Advertisement
E-Paper

‘কৃষক বন্ধু’ থেকে বঞ্চিত ৪০ হাজার

কৃষি দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৭ লক্ষ চাষি এই প্রকল্পে আবেদন করেছেন। তবে প্রায় ৪০ হাজার চাষি এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারছেন না।

বৃষ্টি হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। তার মধ্যেই লাঙল নিয়ে চাষের কাজে মাঠে নেমে পড়েছেন চাষি। পাঁশকুড়ার যশোড়ায়। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

বৃষ্টি হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। তার মধ্যেই লাঙল নিয়ে চাষের কাজে মাঠে নেমে পড়েছেন চাষি। পাঁশকুড়ার যশোড়ায়। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

দিগন্ত মান্না

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০০:৫৩
Share
Save

কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার একাধিক কর্মসূচি চালু করেছে। যার মধ্যে রয়েছে ‘কৃষক বন্ধু' প্রকল্প, ফসল বিমা প্রভৃতি। প্রতি ক্ষেত্রেই আবেদনের সময় কৃষকের নামে সংশ্লিষ্ট জমির রেকর্ড থাকা জরুরি। অন্য জেলাগুলির মতো পূর্ব মেদিনীপুরেও চলছে ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পে নাম তোলার কাজ। আর সেখানেই দেখা দিয়েছে সমস্যা। নিজের নামে জমির রেকর্ড না থাকায় জেলার প্রায় ৪০ হাজার কৃষক এই প্রকল্পে আবেদনই জানাতে পারেননি। এর জন্য ভূমি ও ভূমি-রাজস্ব দফতরের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন কৃষকেরা।

কৃষি দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৭ লক্ষ চাষি এই প্রকল্পে আবেদন করেছেন। তবে প্রায় ৪০ হাজার চাষি এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারছেন না। কারণ, জমির মিউটেশন না হওয়া। বর্তমানে মিউটেশনের জন্য কৃষি দফতর অনলাইন ব্যবস্থা চালু করলেও কাজে গতি নেই বলে অভিযোগ চাষিদের। নিজের নামে জমি রেকর্ড করতে কারও লাগছে ৬ মাস। কারও দু’বছরেও তৈরি হয়নি রেকর্ড। ফলে জমি রেজিস্ট্রি করার পরেও তা নিজের নামে করতে কালঘাম ছুটছে চাষিদের। এর দরুন প্রতি বছরই বিভিন্ন কৃষি অনুদান বা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চাষিদের একটা বড় অংশ।

বর্তমানে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ও কেনা জমি রেজিস্ট্রির পর চাষিদের দেওয়া মোবাইল নম্বরে ভূমি দফতরের একটি মেসেজ আসে। যেখানে বলা হয়, মিউটেশনের জন্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ওই কৃষকের আবেদন করা হয়ে গিয়েছে। এ বার ওই কৃষককে সমস্ত বৈধ নথির নকল একত্রিত করে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অফিসে জমা দিতে হয়। জমা দেওয়ার পর ফের কৃষকের মোবাইলে নিয়ম অনুযায়ী একটি মেসেজ আসে। সেই মেসেজে মিউটেশনের জন্য শুনানির দিন দেওয়া থাকে। সেই শুনানির দিন কৃষককে সশরীরে হাজির থাকতে হয় ভূমি ও ভূমি রাজস্ব ফতরের অফিসে। শুনানির কিছুদিনের মধ্যেই কৃষক হাতে পান জমির রেকর্ড।

চাষিদের অভিযোগ ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে নথিপত্র জমা দেওয়ার পর দীর্ঘ সময় লাগছে রেকর্ড তৈরি হতে। ফলে বিভিন্ন কৃষি অনুদান প্রকল্পে রেকর্ডের নথি না থাকায় আবেদন করতে পারছেন না তাঁরা। কোলাঘাটের বৃন্দাবনচক গ্রামের চাষি মণ্টু নায়ক বলেন, ‘‘বাবা ভাইদের মধ্যে জমি ভাগ করে দানপত্র করে দিয়েছেন। দু’বছর হল সেই জমির রেকর্ড তৈরির জন্য ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে আবেদন করেছি। কিন্তু আজও শুনানির দিন জানানো হয়নি। তাই এবার কৃষক বন্ধু প্রকল্পে নিজের নামে আবেদন জানাতেই পারলাম না।’’ একই অভিযোগ কোলাঘাটের উত্তর জিয়াদা গ্রামের কৃষক গোবিন্দ পড়িয়ারও। তাঁর কথায়, ‘‘ছ’মাস আগে জমির রেকর্ড তৈরির জন্য ভূমি দফতরে নথিপত্র জমা দিয়েছি। কিন্তু এখনও শুনানি হয়নি।’’

সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘লিঙ্ক সমস্যার জন্য জেলায় মিউটেশনের ১ লক্ষ ৩০ হাজার আবেদন জমেছিল। এখন তা অনেকটাই কমিয়ে আনা হয়েছে। এটি একটি চালু প্রক্রিয়া। চাষিরা যাতে দ্রুত মিউটেশন করাতে পারেন তার জন্য ভূমি ও ভূমি -রাজস্ব দতরের অফিসারদের শনি ও রবিবারও অফিস খোলা রাখতে বলা হয়েছে।’২

এই বিষয়ে কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘ভূমি ও ভূমি-রাজস্ব দফতরের কর্মীদের গাফিলতিতে চাষিরা সময়মত জমির রেকর্ড তৈরি করতে পারছেন না। ফলে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ও অনুদান থেকে। ভূমি ও ভূমি-রাজস্ব দফতর অবিলম্বে সদর্থক ভূমিকা না নিলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’

Farmer Krishak Bandhu

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}