সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে থাকতে পারেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু প্রমুখ। সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য এই তিন নেতাকেই আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বলে সিপিএমের এক সূত্রে খবর। সমাবেশে থাকার কথা দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য মদন ঘোষেরও। জেলায় দলের জোনাল সম্মেলনপর্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবারই প্রথম জেলা কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে দলের জেলা সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে ওই সূত্রের খবর। ঠিক হয়েছে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ হবে।
সিপিএম নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, এ দিন দলের জেলা কমিটির রুটিন বৈঠক হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই সেই বৈঠকে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “একেবারেই রুটিন বৈঠক। আগামী দিনে বেশ কিছু আন্দোলন কর্মসূচি রয়েছে। সেই সব কর্মসূচিগুলো নিয়ে আলোচনা হয়।” সমাবেশে কি ওই পলিটব্যুরো সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হবে? সদুত্তর এড়িয়ে দীপকবাবু বলেন, “সম্মেলনে নেতৃত্বের অনেকেই আসবেন।”
আগামী ৮-১০ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুর শহরে সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলন হবে। প্রথম দিনই প্রকাশ্য সমাবেশ হবে। দলের এক সূত্রে খবর, সমাবেশে অন্তত ৫০ হাজার লোকের জমায়েত করতে এখন থেকেই কোমর বাঁধছেন জেলা নেতৃত্ব। এ দিন জেলা কমিটির সদস্যদের প্রয়োজনীয় কিছু নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। একদা ‘লালদুর্গ’ বলে পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুরে গত লোকসভা ভোটেও নজিরবিহীন ভরাডুবি হয়েছে সিপিএমের। ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটে এ জেলায় বামেদের প্রাপ্ত ভোট যেখানে ছিল ৪৪ শতাংশ, ২০১৩ সালের পঞ্চায়েতে যেখানে তা কমে হয় ৩৪ শতাংশ, সেখানে লোকসভায় তা কমে হয়েছে ২৯ শতাংশ। তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট যেখানে ৫১ শতাংশ।
গত ৩০ ডিসেম্বরই পশ্চিম মেদিনীপুরে জোনাল সম্মেলনপর্ব শেষ হয়। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে নতুন বছরের প্রথম দিন, বৃহস্পতিবারই বৈঠকে বসেন সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্যরা। দলের কর্মীদের উজ্জীবিত করতে আন্দোলনের পথেই যাচ্ছে সিপিএম। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বন্ধ কলকারখানা, চিটফান্ডের মতো বিষয় নিয়ে জেলা জুড়ে আন্দোলন হবে। তৃণমূল আমলে জেলার কোন এলাকায় কত চিটফান্ড গজিয়ে ওঠে, তারও একটি তালিকা বানানো হবে।
জোনাল সম্মেলনপর্ব ঘিরে দলের অন্দরে কিছু বিতর্ক রয়েছেই। যেমন, কেউ কেউ আশা করেছিলেন, দলে তাঁদের পদোন্নতি হবে। কিন্তু হয়নি। আবার কেউ কেউ ততটা সক্রিয় না থেকেও স্বপদে বহাল রয়েছেন বলে অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে জেলা সিপিএমের এক নেতা বলেন, “পদ বড় নয়। সাধারণ সদস্য হিসেবেও দলের কাজ করা যায়। কাজ করার ইচ্ছেটাই আসল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy