ছবি: পিটিআই।
ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই উত্তপ্ত ঘাটালের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। ঘাটালের গ্রামগুলির পাশাপাশি— মহকুমার চন্দ্রকোনা, দাসপুরেও নিয়মিত গোলমাল চলছে। তবে তুলনায় এগিয়ে ঘাটালই। এরই মধ্যে বিজেপির মারধরে গুরুতর জখম হলেন স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতা।
মঙ্গলবার ঘাটালের দেওয়ানচক-২ পঞ্চায়েতের রাধাবল্লভপুরে অঞ্চলের সহ-সভাপতি সুকুমার সামন্ত এবং অঞ্চল-নেতৃত্ব নবকুমার মণ্ডলকে বেধড়ক মারধোর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় নবকুমার মণ্ডলকে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, এদিন সকালে বিজেপির লোকজন আচমকাই গ্রামে ঢুকে হামলা চালায়।
গত ২৩ মে’র পর থেকে নিয়ম করেই তৃণমূলের অফিস দখল, তৃণমূল কর্মীদের মারধোর, তাঁদের বাড়ি লুটপাটে ঘটনা ঘটছে। প্রসঙ্গত, ঘাটাল ব্লকের ১২টি অঞ্চলের মধ্যে ১১টি অঞ্চলেই হেরেছে তৃণমূল। এবং ফল বার হওয়ার পর থেকেই ঘাটাল ব্লকের ইড়পালা, সুলতানপুর, মনসুকা, বীরসিংহ, মোহনপুর-সহ বেশিরভাগ জায়গাতেই ব্যাপক গোলমাল চলছে। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই এলাকাগুলিতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি তৃণমূল পার্টি অফিস বিজেপির কর্মীরা দখল করে নিয়েছে। বিজেপির হুমকির মুখে পড়ে বহু তৃণমূল নেতাই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে আবার সারাদিন বাইরে কাটিয়ে, বেশি রাতে বাড়ি ফিরছেন।
পরিস্থিতি এমনই যে, গোলমালের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার সাহস পাচ্ছেন না তৃণমূলের ব্লক স্তরের নেতারা। এমনকী, হাসপাতালে ভর্তি আহত নেতা-কর্মীদেরও পাশেও দেখা মিলছে না তাঁদের। এর ফলে ক্ষোভ জন্মাচ্ছে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী এবং সমর্থকদের মধ্যে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মারধোর এবং বাড়িতে ঢুকে অত্যাচারে ভয়ে ঘাটালের বহু তৃণমূল কর্মী গেরুয়া শিবিরে ভিড়ছেন। এবং তাঁরা নিয়মিত বিজেপির মিছিলে পা-ও মেলাচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের ঘাটালের ব্লক সভাপতি দিলীপ মাঝি বলেন, “আমাদের সঙ্গে কর্মীদের যোগাযোগ রয়েছে। হাসপাতালেও যাচ্ছি। তবে সব জায়গায় হয়তো যাওয়া অবশ্য সম্ভব হচ্ছে না!” তৃণমূলের এক ব্লক নেতা কথায়, “এলাকার চার-পাঁচটি অঞ্চলে এখন তৃণমূলের কোনও চিহ্ন নেই। বহু অঞ্চল স্তরের নেতা এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। অবস্থা এমনই যে, পার্টি অফিস খোলারই লোক নেই।” তবে তৃণমূলের কোনও অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপির ঘাটালের সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক রামকুমার দে। তাঁর কথায়, “কোনও ঘটনাতেই বিজেপি কর্মীরা জড়িত নন। সাধারণ মানুষ নিজেদের রাগ মেটাচ্ছেন। নেতারা এমনই অপরাধ করেছেন যে, ভয়ে নিজেরাই ঘর ছেড়ে অন্যত্র আত্মগোপন করে থাকছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy