গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে একই পরিবারের স্বামী, স্ত্রী-সহ পাঁচজনকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে নন্দকুমারের খঞ্চি এলাকার দক্ষিণ হাটগেছিয়া গ্রামের এই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন পাঁচজনই। তাঁরা তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই পারিবারের সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনও শত্রুতার জেরেই এমন ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দুষ্কৃতীকে ধরার চেষ্টা চলছে। আর এলাকার এণন ঘটনার পর নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় এলাকার বাসিন্দারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাটগেছিয়া গ্রামের বাসিন্দা শিবশঙ্কর কাপড়ি পেশায় কৃষক। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী অপর্ণা, সাড়ে তিন বছরের ছেলে রণজিৎ, বৃদ্ধা মা রথিরানীদেবী। এছাড়াও রয়েছেন বাড়ির পরিচারিকা বৃদ্ধা অঞ্জলি সিংহ। স্ত্রী অপর্ণাদেবী স্থানীয় একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। রবিবার রাতে শিবশঙ্করবাবু-সহ পরিবারের সকলে ঘুমোচ্ছিলেন। রাত একটা নাগাদ এক ব্যক্তি আচমকা বাড়ির ভিতরে ঢুকে শিবশঙ্করবাবুর স্ত্রীর মাথায় কোদালের কাঠের বাঁট দিয়ে আঘাত করে বলে অভিযোগ। এরপর আঘাত করা হয় শিবশঙ্করবাবুর মাথায়। সেই সময় অপর্ণাদেবী স্বামীকে মারধরে বাধা দিতে গেলে ফের তাঁকে মারধর করা হয়। এমনকী মারের হাত থেকে রেহাই পায়নি তাঁদের বছর তিনেকের ছেলে রণজিৎও।
এরপর ওই দুষ্কৃতী পাশের ঘরে ঘুমিয়ে থাকা শিবশঙ্করবাবুর মা রথিরানীদেবী ও পরিচারিকা অঞ্জলিদেবীর মাথায় ও হাতে কাঠের বাঁট দিয়ে আঘাত করে। সুযোগ বুঝে পরিচারিকা অঞ্জলিদেবী ঘর থেকে বেরিয়ে প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করেন। তখন স্থানীয়রা ছুটে আসার আগেই পালায় ওই দুষ্কৃতী। স্থানীয়রাই জখমদের তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শিবশঙ্করবাবুর বাড়ির সামনে মানুষের জটলা। দোতলা মাটির বাড়ির ভিতরে বারন্দায় চাপচাপ রক্ত ও হাতের শাঁখা ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যে বিছানায় শিবশঙ্করবাবুরা ঘুমিয়ে ছিলেন সেখানেও রক্তের দাগ। বাড়ির সামনে ঘাসের মধ্যে রক্তমাখা কোদালের কাঠের বাঁট পড়ে রয়েছে। পড়শি গৌতম লগড়, হরিপদ লগড়, উত্তম মাজির কথায়, ‘‘তখন রাত একটা। হঠাৎ খুব চিৎকারে আমরা শিবশঙ্করদের বাড়ি ছুটে গিয়েছিলাম। দেখি বাড়ির মধ্যে সকলেই মেঝেতে পড়ে কাতরাচ্ছে।’’ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিবশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘অন্ধকারের মধ্যে ওই দুষ্কৃতীকে চিনতে পারিনি।’’
তবে রবিবার রাতের এমন ঘটনা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বাড়ির দরজা বন্ধ থাকা সত্ত্বেও দরজা না ভেঙে গভীর রাতে ওই বাড়ির ভিতরে দুষ্কৃতী কীভাবে ঢুকল?
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, রাতে ওই বাড়ির লোকজন ঘুমোতে যাওয়ার জন্য দরজা বন্ধ করার আগেই দুষ্কৃতী বাড়ির মধে ঢুকে লুকিয়ে ছিল। রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর আক্রমণ চালিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। কী কারণে এই আক্রমণ তা পরিষ্কার হলেই দুষ্কৃতীকে ধরা সহজ হবে। আক্রান্তরা কিছুটা সুস্থ হলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy