প্রশাসনিক সভা এবং বৈঠক করতে আজ পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উপনগরীর ফুটবল মাঠে জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস ছাড়াও সরকারি সাহায্য দিতে প্রশাসনিক সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সফর ঘিরে জেলার প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর এ বারের সফর প্রশাসনিক ভাবে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি রাজনৈতিক ভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতির পদ থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে অপসারণ এবং পরে তমলুকের নিমতৌড়িতে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারীর সঙ্গে তাঁর বিরোধী শিবিরের নেতা বলে পরিচিত অখিল গিরিদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এনেছিল। এর পাশাপাশি অবশ্য রবিবারই নন্দকুমারের খঞ্চিতে প্রথম বার জেলায় এসে নবনিযুক্ত তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ তাঁর পূর্বসূরি তথা তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর পরামর্শ নিয়ে চলার কথা বলে ঐক্যের বার্তা দেন। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সফরে এসে কী বার্তা দেন সে দিকে অধীর আগ্রহে চেয়ে সব মহলই।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক সভার জন্য মুখ্যমন্ত্রী দুই মেদিনীপুরে এলে পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি দলের নেতৃত্ব হিসেবে শিশির-শুভেন্দু অধিকারীরা বিশেষ ভূমিকা নিতেন। এ বার সেই ছবির কিছুটা হলেও বদলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার জন্য প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলা তৃণমূলের দুই শিবিরই এ বার তৎপর। উল্লেখ্য, গত ৬ জুলাই তমলুকের নিমতৌড়ি স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের প্রস্তুতি ও দলের সাংগঠনিক নানা বিষয়ে আলোচনার জন্য জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি শিশির অধিকারীর ডাকা সভায় হাজির হন জেলা তৃণমূল কার্যকরী সভাপতি তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি, হলদিয়ার বিধায়ক শিউলি সাহা, তমলুকের বিধায়ক তথা রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, চণ্ডীপুরের বিধায়ক অমিয় সাহুরা। সেখানে অখিলবাবু ভাষণ দিতে গেলে শিশিরবাবুর অনুগামীরা বাধা দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় ক্ষুদ্ধ অখিলবাবু, সৌমেনবাবু, অমিয়বাবু ও শিউলিদেবী সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান। এই ঘটনায় জেলা নেতাদের কোন্দল প্রকাশ্যে আসে।
স্বাভাবিক ভাবেই, এই পরিস্থিতিতে আজকের সভা ঘরে রাজনৈতিক মহলের আগ্রহ তুঙ্গে রয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী অবশ্য বলেন, “দলে কোনও গণ্ডগোল নেই। গোটাটাই সংবাদমাধ্যমের বানানো।” কিন্তু, দল ঐক্যবদ্ধ থাকলে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি উপলক্ষে নিমতৌড়ির সভায় গোল বেঁধেছিল কেন? দলের বিরোধী শিবিরের নেতাদের নাম না করে শিশিরবাবুর কটাক্ষ, “সে দিন সভায় এসে যাঁরা এ সব করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কোনও লোকজন ছিল না। তাঁরা হাতাশা থেকে এ সব করেছিল।” তাঁর দাবি, “ওই ঘটনা খুবই সামান্য। ওই সভার বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে সব জানিয়েছি।”
তবে, মুখ্যমন্ত্রীর সভা ও বৈঠক নিয়ে তৎপরতা রয়েছে অধিকারী পরিবারের বিরোধী শিবিরেও। ওই সভায় সাধারণ মানুষকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁরাও উদ্যোগী হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও অখিল গিরি বলছেন, “সরকারি ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর সভা হবে। প্রশাসনিক ভাবে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাব। এর সঙ্গে দলীয় রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy