Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পেঁয়াজের ঝাঁঝে ‘চোখে জল’ মালিকের, বন্ধ হোটেল

কাঁথি শহরের প্রাণকেন্দ্র শ্রীরূপা সিনেমা হলের কাছে রয়েছে একটি ভাতের হোটেল। সোমবার সকালে দেখা যায়, হোটেল বন্ধ। পাশে ছুলছে একটি নোটিস।

 বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বন্ধ দোকান। নিজস্ব চিত্র

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বন্ধ দোকান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:১৫
Share: Save:

সেঞ্চুরি করেছে অনেক দিন আগেই। তাতে হাত পুড়েছে গৃহস্থের। এবার দেড়শোর দিকে এগোতেই হোটেল মালিকদের একাংশের মাথায় হাত। এমনকী, পেঁয়াজের অগ্নিমূল্য কাঁথিতে নোটিস দিয়ে হোটেল সাময়িক ভাবে বন্ধ করলেন এক ব্যবসায়ী।

কাঁথি শহরের প্রাণকেন্দ্র শ্রীরূপা সিনেমা হলের কাছে রয়েছে একটি ভাতের হোটেল। সোমবার সকালে দেখা যায়, হোটেল বন্ধ। পাশে ছুলছে একটি নোটিস। তাতে লেখা, ‘অস্বাভাবিক বাজামীল্য বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য আগামী ৯.১২.২০১৯ সোমবার হইতে সাময়িক কিছুদিনের জন্য হোটেল বন্ধ থাকিবে’। অন্য সামগ্রীর পাশাপাশি, পেঁয়াদের দাম বৃদ্ধির ফলেই যে হোটেল মূলত বন্ধ রাখা হচ্ছে, তা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ওই হোটেলে রয়েছেন ১০ জন কর্মী। আপাতত তাঁদের ছুটিতে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন হোটেল কর্তৃপক্ষ।

হোটের কর্মচারীরা জানাচ্ছেন, শনি ও রবিবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে এই হোটেলে কমপক্ষে ২৫০ জন দুপুরে খাওয়াদাওয়া করেন। হোটেলে রান্নার দায়িত্বে থাকা রাজু দাস নামে এক কর্মীর কথায়, ‘‘মাছ মাংস এবং আনাজ তরকারি রান্নার জন্য প্রতিদিন কম করে ১০ কিলোগ্রাম পেঁয়াজ লাগে। এখন ওই পরিমাণ পেঁয়াজ ব্যবহার করার জন্য নিয়মিত এক হাজার টাকার বেশি লোকসান হচ্ছে। তাছাড়া, মাছ এবং আনাজের দামও অনেকটাই চড়া।’’

বর্তমানে কাঁথি শহরে পেঁয়াজ কিলোগ্রাম প্রতি ১৪০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বুলবুল ঝড়ের পরে অন্য আনাজের দাম রয়েছে অপেক্ষাকৃত চড়া। হোটেলের অন্যতম কর্মকর্তা তপন দাস বলেন, ‘‘পেঁয়াজ ছাড়াও সব জিনিসের দাম অল্প কিছুদিনের মধ্যেই হুহু করে বেড়ে গিয়েছে। খাবারের গুণগত মান বজায় রাখতে গিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই লোকসান হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে সাময়িকভাবে দোকান বন্ধ রাখতে হচ্ছে।’’

শ্রীরূপা হলের কাছের ওই হোটেল ছাড়াও কাঁথি সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন আরও বেশ কয়েকটি হোটেল মালিকেরও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে হিমশিম দশা। তাঁদের দোকান খোলা রয়েছে ঠিকই। তবে পেঁয়াজের দামে তাঁরাও নাজেহাল। মন্দারমণি যাওয়ার ট্রেকার স্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি হোটেল কর্তৃপক্ষের দাবি, নিরামিষ পদ রান্নার ক্ষেত্রে পেঁয়াজ কিছুটা কম ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ইলিশ, বাউল, পমফ্রেটের মত দামি মাছ, খাসি ও মুরগির ক্ষেত্রে পেঁয়াজের পরিমাণ তো একই রাখতে হচ্ছে। তাতে লাভের পরিমাণ কমেছে তাঁদের।

আবার দিঘার বেশ কিছু হোটেলে নিরামিষ পদ রান্নার ক্ষেত্রে পেঁয়াজের ব্যবহার করা হচ্ছে না। পরিবর্তে বাঁধাকপি এবং গাজর ব্যবহার করা হচ্ছে বলে খবর। ওল্ড দিঘার একাধিক হোটেল মালিক কর্তৃপক্ষ জানান, নিরামিষ পদ রান্নার ক্ষেত্রে বাঁধাকপি ব্যবহার করা হলে খাবারের স্বাদ মোটামুটি স্বাভাবিক থাকে। তবে এভাবে তো বেশিদিন চালানো যাবে না।

পেঁয়াজ নিয়ে হোটেল এবং রেস্তোরাঁ মালিকদের এমন কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়ার কথা কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। কাঁথি পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘পেঁয়াজ-সহ বেশ কিছু জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির জন্য হোটেল ব্যবসায়ীদের পক্ষে ব্যবসা চালানো সত্যিই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই কোনও কোনও মালিক লোকসান ঠেকাতে হোটেল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hotel Onion Vegetable
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy