Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

কুরবানের পরে শূন্যস্থান পূরণে কি গোষ্ঠীকোন্দল!

যুব তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি সুজিতের সঙ্গে নিহত কুরবানের গোষ্ঠী কোন্দলের কথা এলাকায় অজানা নয়। ২০০৭ সালে মাইশোরার রাজনীতিতে পা রাখেন মাংলই গ্রামের বাসিন্দা সুজিত।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৫৭
Share: Save:

এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুন হয়েছেন সপ্তাহখানেক আগে। তাঁর মৃত্যুর পরে পাঁশকুড়ার মাইশোরা এলাকায় দলের তরফে হয়েছে একাধিক শোকসভা, প্রতিবাদ মিছিল। কিন্তু সেই সব দলীয় অনুষ্ঠানে কোথাও দেখা যায়নি পাঁশকুড়ারই আর এক নেতা সুজিত রায়কে। এক সময়ের দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলানো ওই নেতার অনুপস্থিতিতে পাঁশকুড়ার মাইশোরা এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে।

যুব তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি সুজিতের সঙ্গে নিহত কুরবানের গোষ্ঠী কোন্দলের কথা এলাকায় অজানা নয়। ২০০৭ সালে মাইশোরার রাজনীতিতে পা রাখেন মাংলই গ্রামের বাসিন্দা সুজিত। পান তৃণমূলের মাইশোরা অঞ্চল কমিটির সম্পাদকের পদ। ২০০৯ সালে তিনি তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পান। ২০১৩ সালে হন পাঁশকুড়া-১ র পঞ্চায়েত সমিতির সহ- সভাপতি।

২০০৯ সালের পর কুরবানও মাইশোরা এলাকায় যুব নেতা হিসাবে উঠে আসেন। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, কুরবান সক্রিয় রাজনীতিতে আসার পর থেকে সুজিতের সঙ্গে তাঁর গোলমাল বাধে। ২০১২ সালে সুজিতকে মারধরের অভিযোগ ওঠে কুরবান অনুগামীদের বিরুদ্ধে। সুজিতের অভিযোগ, গোষ্ঠী বিরোধের জেরে ২০১৬ সালে তিনি নিজের বাড়ি ছেড়ে পাঁশকুড়ায় থাকতে বাধ্য হন। পরে কুরবান খুনের অন্যতম অভিযুক্ত তথা তৎকালীন তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমানের অনুগামী হিসাবেও পরিচিত হন সুজিত।

স্থানীয় ‘আদি তৃণমূল’ সদস্যদের একাংশের আশা ছিল, কুরবান খুনের পরে দলের এই পুরনো যুব নেতাকে এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু তা হয়নি। মাইশোরা এলাকার দায়িত্ব পেয়েছেন কুরবানের দাদা আফজল শা। রাজনীতিতে একদমই নতুন মুখ তিনি। এমন একজনকে দলের দায়িত্ব দেওয়ায় আদি তৃণমূলের একাংশ হয়েছেন ক্ষুণ্ণ।

এই পরিস্থিতিতে কুরবানের মৃত্যুর পরে মাইশোরা এলাকায় তাঁকে ঘিরে করা দলের একাধিক কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন না এলাকার ভূমিপুত্র সুজিত। ছিলেন না কুরবানের পারিবারিক শোকসভাতেও। বৃহস্পতিবার মাইশোরায় সাংসদ শিশির অধিকারীর উপস্থিতিতে কুরবানের শোকসভাতেও ছিলেন অনুপস্থিত। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি মাইশোরার রাশ কুরবানের পরিবারের হাতে যাওয়ায় এড়িয়ে চলছেন সুজিত? নতুন করে কি ফের এলাকা দলীয় কোন্দল দেখা যাবে!

কোন্দলের প্রসঙ্গ উড়িয়ে দিয়ে সুজিতের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘খুন হওয়ার পরের দিন কুরবানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ওঁর বাড়িতে যাই। পাঁশকুড়াতেও শুভেন্দু অধিকারীর ধিক্কার মিছিলে হেঁটেছি।’’ তাহলে মাইশোরা এলাকায় যাচ্ছেন না কেন? সুজিতের জবাব, কুরবান মারা যাওয়ার পর দল বা কুরবানের পরিবার আমাকে কোনও কর্মসূচিতে ডাকেনি। তাই যাইনি। আমি চাই মাইশোরায় দল আরও শক্তিশালী হয়ে উঠুক। মাইশোরায় যে কোনও সাংগঠনিক ব্যাপারে দল আমার সাহায্য চাইলে আমি সাহায্য করতে প্রস্তুত।’’

মাইশোরা অঞ্চল তৃণমূলে র কোর কমিটির প্রধান কুরবানের দাদা আফজল বলেন, ‘‘শোকের আবহে আমি নিজে কাউকেই খবর দিইনি। যা করার দলের ছেলেরাই করেছে। মাইশোরার রাজনীতিতে সুজিত রায়ের মতো নেতাকেও আমাদের দরকার। উনি আমাদের পাশে থাকলে আমাদের সাংগঠনিক শক্তি আরও বাড়বে।’’

এলাকায় কি সত্যিই গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে! এ ব্যাপারে তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি দীপ্তি জানা বলেন, ‘‘শিশির অধিকারীর অনুষ্ঠানে সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সুজিত কেন খবর পেলেন না, তা খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Inner Clash Panskura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy