হাহাকার: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃত কিশোর আজাহারের মা (মাঝে) ও দুই দিদি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দলে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। মাঝে পড়ে প্রাণ গিয়েছে দুই নিরীহের। স্থানীয় সূত্রে খবর, কোন্দলের মূলে রয়েছে সেই কাটমানিই।
কেশপুরের অন্য এলাকার মতো ধলহারার দামোদরচকেও তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। একদিকে স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি শেখ বসিরউদ্দিনের অনুগামীরা। অন্যদিকে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সেলিম আলির অনুগামীরা। বৃহস্পতিবার রাতে এক্তার আলির নেতৃত্বে হামলা, বোমাবাজি হয়েছে বলে অভিযোগ। এক্তার বসিরউদ্দিনের অনুগামী। বসিরউদ্দিনরা আবার তৃণমূলের বর্তমান ব্লক সভাপতি উত্তম ত্রিপাঠীর ঘনিষ্ঠ। অন্য দিকে, সেলিমরা প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের কাছের লোক। তৃণমূলের সাম্প্রতিক সাংগঠনিক রদবদলে কেশপুরে পাশা পাল্টায়নি। উত্তমই ব্লক সভাপতি রয়েছেন। সঞ্জয়-অনুগামীদের দাবি, সেই থেকে উত্তম অনুগামীরা রাতারাতি আরও ‘সক্রিয়’ হয়েছেন।
কোন্দলের মূলে তো কাটমানিই? বোমাবাজিতে মৃত নাসিম আলির ভাই সেলিম বলেন, ‘‘আমার অপরাধ কী? ওরা (এক্তাররা) যে সব খারাপ কাজকর্ম করতে চেয়েছে, আমি সে সব করতে দিইনি। রুখে দাঁড়িয়েছি। এতেই তো আমার উপরে ওদের এত রাগ।’’ জানা যাচ্ছে, বছর দুয়েক ধরেই সেলিমের সঙ্গে এক্তারের বিরোধ চলছে মোরাম সরবরাহ নিয়ে। এক্তার ঠিকাদারি করেন। পঞ্চায়েতের কাজের জন্য যতটা মোরাম সরবরাহের কথা ছিল তা তিনি করেননি। কিন্তু পুরো টাকা দাবি করেছিলেন। সেলিম বলছেন, ‘‘ও ঘুরপথে বরাত পেয়েছিল। ওর দশ গাড়ি মোরাম ফেলার কথা ছিল। নিয়মমাফিক, আগে মোরামের মাপ হওয়ার কথা। তারপর বিছানোর কথা। কিন্তু ও গায়ের জোরে অনিয়ম করে। দশ গাড়ির জায়গায় পাঁচ গাড়ি মোরাম ফেলা হয়। আমাকে বলা হয়েছিল, ভুয়ো বিলে সই করতে। আমি করিনি।’’ সেলিমের আরও দাবি, ‘‘ও চাইত, পঞ্চায়েতের বেশিরভাগ কাজ করতে। নিজে কাজ না পেলে অন্য কাউকেও কাজ করতে দিত না।’’
স্থানীয়েরাও বলছেন, এখানে টাকার বখরা নিয়ে মাঝেমধ্যেই তৃণমূলের দু’পক্ষে গোলমাল বাধে। পঞ্চায়েতের অনেক কাজ টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করেই হয়। ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাটমানি নেন একাংশ নেতা। ব্লকের কিছু নেতাও না কি সেই টাকার ভাগ পান। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্যের খোঁচা, ‘‘তৃণমূলের আমলে কাটমানি ছাড়া কোনও কাজই হয় না।’’
এক্তার ‘পলাতক’। পুলিশ তাঁর খোঁজ করছে। তবে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, ‘‘দল অন্যায় কাজকর্মে প্রশ্রয় দেয় না। আর যারা বোমাবাজি করেছে, তারা দলের কেউ নয়।’’
আর জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারের বক্তব্য, ‘‘কী থেকে গোলমাল হয়েছে, তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy