Advertisement
২০ জানুয়ারি ২০২৫

বাজেটে কাটছাঁট, অভুক্তদের খাইয়েই কালীসাধনা

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি শহরের খড়গপুর বাইপাস লাগোয়া এই ক্লাবটি দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে কালীপুজো করে আসছে।

চলছে নরনারায়ণ সেবা। নিজস্ব চিত্র

চলছে নরনারায়ণ সেবা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩২
Share: Save:

‘কালো মেয়ের পায়ের তলায় দেখে যা আলোর নাচন’!

সেই আলোর খোঁজেই এ বার কালো মায়ের পুজোর বাজেট কাটছাঁট করছে কাঁথির একটি ক্লাব। পুজো মানে কেবল উৎসবের বাহারি জৌলুস নয়, পাশাপাশি সমাজ সেবামূলক কাজ করার পরিকল্পনা করেছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। কালীপুজোর বাজেট কমিয়ে এলাকার দুঃস্থ এবং গৃহহীনদের দু’বেলা দু’মুঠো খাবার তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্লাবটি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি শহরের খড়গপুর বাইপাস লাগোয়া এই ক্লাবটি দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে কালীপুজো করে আসছে। প্রতি বছরই মণ্ডপ নির্মাণ এবং প্রতিমার ক্ষেত্রে জাঁকজমক করেন তাঁরা। ক্লাব সূত্রে খবর, গত বছর তাঁদের কালীপুজোর মোট বাজেট ছিল প্রায় তিন লক্ষ টাকা। কিন্তু এ বার জৌলুসের নিরিখে কিছুটা সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। বদলে শহরের অভুক্ত-ভবঘুরেদের পেটপুরে দু’বেলা খাওয়ানোর কর্মসূচি শুরু করেছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, গত রবিবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে খাবার বিতরণের কর্মসূচি।

আপাতত রাতের কাঁথি শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে অভুক্ত এবং ভবঘুরেদের খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। ক্লাব কর্তৃপক্ষের দাবি— নৈশভোজের পাতে ভাত, মাছ, মাংস এবং অন্যান্য তরকারির পদ তুলে দেওয়া হচ্ছে। শহরের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড, পোস্ট অফিস চত্বর, দিঘা বাইপাস মোড় এলাকায় ঘুরে অভুক্তদের হাতে শালপাতায় ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে এই খাবার। ইতিমধ্যেই তাঁরা জনা পঞ্চাশেক অভুক্তের হাতে খাবার তুলে দিচ্ছেন। প্রাথমিক ভাবে কেবল নৈশভোজ সরবরাহের কর্মসূচি শুরু করা হলেও, কালীপুজোর পর দু’বেলাই দুঃস্থদের পেটপুরে খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

প্রসঙ্গত, এই বছর ক্লাবটির কালীপুজোর বাজেট ধরা হয়েছিল চার লক্ষ টাকা। কিন্তু ক্লাবের সিদ্ধান্ত, মোট বাজেটের এক লক্ষ টাকা দুঃস্থদের অন্ন-সংস্থানের প্রকল্পে ব্যয় করা হবে। অর্থাৎ, মোট তিন লক্ষ টাকাতেই সারা পুজোর কাজ। ক্লাবের এক সদস্যের কথায়, ‘‘সাধারণ মানুষের মনে ক্লাব সম্পর্কে একটা ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করেন, ক্লাব মানেই বোধহয় বেহিসেবী জীবনযাপনের আঁতুরঘর। এই ভাবনাটাই আমরা ভাঙতে চেয়েছিলাম।’’ ভাবনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এ বার কালীপুজোর থিমও নির্বাচন করা হয়েছে। এ বার ক্লাবের থিম হল ‘অন্ধকার থেকে আলোর পথে’।

কালীপুজোর পর থেকে টানা ছ’মাস এলাকার গৃহহীনদের অন্ন-সংস্থানের কর্মসূচি নেওয়া হলেও কর্মসূচিটি এক বছর চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষের। কিন্তু অর্থ সংস্থান হবে কী ভাবে? ক্লাবের এক সদস্যের কথায়, ‘‘এই নিয়ে আমরা আলোচনায় বসব।’’ ক্লাব কর্মকর্তা নিতু দেব বলেন, ‘‘জীবসেবার মাধ্যমেই প্রকৃত শিবসেবা করা যায়। তাই এ বার পুজোর বাজেট কমিয়ে অভুক্তদের পেটভর্তি খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁদের আত্মা তৃপ্তি পেলেই আমাদের কালী সাধনা সফল হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Puja 2019 Contai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy