একশো জনবসতি রয়েছে, এমন এলাকাতেও পাকা রাস্তা তৈরিতে তৎপর হল সরকার। এই কাজ হবে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায়। তবে প্রথমেই সর্বত্র এই কাজ হবে না। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এই কাজের জন্য দু’টি ব্লককে বেছে নেওয়া হয়েছে বিনপুর-২ এবং গড়বেতা-২ ব্লক। দু’টি ব্লকই মাওবাদী এলাকার অন্তর্গত। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে সমীক্ষার কাজও। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পাপিয়া ঘোষ রায়চৌধুরী বলেন, “সমীক্ষা শেষ হলেই বোঝা যাবে একশো জনবসতি রয়েছে এমন এলাকাগুলিকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার সঙ্গে প্রধান রাস্তার সঙ্গে জুড়তে কত কিলোমিটার রাস্তা প্রয়োজন। তার জন্য কত টাকা খরচ হবে। তারপরই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে।” উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই এই ধরনের পদক্ষেপ বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
এতদিন সাধারণত, এক হাজার থেকে পাঁচশো জনবসতি রয়েছে এমন এলাকাগুলিতেই রাস্তা তৈরির উপর জোর দেওয়া হত। কিছু ক্ষেত্রে আড়াইশো জনবসতি রয়েছে, এমন এলাকাতেও রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে রাজ্য সড়ক বা স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে দু’-একটি পাকা রাস্তা করা ছিল। ওই সব গ্রামগুলিকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মাধ্যমে সেই পাকা রাস্তার সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হত। এরপর প্রশ্ন ওঠে, যদি কোনও এলাকায় একশো জনের বাস হয়, তাহলে তাঁরা কেন যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত থাকবেন। কারণ সেখানেও তো দোকান-বাজার থেকে স্কুল-কলেজে যেতে ভাল রাস্তা প্রয়োজন। তা ছাড়া খেতের ফসল বিক্রিরও তো প্রয়োজন রয়েছে। খন্দে ভরা কাঁচা রাস্তা দিয়ে কী করে যাতায়াত সম্ভব! এ সব ভেবেই একশো জনবসতি রয়েছে, এমন এলাকায় রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় পর্যাপ্ত রাস্তা তৈরির বরাদ্দ পেয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। তবে কাজ সে ভাবে এগোয়নি। মূলত, ঠিকাদার না মেলাতেই বারবার দরপত্র আহ্বান করেও বেশিরভাগ রাস্তারই কাজ শুরু করা যায়নি বলে প্রশাসন জানিয়েছে। পরেএনপিসিসি ও এনবিসিসি নামে দু’টি সরকারি সংস্থাকে রাস্তা তৈরির বরাত দেওয়া হয়। এনপিসিসি ৮৫টি ও এনবিসিসি ২৯টি রাস্তার কাজের জন্য পদক্ষেপও শুরু করেছে। প্রশাসন জানিয়েছে, ২৮১টি রাস্তার মধ্যে (১৫২২কিমি) ৮৯টির কাজ করছে বিভিন্ন ঠিকাদার। আর ১১৪টি-র কাজ করবে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা। যাতে দ্রুত গতিতে কাজ শেষ হয় সে জন্য দু’টি সংস্থাকেই পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় জেলা যে বরাদ্দ পেয়েছে, তাতে সব রাস্তার কাজ শেষ করা হলে জেলায় রাস্তার সমস্যা থাকার কথা নয়। তা ছাড়া, মাওবাদী প্রভাবিত এই জেলায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ভবিষ্যতে বরাদ্দ পেতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই কারণেই এ বার একশো জনবসতি রয়েছে এমন এলাকাগুলিকেও এই প্রকল্পের মাধ্যমে বড় রাস্তার সঙ্গে যুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy