সরকার নিযুক্ত আইনজীবীর প্রতি তাঁদের ভরসা নেই বলে আদালতে জানিয়ে দিলেন ঝাড়গ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকি খুনের মামলার অভিযুক্তরা। ফলে, মঙ্গলবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব চলাকালীন মেজাজ হারিয়ে ফেললেন অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী সুমন দাস মহাপাত্র। সুমনবাবু জানিয়ে দেন, তিনি আর অভিযুক্তদের হয়ে মামলা লড়তে চান না। এই পরিস্থিতিতে আগামী ৩০ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেছে আদালত। গোটা ঘটনায় রীতিমতো হতাশ রকির পরিজনরা।
আইনজীবী মহলের একাংশের মতে, শুরু থেকেই মামলার বিচার বিলম্বিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন অভিযুক্তরা। গত পাঁচ মাসে আদালতের কাছে বেশ কয়েক বার সময় নিয়েও অভিযুক্তরা তাদের আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেন নি। এরপর অভিযুক্তদের সম্মতি নিয়েই গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রাম আদালতের সিনিয়র আইনজীবী সুমন দাস মহাপাত্রকে সরকারি খরচে অভিযুক্তদের হয়ে মামলা লড়ার জন্য নিয়োগ করে আদালত। গত সোমবার আদালতের দোতলায় একটি ঘরে মূল অভিযুক্ত অশোক শর্মা-সহ চার অভিযুক্তের সঙ্গে মামলার বিষয় নিয়ে একান্তে কথাও বলেন সুমনবাবু।
মঙ্গলবার রকির বাবা পবনকুমার অগ্রবালের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য জেলবন্দি চার অভিযুক্ত অশোক শর্মা, তাঁর দুই আত্মীয় সুমিত শর্মা ও দীনেশ শর্মা এবং অশোকের পরিচারক টোটন রানাকে আদালতে হাজির করানো হয়। তবে এদিনও অসুস্থতার জন্য আদালতে হাজির হন নি অশোকের স্ত্রী অন্যতম অভিযুক্ত পুনম শর্মা।
সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর আগে বিচারকের উদ্দেশ্যে অশোক জানান, সরকার নিযুক্ত আইনজীবীর উপর তাঁদের ভরসা নেই। অশোক বলেন, “আমাদের নিজেদের আইনজীবী নিয়োগ করার ক্ষমতা আছে। পরবর্তী দিনে আমাদের নিয়োগ করা আইনজীবীর উপস্থিতিতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা হোক।” বিচারক বিভাসরঞ্জন দে বিরক্ত হয়ে বলেন, “আপনারা পাঁচ মাসেও আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেন নি। এই মামলার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে। মামলার বিচারে আর বিলম্ব করা যাবে না। সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালীন আপনার নিয়োগ করা আইনজীবী আদালতে হাজির হতে পারেন।”
এ দিন প্রথম সাক্ষী হিসেবে রকির বাবা পবনকুমার অগ্রবালের সাক্ষ্য নথিভুক্ত করেন বিচারক। মামলায় পুলিশের বাজেয়াপ্ত করা রকির মোটর বাইক, দু’টি আংটি, সোনার চেন-সহ প্রতিটি প্রামাণ্য নথি এদিনই আদালতে পেশ করার দাবি করেন সুমনবাবু। এই নিয়ে সরকারি কৌঁসুলি প্রশান্ত রায়ের সঙ্গে অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবীর বাদানুবাদ শুরু হয়। বিচারক অবশ্য জানিয়ে দেন, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, বাজেয়াপ্ত হওয়া তথ্য প্রমাণ সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিনেই আদালতে পেশ করার কোনও বিধান নেই। সাক্ষ্যের প্রয়োজনে নথি পেশ করবেন সরকারি কৌঁসুলি। এ দিন অবশ্য পবনবাবুর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয় নি। আগামী ৩০ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেন বিচারক। অশোক ফের বিচারককে জানান, সরকার নিযুক্ত আইনজীবীতে তাঁর ভরসা নেই। ৩০ তারিখ তাঁর নিজস্ব আইনজীবী আদালতে হাজির হবেন। এরপরই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন সুমনবাবু। বিচারকের সামনেই তিনি চিৎকার করে অশোককে বলেন, “কাল আপনাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হল, তখন কেন বললেন না আমার উপর আপনাদের ভরসা নেই। আমি অত্যন্ত অপমানিত হয়েছি। আমি আর আপনাদের মামলা লড়ব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy