তৃণমূলের পিংলা ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল গৌতম জানাকে। দল সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গিয়েছিল স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তার প্রেক্ষিতে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকে অপসারণের নির্দেশ আসার পরেই ব্লক সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন গৌতমবাবু। বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তবে সেখানে তিনি নিজের অসুস্থতার কারণ দর্শিয়ে পদ থেকে অব্যহতি চেয়েছেন। গৌতমবাবু নিজেও বলেন, “আমি অসুস্থ থাকায় ব্লকের দায়িত্ব সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছিল। মাস তিনেক আগেই পদত্যাগের ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলাম।”
গৌতম জানা ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দীনেন রায়। তবে পিংলায় তৃণমূলের নতুন ব্লক সভাপতি কে হবেন, তা এখনও ঠিক করতে পারেননি নেতৃত্ব। পিংলার পাশাপাশি তৃণমূলের গোপীবল্লভপুর-২ ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে স্বপন পাত্রকে। স্বপনবাবু স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির পদে রয়েছেন। দলের এক সূত্রে খবর, তাঁর বিরুদ্ধেও কিছু অভিযোগ তৃণমূলনেত্রীর কাছে গিয়েছিল। এখানে নতুন ব্লক সভাপতি হয়েছেন কালীপদ শূর। তৃণমূলের অন্যতম কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “রাজ্যের নির্দেশ মেনে আমরা গোপীবল্লভপুর ২-এর ব্লক সভাপতিকে সরিয়ে দিয়েছি। কিন্তু পিংলার বিষয়টি আলোচনাস্তরে ছিল। ইতিমধ্যে গৌতম জানা নিজেই বৃহস্পতিবার পদত্যাগপত্র দিয়েছেন।” পিংলায় কে ব্লক সভাপতি হবেন, তা দু’-এক দিনের মধ্যেই ঠিক করা হবে বলে জানান প্রদ্যোৎবাবু।
গৌতমবাবু নিজে অসুস্থতার কথা বললেও তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, খোদ মমতার নির্দেশেই তাঁকে সরানো হয়েছে। গৌতমের কিছু কাজকর্ম নিয়ে তৃণমূলনেত্রীর কাছে খবর পৌঁছেছিল। তাতে তিনি বেশ অসন্তুষ্ট হন। মাস কয়েক আগে দুর্গাপুরে দলীয় বৈঠকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায়-সহ কয়েকজন নেতার উপস্থিতিতে কয়েকটি ব্লকে দলের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মমতা। সেই তালিকায় পিংলাও ছিল।
তৃণমূল সূত্রে খবর, বুধবার রাজ্য নেতৃত্বের তরফে চরমবার্তা আসে জেলায়। রাজ্য নেতৃত্ব জানিয়ে দেন, আর গড়িমসি চলবে না। পিংলায় পরিবর্তন করতেই হবে। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব গৌতমবাবুকে মেদিনীপুরে তলব করেন। তিনি কয়েকজন অনুগামীকে নিয়ে এলে তাঁকে পদ ছাড়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। চাপে পড়ে গৌতমবাবুও পদ ছাড়তে রাজি হয়ে যান।
আগে তৃণমূলের পিংলা ব্লক সভাপতি ছিলেন গৌর ঘোড়ই। ২০১০ সালের মাঝামাঝি তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর কোর কমিটি গঠন করা হয়। ২০১২ সালের শেষের দিকে পিংলায় ব্লক সভাপতির দায়িত্ব নেন গৌতম জানা। বছর দেড়েক আগে তৃণমূলেরই কিছু কর্মী রাজ্য নেতৃত্বের কাছে গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, গৌতমবাবুর প্রশ্রয়ে পুরনো তৃণমূল কর্মীদের মারধর করছে তৃণমূলে নতুন নাম লেখানো লোকজন। দুর্দিনে যাঁরা দলের পাশে থেকেছেন, তাঁদের আড়াল করে মুষ্টিমেয় কয়েকজনকে নিয়ে সংগঠন পরিচালন করা হচ্ছে। চাকরি দেওয়ার নামে বেকার যুবক-যুবতীদের থেকে টাকা তোলা, পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজের জন্য পছন্দের ব্যক্তি ছাড়া কাউকে দরপত্র জমা দিতে না পারার অভিযোগও উঠেছিল গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy