Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Dengue

ফিরবে না তো গত বছরের স্মৃতি!  

পশ্চিম মেদিনীপুরে এর আগে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। ২০১৮ সালে ৭৯৯ জন, ২০১৯ সালে ৯৫৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ০৭:৫৫
Share: Save:

পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম— দুই জেলাতেই গত বছর মাত্রা ছাড়িয়েছিল ডেঙ্গি সংক্রমণ। পশ্চিম মেদিনীপুরে আক্রান্তের সংখ্যা ২,৭০০ পেরিয়ে গিয়েছিল। ঝাড়গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৪০০। এক-দেড় দশকের মধ্যে এই দুই জেলায় শেষ কবে ডেঙ্গির এত বাড়বাড়ন্ত হয়েছিল— মনে করতে পারেননি স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। এবারেও বর্ষার শুরুতেই দুই জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। ফলে নতুন করে তৈরি হচ্ছে আশঙ্কা।

পশ্চিম মেদিনীপুরে এর আগে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। ২০১৮ সালে ৭৯৯ জন, ২০১৯ সালে ৯৫৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপরে করোনার সময়ে ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ সেভাবে মেলেনি এখানে। অনেকে মনে করেন, ওই সময়ে ডেঙ্গি পরীক্ষায় জোর দেওয়া হয়নি। তাই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাও কম ছিল। গত বছর (২০২৩ সালে) ডেঙ্গির সব রেকর্ড ভেঙে যায়। সেবার দুই জেলাতেই অগস্ট, সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরে অনেকের ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল। নভেম্বর থেকে সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছিল।

গতবার ডেঙ্গির এত বাড়বাড়ন্ত হয়েছিল কেন? একাংশ জেলাবাসীর দাবি, মশা-দমন কর্মসূচি ঠিকঠাক না হওয়াই তার কারণ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী অবশ্য বলছেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা প্রচার শুরু থেকেই চলেছে। নানাভাবেই সচেতন করা হয়েছে। গতবার জেলার কিছু কিছু এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা তুলনায় বেশি ছিল। ওই সব এলাকায় বাড়তি নজর রাখা হয়েছে। ডেঙ্গির প্রকোপ রুখতে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, এই বছর পিংলা, ডেবরার মতো গ্রামীণ ব্লকগুলিতে ডেঙ্গি সংক্রমণ বেশি। তবে কোথাও এখনও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নেই। শহরের তুলনায় গ্রামীণ ব্লকগুলিতে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে ঝাড়গ্রামেও। ঝাড়গ্রামের এক পতঙ্গবিদ মনে করাচ্ছেন, ‘‘এই সময়ে মাঝে মধ্যে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। এতেই ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ে।’’ গত বারের মত পরীক্ষা বেশি হলে অগস্টে দুই জেলাতেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গত বছর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ডেবরা, নারায়ণগড়, শালবনি, দাসপুর- ১, দাঁতন- ২ এবং ঘাটাল ব্লক ও খড়্গপুর ও মেদিনীপুর শহরে ডেঙ্গি বেশি হয়েছিল। খড়্গপুর শহরে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৯৪ জন। মেদিনীপুর শহরে ৫১৫ জন। ঝাড়গ্রাম জেলায় গোপীবল্লভপুর-১ ও গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকে ডেঙ্গি দাপট দেখিয়েছিল। গোপীবল্লভপুর থানার কয়েকজন আধিকারিকও আক্রান্ত হয়েছিলেন। এবার কী হবে? ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদার আশ্বাস, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে সারা বছর নিয়মিত কাজ চলছে। গ্রাম ও শহরে সচেতন করা হচ্ছে।’’

খড়্গপুর শহরে ২০১৭ সালে ২৩৬ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুও হয়েছিল। খড়্গপুরের মহকুমাশাসক পাতিল যোগেশ অশোকরাও অবশ্য মনে করছেন, এ বার সেই পরিস্থিতি নেই। তিনি জানান, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আগাম পদক্ষেপ করা হচ্ছে। গত বছর ঘাটাল মহকুমায় ৬০০ জনের বেশি আক্রান্ত হয়েছিলেন। বেসরকারি মতে সংখ্যা আরও বেশি ছিল। ডেঙ্গিতে গত বছর এই মহকুমায় একজনের মৃত্যুও হয়েছিল। ঘাটাল সুপার স্পেশালিটির সুপার মহেশ্বর মান্ডি অবশ্য বলছেন, “ঘাটালে এখনও সেই ভাবে ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর নেই। তবে সন্দেহ হলে নিয়ম করে পরীক্ষা হচ্ছে।” (চলবে)

(তথ্য: বরুণ দে, অভিজিৎ চক্রবর্তী, দেবমাল্য বাগচী, রঞ্জন পাল)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Health West Midnapor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy