬৮ হাজার জন ফিরেছেন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছেন প্রায় ১১ হাজার জন, দিল্লি থেকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার জন, গুজরাত থেকে প্রায় ৩ হাজার জন। অথচ, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৯,৯৬৫ জনের। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ আরও বেড়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক অবশ্য শোনাচ্ছেন, ‘‘আক্রান্তের সংখ্যা না কমলেও সুস্থ হওয়ার হার কিন্তু বাড়ছে। তাই অযথা আতঙ্কিত না হয়ে এই সময়ে সতর্ক এবং সচেতন থাকাই ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy