দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র
নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভের আবহের মধ্যেই এক সংখ্যালঘু নেতাকে নিজের সাংসদ প্রতিনিধি বাছলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
শুক্রবার রাতে খড়্গপুরে এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ। শনিবার দিনভর দলীয় নানা কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি। তার পরে রাতে বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দিলীপ নিজের সাংসদ প্রতিনিধি হিসাবে দেবলপুরের বাসিন্দা আব্দুল মইমকে দায়িত্ব দিয়েছেন। ঘটনার কথা স্বীকারও করেছেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘‘আব্দুল মইম আমাদের দলের একজন নিষ্ঠাবান কর্মী। এমনকী বিজেপি করার অপরাধে তাঁকে জেল খাটতে হয়েছে। তাঁকে যোগ্য মনে করেই সাংসদ প্রতিনিধি করা হয়েছে।’’
এনআরসি এবং নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় দেশ জুড়ে চলছে বিক্ষোভ। সে বিক্ষোভে শামিল হয়েছে সংখ্যালঘুদের বড় অংশ। আন্দোলনের আঁচ এসে পড়েছে এই রাজ্যেও। লাগাতার বিক্ষোভ-প্রতিবাদে নেমেছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু নেতাকে নিজের সাংসদ প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করলেন দিলীপ। তৃণমূলের বক্তব্য, উপ-নির্বাচনে হেরেছে বিজেপি। সামনে রয়েছে পুরসভা ভোট। সব দিক বিবেচনা করে ক্ষতে প্রলেপ লাগানোরই চেষ্টা করছেন বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য সভাপতি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের পরে দেশের মানুষ আর বিজেপির সঙ্গে নেই। পরিস্থিতির চাপে এখন সংখ্যালঘুদের ক্ষতে মলম লাগানোর চেষ্টা করছেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু তাতে লাভ হবে না। মানুষ ওঁদের ছদ্মবেশ ধরে ফেলেছে।” যদিও দিলীপ বলছেন, ‘‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশে’ বিশ্বাসী। বিরোধীরা মিথ্যা প্রচার করছে। কিন্তু আমরা সংখ্যালঘুদের বিপক্ষে নয়, অনুপ্রবেশকারী সংখ্যালঘুদের বিপক্ষে।”
চর্চা শুরু হয়েছে বিজেপি অন্দরেও। বিধায়ক থাকাকালীন দিলীপ শহরের গোপালনগরের বাসিন্দা বিজেপির জেলা নেতা প্রেমচাঁদ ঝা-কে নিজের বিধায়ক প্রতিনিধি করেছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে দিলীপ মেদিনীপুরের সাংসদ নির্বাচিত হন। তার পরে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা উপ-নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হন দিলীপের আস্থাভাজন প্রেমচাঁদ। তবে প্রার্থীকে ঘিরে বিজেপির অন্দরে প্রবল ক্ষোভ ধরা পড়ে। হারতে হয় প্রেমচাঁদকে। এ বার অবশ্য সাংসদ প্রতিনিধি হিসাবে প্রেমচাঁদের নাম সামনে আসেনি।
একসময়ে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি ছিলেন মইম। তার পরে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতির দায়িত্ব পান তিনি। তবে এত দিন মইমকে দিলীপ ঘোষের বলয়ে দেখা যেত না। এমনকি, বিধানসভা উপ-নির্বাচনে খড়্গপুরে মইমের নিজের ৬ নম্বর ও ৩টি সংখ্যালঘু অধ্যুসিত ওয়ার্ডে হারতে হয়েছে বিজেপিকে। শহরের ৩৫টি ওয়ার্ড মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার ভোটে লিড পেয়েছে তৃণমূল। এর মধ্যে শুধুমাত্র ওই চারটি ওয়ার্ডেই প্রায় ১২ হাজার ভোটে পিছিয়ে পড়েছে বিজেপি। দায়িত্ব পেয়ে মইন বলছেন, “বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল বলে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল। অথচ আমি বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি। এ বার আমার মতো একজন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি নিজের সাংসদ প্রতিনিধি করলেন। এটাই প্রমাণ যে, বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল নয়। এটা অবশ্যই আমরা প্রচারে আনব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy