Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

মনের অসুখ, নাবালিকার পা তাই দড়িতে বাঁধা

একদিন, দু’দিন নয়। বছরের পর বছর ধরে এ ভাবেই দিন কাটছে চন্দ্রকোনার কুঁয়াপুর পঞ্চায়েতের ধামকুড়িয়ায় অরুণ রায়ের মেয়ে সোমাশ্রীর। 

প্রতিবন্ধী কিশোরী সোমাশ্রী।  —নিজস্ব চিত্র।

প্রতিবন্ধী কিশোরী সোমাশ্রী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দ্রকোনা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৩
Share: Save:

কখনও কোমর কখনও পায়ের সঙ্গে বাঁধা থাকে দড়ি। এই অবস্থাতেই ঘরের দাওয়ায় বসে রয়েছে বছর এগারোর নাবালিকা মেয়ে। একদিন, দু’দিন নয়। বছরের পর বছর ধরে এ ভাবেই দিন কাটছে চন্দ্রকোনার কুঁয়াপুর পঞ্চায়েতের ধামকুড়িয়ায় অরুণ রায়ের মেয়ে সোমাশ্রীর।

অরুণের স্ত্রী অর্চনা বললেন, “কী করব বলুন। বড় মেয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী। ওর চিকিৎসা করাতে করাতে সবস্বার্ন্ত হয়েছি। একটু খুলে দিলেই এখানে-ওখানে চলে যায়। নানা বিপদ হয়। আমরা ঘরে-বাইরে কাজে ব্যস্ত থাকি। তাই অন্যায় জেনেও বাধ্য হয়ে বেঁধে রাখি।”

অরুণ পেশায় চাষি। নিজের সামান্য জমি। অন্যের জমিতেও দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন তিনি। বড় মেয়ের চিকিৎসা করাতে ঘরের ভিটেমাটি ছাড়া আর তেমন কিছু নেই। শুধু বড় মেয়ে নয়। ছোট মেয়েরও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। অরুণ বললেন, “বড় মেয়েকে চেন্নাই-সহ দেশের নানা হাসপাতালেও যাওয়া হয়েছিল। টানা চিকিৎসা চললে হয়তোএতদিন ভাল হয়ে যেত। কিন্তু আর পেরে উঠছি না।” দুই মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রশাসন-জনপ্রতিনিধিদের কাছে একসময় ছোটাছুটি করেছিলেন ধামকুড়িয়ার রায় দম্পতি। সাহায্য চেয়ে বহু আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তেমন কোনও সাহায্য জোটেনি। অরুণ বললেন, “দুই মেয়েই প্রতিবন্ধী। সরকারি কার্ড আছে। কিন্তু এতদিন কোনও সুবিধাই পায়নি। কিছুদিন আগে চন্দ্রকোনার-২বিডিও মানবিক প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার বন্দোবস্ত করেছেন।”

জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ দাসের কথায়, “কোনও মতেই বেঁধে রাখা যাবে না। আমরা ওই নাবালিকা মেয়েকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।” চন্দ্রকোনা-২বিডিও শাশ্বত প্রকাশ লাহিড়ীর কথায়, “আমি জানার পরই দুই বোনকে মানবিক প্রকল্পে ভাতার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mental patient Chandrakona
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE