দোকােন মলি। —নিজস্ব চিত্র।
আটাশ বছর বয়সী মলি মঙ্গল বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। বাংলা নববর্ষে তাঁকে স্বনির্ভর করতে এগিয়ে এল দাঁতনের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ওই সংস্থাটি বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের নিয়ে কাজ করে। মলি নিজেও ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত সেন্টারের ছাত্রী।
নারায়ণগড়ের রানিসরাই পঞ্চায়েতের খটনগর এলাকার বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় মঙ্গল ও দুর্গা মঙ্গলের ছোট মেয়ে মলি মানসিক প্রতিবন্ধী। ২০১৬ সাল থেকে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত ডে কেয়ার সেন্টারে তাঁর চিকিৎসা ও পড়াশোনা শুরু হয়। সেখানে বিভিন্ন হাতের কাজ শিখেছেন তিনি। ওই সেন্টার সূত্রে খবর, মলি যখন সেখানে প্রথম এসেছিলেন তখন তিনি নিজের কাজ তেমন কিছুই করতে পারতেন না। খাওয়া, হাত ধোওয়া, পোশাক পরা, জিনিস গুছিয়ে রাখা— প্রায় সবই করে দেওয়া হতো। ধীরে ধীরে বিশেষ প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে মলি সেগুলি শিখেছেন। এখন প্রতিদিন নিজের যাবতীয় কাজের সঙ্গে জিনিস ওজন করা, টাকা খুচরো করা ও ফেরত দেওয়া-সহ বিভিন্ন কাজ করতে পারেন তিনি। তাঁর মানসিক প্রতিবন্ধকতাও অনেকটা কেটেছে। রাখি তৈরি, ছবি আঁকা, লেখার মতো সৃজনশীল কাজেও সড়গড় হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে মলির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে, কাউন্সেলিং করে মুদি দোকান করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ডে কেয়ার সেন্টারের দায়িত্বে থাকা বিশ্বজিত ভুঁইয়া বলেন, ‘‘প্রথমের দিকে প্রায় কিছুই করতে পারত না। নিজের কাজও করতে জানত না। ধীরে ধীরে প্রশিক্ষণ দিয়ে শেখানো হয়েছে। দোকান চালানোর প্রশিক্ষণ পেয়েছে। আমরা ওকে স্বনির্ভর হিসেবে দেখতে চেয়েছি।’’
মলির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের বাড়ির পাশেই মলির বাবা মৃত্যুঞ্জয়ের একটি চায়ের দোকান আছে। তিনি মাছের দোকানেও কাজ করেন। এই পরিস্থিতিতে ছোট মেয়েকে নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তিনি। তা এখন অনেকটাই কেটেছে। তাঁর চায়ের দোকানের একপাশে মুদিখানার সামগ্রী নিয়ে বসছেন মলি। তাঁর মা দুর্গার কথায়, ‘‘মেয়ের স্কুল থেকেই মুদির দোকানটি করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে মেয়ে স্বনির্ভর হতে পারবে।’’ খুশি মলিও। ক্রেতাদের জিনিস দেওয়া, ওজন করা, টাকা ফেরত দেওয়া স্বাভাবিকভাবেই করতে পারছেন তিনি।
দাঁতনের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক শুভাশিস মেইকাপ বলছেন, ‘‘মেয়েটিকে স্বনির্ভর করতে চেয়েছি। প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে তাঁর প্রতিবন্ধকতাগুলি দূর করার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরে পরিবারের কথা সঙ্গে মুদি দোকানের সামগ্রী ও কিছু টাকা দেওয়া হয়। নতুন বছর থেকে নতুন করে শুরু হোক মলির যাত্রা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy