তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও এখনও আবাস যোজনায় বাড়ি পাননি বলে দাবি করেছেন সাংসদ দেবের আত্মীয় বিক্রম অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ এবং অভিনেতা দেবের নাম ভাঙিয়ে ‘কাটমানি’ নিচ্ছেন এলাকার তৃণমূল নেতাদের একাংশ। অভিযোগ করলেন দেব ওরফে দীপক অধিকারীর জ্যাঠতুতো ভাই বিক্রম অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, কোনও গ্রাম্য বা পারিবারিক বিবাদ মেটানোর জন্যও টাকা নেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। আর সেখানে সঙ্গে রাখা হচ্ছে সাংসদের ভাইকে। তাঁর এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর ব্লকের তৃণমূল নেতৃত্ব।
কেশপুরের মহিষদা গ্রামের বাসিন্দা বিক্রম পুরোহিতের কাজ করে সংসার চালান। স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে সংসার। সেই বিক্রমের অভিযোগ, তাঁর খুড়তুতো দাদা দেবের নাম সামনে রেখে ‘সেটেলমেন্ট’ করছেন তৃণমূল নেতারা। সমস্যা মেটানোর নামে সালিশি সভায় ডেকে স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। আর দেবের ভাই বলে জোর করে তাঁকেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ওই সব সালিশি সভায়। এতে দাদার ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে বলে মনে করেন বিক্রম।
সাংসদের ভাইয়ের অভিযোগ, আবাস যোজনার বাড়ি পেতে তাঁকেও ‘কাটমানি’ দিতে হয়েছে। বিক্রমের কথায়, ‘‘২০১৬ সালে সরকারি আবাস যোজনায় বাড়ির অনুদান পাওয়ার পর সেই টাকা তুলে দিয়ে হয় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের হাতে। ফলে সেই সময় আর বাড়ি করা হয়ে ওঠেনি।’’ তাঁর দাবি, পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে এক মন্ত্রী এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। অন্য দিকে, দাদার কানে এই দুর্নীতির খবর পৌঁছচ্ছে না বলেও দাবি করেছেন তিনি।
বিক্রম জানান, আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত বাড়ি পাননি তিনি। এখনও ভগ্নপ্রায় বাড়িতে পরিবারকে নিয়ে দিনযাপন করছেন। তাঁর এ-ও অভিযোগ, ‘‘এলাকায় সমস্যা সমাধানের নামে বিভিন্ন সালিশি সভায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় আমায়। আমাকে সামনে বসিয়ে রেখে দেবের ভাই বলে পরিচয় দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে বিভিন্ন বিবাদের ‘সেটেলমেন্ট’ করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। দেবের ভাই বলে আমাকে সামনে রেখে রাজনৈতিক ব্যবসা করছেন তৃণমূল নেতারা।’’
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেশপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রদ্যুৎ পাঁজা বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগের সত্যতা মিললে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর কেশপুরের এই মহিষদা গ্রামেই ১৮ জন বিজেপি কর্মীকে সামাজিক বয়কটের ডাক দিয়ে পোস্টার পড়ে। তাতে নাম জড়ায় শাসকদলের। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে বিবৃতি দেন খোদ দেব। ঘটনার সমালোচনা করেন তিনি। এ বার সাংসদের আত্মীয়ের তোলা নতুন অভিযোগে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে এলাকায়।
ভাইয়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়ার জন্য দেবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে আনন্দবাজার অনলাইন। কিন্তু ফোনে সাংসদকে পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy