কংগ্রেস কাউন্সিলর রীতা শর্মার নামে বিপিএল তালিকাভুক্তদের জন্য নির্দিষ্ট রেশন কার্ড। নিজস্ব চিত্র
কোথাও বিনামূল্যের রেশন যাচ্ছে কাউন্সিলরের বাড়িতে, আবারও কোথাও রেশন দোকান থেকেই পরিমাণে কারচুপি হচ্ছে বলে অভিযোগ। কারও আবার অভিযোগ, রেশন মিলছেই না। দেশজুড়ে লকডাউন। তাই গরিব মানুষদের জন্য বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করেছে সরকার। কিন্তু তার বণ্টন শুরু হতেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে এমনই নানা ঘটনা সামনে আসছে।
খড়্গপুর শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর ও পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী রীতা শর্মার স্বামী অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী। দুই ছেলে চাকরি করেন। কিন্তু তাঁর পরিবারের চারজনেরই রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা-১ এর রেশন কার্ড (বিপিএল উপভোক্তার কার্ড) রয়েছে। এই ঘটনা জানাজানি হয় শুক্রবার। খোঁজখবর করে জানা যায়, ওই কাউন্সিলর বৃহস্পতিবার বিকেলেও নিজের প্রতিনিধি পাঠিয়ে চারটি কার্ডে বিনামূল্যে মোট ৮ কেজি চাল ও ১২ কেজি গম তুলেছেন। সংশ্লিষ্ট রেশন দোকানের মালিক মিঠু মণ্ডল বলেন, “২০১৬ সাল থেকে কাউন্সিলরের দেওর এসে ২ টাকা কেজি দরে চাল-গম নিয়ে যেতেন। এ বার ওঁর এক প্রতিনিধি এসেছিলেন। কার্ড থাকলে আমরা তো বিনামূল্যে চাল-গম দিতে বাধ্য।’’ বিষয়টি প্রশাসনে জানাননি কেন? তাঁর উত্তর, ‘‘উনি এলাকার কাউন্সিলর। তাই কিছু বলিনি।’’ স্থানীয় শৈবাল চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, “কাউন্সিলর করোনা পরিস্থিতিতেও বিনামূল্যে রেশন তুলে প্রকৃত গরিবদের বঞ্চিত করেছেন।’’
কাউন্সিলর অবশ্য অভিযোগ মেনে নিয়েছেন। তবে তাঁর সাফাই, “ওই চাল-গম আমরা খাই না। বাড়ির কাজের লোকেদের দিয়ে দিই। তবে এ বার ওই কার্ড জমা দিয়ে দেব।’’ এতদিন জমা দেননি কেন সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মেলেনি। খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “একজন কাউন্সিলর এমন কাজ করতে পারেন এটা ধারণায় ছিল না। জানতেও পারিনি। ওই কার্ড আগেই ফেরত দিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।’’
গড়বেতা ২ ব্লকের কয়েকটি জায়গায় আবার রেশন দোকানে কোনও খাদ্যসামগ্রীই মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্লকের জিরাপাড়া অঞ্চলের কুন্দরিশোল গ্রামের বাসিন্দারা শুক্রবার বিডিওর কাছে এই নিয়ে লিখিত অভিযোগও করেছেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল মাহাতো, রবি সরেনদের ক্ষোভ, ‘‘প্রায় ৬ মাস হয়ে গেলো রেশন কার্ড পেয়েছি। কিন্তু এখনও খাদ্যদ্রব্য পাচ্ছি না। ডিলার বলছেন বরাদ্দ হলেই দেওয়া হবে। লকডাউনের সময়েও যদি রেশনের জিনিস না পাই , তাহলে কবে পাব!’’ বিডিও সোফিয়া আব্বাস জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
চন্দ্রকোনার ধাইখন্ড এবং কাসন্দ গ্রামে আবার সরকারের বরাদ্দ করা পরিমাণের থেকে কম পরিমাণে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকালে এই অভিযোগে দু’জন রেশন দোকানিকে ঘেরাও করেও রাখা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জিনিস ঠিকই মজুত আছে। ইচ্ছাকৃতভাবেই কম দেওয়া হচ্ছে। গোলমালে বণ্টন সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ কাসন্দ গ্রামের রেশন দোকানের মালিককে ক্ষীরপাই ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ক্ষুদিরাম রায় এবং আবু সামাদ মল্লিক নামে সংশ্লিষ্ট দুই রেশন দোকানের মালিকের অবশ্য দাবি, নিয়ম মেনেই জিনিস বিলি করা হচ্ছে।
ঘাটালের মহকুমা খাদ্য নিয়ামক পিটার বর জানান, বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এখন যেহেতু লকডাউন চলছে, তাই আপাতত ওদেরই জিনিস দিতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy