প্রতীকী ছবি।
তার গলায় ছুরি চালানোর অভিযোগ উঠল দশম শ্রেণির ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে। শনিবার চন্দ্রকোনা থানার ঝাঁকরা লাগোয়া আমধেড় গ্রামের এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে।
শনিবার রাতেই চন্দ্রকোনা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, আক্রান্ত এবং অভিযুক্ত দু’জনই নাবালক, দশম শ্রেণির ছাত্র। রবিবার পুলিশের তরফে অভিযুক্ত ছাত্রকে মেদিনীপুর জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে হাজির করানো হয়। ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্তকে ডেবরার শিশু হোমে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আর আক্রান্ত ছাত্রের চিকিৎসা চলছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ভিডিয়ো গেম খেলতে চাওয়া নিয়েই দুই বন্ধুর মনোমালিন্যের সূত্রপাত। একজনের কাছে স্মার্টফোন ছিল, অন্যজনের কাছে ছিল না। ভিডিয়ো গেম খেলবে বলে এক বন্ধু অন্যজনের কাছে স্মার্টফোন চেয়েও না পাওয়ায় ওঠে। আক্রান্ত ছাত্রটির সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জেনেছেন, ‘ফ্রি ফাইন’ নামে একটি গেম খেলতে চেয়েছিল তার বন্ধু। সে জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই তার স্মার্টফোন চাইছিল। কিন্তু সে দেয়নি। শনিবার দু’জনের কেউই স্কুলে যায়নি। স্কুলের নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে জামা কিনতে ক্ষীরপাই যাচ্ছিল। সাইকেলে যাওয়ার পথে আমধেড়ের কাছে দাঁড়ায় দু’জনে। তখন ফের ফোন না দেওয়া নিয়ে বচসা বাধে। তখনই অভিযুক্ত কিশোর পকেট থেকে ছুরি বের করে অন্যজনের গলায় কোপ বসায়। পুলিশ জানতে পেরেছে, গ্রামের মেলায় ওই ছুরি কিনেছিল অভিযুক্ত কিশোর। হামলার পরে সে ধানজমিতে ছুরিটা ফেলে দেয়। রবিবার সেটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বিগত কয়েক বছরে অনলাইন গেমের আসক্তিতে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। মারণ খেলা ‘ব্লু হোয়েল’-এর শিকার হয়েছে অল্পবয়সী অনেকেই। সেই সঙ্গে চেয়েও স্মার্টফোন না পেয়ে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে বারবার। মনোরোগ চিকিৎসক হিরণ্ময় সাহা বললেন, ‘‘এখনকার অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভোগ্যপণ্য নিয়েও প্রতিযোগিতা চলে। তা থেকেই রেষারেষির শুরু। নিজের কাছে নেই, অথচ মোবাইলে ভিডিয়ো গেম খেলতে চাওয়া সেই আসক্তিরই প্রমাণ!’’ ওই দুই ছাত্রের স্কুলের প্রধান শিক্ষকও মানছেন, ‘‘এই আসক্তি বিপজ্জনক। আমি নিজে দু’জনের সঙ্গে কথা বলব।” চাইল্ডলাইনের জেলা কো-অর্ডিনেটর বিশ্বনাথ সামন্ত বলেন, “পড়ুয়াদের মোবাইল আসক্তি কাটানোটা কষ্টকর। তবু চেষ্টা করে চলেছি।”
শনিবার দুপুরে ঘটনার পরে স্থানীয়রাই জখম ছাত্রকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করান। তার বাড়ি কেশপুর থানা এলাকায়। জখম ওই ছাত্রের বাবা বলেন, ‘‘মোবাইল নিয়ে মনোমালিন্যের কথা ছেলে বাড়িতে বলেনি। হঠাৎ শুনলাম, ওর গলায় কোপ মেরেছে এক বন্ধু। আমি কিছুই জানি না। পুলিশের কাছ থেকে সব শুনছি।’’ অভিযুক্তের বাবারও বক্তব্য, “ওরা দু’জনই বন্ধু। এর থেকে বেশি কিছু জানি না।”
ঘাটালের এসডিপিও কল্যাণ সরকার জানিয়েছেন, স্মার্টফোন ছাড়া এই হামলার পিছনে অন্য কিছু রয়েছে কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy