Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

স্কুলে ঢুকে অশালীন আচরণ, অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী

অভিযোগ, এলাকার দাপুটে নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগের জন্য এর আগে একই ঘটনা ঘটালেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ইটাবেড়িয়া খালসাইড প্রাথমিক বিদ্যালয়।

ইটাবেড়িয়া খালসাইড প্রাথমিক বিদ্যালয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইটাবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০৭:৩০
Share: Save:

স্কুলে এক শিক্ষিকার সঙ্গে আশলীন আচরণ করার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ভগবানপুর ২ নম্বর ব্লকের ইটাবেড়িয়া খালসাইড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই ঘটনার অভিযুক্ত এলাকায় শাসকদল তৃণমূলের কর্মী বলে পরিচিত। অভিযোগ, এলাকার দাপুটে নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগের জন্য এর আগে একই ঘটনা ঘটালেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ঘটনার সূত্রপাত গত ১৬ জুলাই। অভিযোগ, ওই দিন বিকেল ৩টে নাগাদ বনমালী মাইতি নামে এক ব্যক্তি স্কুলে আসে এবং ক্লাস চলাকালীন এক শিক্ষিকার উদ্দেশ্যে গালি দেয় ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। ওইশিক্ষিকা জানিয়েছেন, তিনি প্রতিবাদ করলে বনমালি মারমুখী হয়ে ওঠে। পরে ঘটনার ভিডিও করা শুরু করলে সে স্থানীয় নেতৃত্বদের সাহায্যে শিক্ষিকাকে ‘দেখে নেবে’ বলে হুমকিও দেয়। শিক্ষিকা বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের সামনেই প্রায় ২৫ মিনিট ধরে চলে ওই অশ্লীল আচরণ। তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।’’

ওই ঘটনায় প্রধান শিক্ষক কোনও প্রতিবাদ করেননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। পরে অভিভাবকেরা স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে এর প্রতিবাদ করেন। সোমবার মুগবেড়িয়া প্রাথমিক স্কুল চক্রের স্কুল ইন্সপেক্টর সন্তু সিংহের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই শিক্ষিকা।

প্রধান শিক্ষক ভূপতি মাইতি বলেন, ‘‘আমি শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে সব জানিয়েছি। তাঁরা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন।’’ যদিও প্রধান শিক্ষকের ওই ভূমিকায় স্কুলের অন্য শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকেরাও খুশি নন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, ‘‘বনমালী প্রধান শিক্ষকের ঘনিষ্ঠ। এর আগেও বহু কুকর্ম করেছে। স্কুলের রেজিস্টার খাতা ছিঁড়েছে। ২০১৪ সালে অভিভাবকেরা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেছিলেন।’’

এলাকার এক বাসিন্দা জানান, বছর তিনেক আগে স্কুলের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বনমালী খারাপ আচরণ করেছিলেন। ওই শিক্ষিকা বাচ্চাদের মিড ডে মিল পরীক্ষা করছিলেন। সেই সময় বনমালী লাথি মেরে খাবারের থালা ফেলে দেন বলে অভিযোগ। তার পরেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমার নাতি ওই স্কুলে পড়ে। বাচ্চাদের সামনে এই সব ঘটনা ঘটলে তাদের মনের উপর কী প্রভাব পড়বে! অথচ স্থানীয় নেতৃত্ব নির্বিকার।’’

ওই শিক্ষিকা জানান, ১৬ জুলাইয়ের ঘটনার পর স্থানীয় নেতারা মীমাংসার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সমাধান হয়নি। অভিযুক্ত লাগাতার তাঁকে হুমকি দিচ্ছে। তাই এ দিন বাধ্য হয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। স্কুল ইনস্পেক্টর সন্তু সিংহ বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে পদক্ষেপ করা হবে।’’ ভিলেজ এডুকেশন কমিটির সদস্য অশোক মিদ্যা বলেন, ‘‘আগের ঘটনায় স্কুলের তরফে কোনও অভিযোগ পাইনি। তাই ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে বর্তমানের ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Itaberia Khalside primary school Molestation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy