আউট হওয়ার পর হতাশ সূর্যকুমার যাদব। হারল তাঁর দলও। ছবি: পিটিআই।
আশা জাগিয়েও শেষ রক্ষা হল না। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে তিন উইকেটে হেরে গেল ভারত। বরুণ চক্রবর্তীর বোলিংয়ে একটা সময় মনে হচ্ছিল তারা জিতে ২-০ এগিয়ে যাবে। তবে শেষের দিকে খেলা ঘুরিয়ে দিলেন ট্রিস্টান স্টাবস এবং জেরাল্ড কোয়েৎজ়ি। দুই ক্রিকেটারের সৌজন্যে সিরিজ়ে সমতা ফেরাল দক্ষিণ আফ্রিকা। আগে ব্যাট করে ১২৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা সাত উইকেটেই সেই রান তুলে দেয়। চার ম্যাচ সিরিজ় এখন ১-১।
মন্থর পিচে জেতালেন কোয়েৎজ়ি
কেবেরহার আকাশ মেঘলা ছিল ম্যাচের আগে থেকেই। পিচে ঘাসও ছিল। বিশেষজ্ঞ শন পোলক জানিয়েছিলেন, এই পিচে শুরুর দিকে পেস বোলারেরা সুবিধা পাবেন। ধীরে ধীরে তা মন্থর হয়ে যাবে। আগে বল নেওয়াই উচিত কাজ হবে। সেটাই করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এডেন মার্করাম। দু’দলের ইনিংসে সেটা বার বার বোঝা গেল। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের বল খেলতে অসুবিধা হচ্ছিল ভারতীয়দের। ইচ্ছেমতো মাঠের বাইরে বল পাঠাতে পারছিলেন না। খুচরো রান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছিল। চালিয়ে খেলতে গিয়ে উইকেটও দিলেন অনেকে। রান তাড়া করার সময় দক্ষিণ আফ্রিকাও সমস্যায় পড়েছিল। তবে কোয়েৎজ়ি মনে হল আলাদা পিচে ব্যাট করলেন। ভারতের বোলারদের শাসন করে দলকে জেতালেন তিনি। এক দিক থেকে উইকেট পড়লেও উল্টো দিকে টিকেছিলেন স্টাবস। শেষ পর্যন্ত থেকে দলকে জেতানোয় প্রশংসা প্রাপ্য তাঁরও।
বরুণের অবদান কাজে লাগল না
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে বরুণ জীবনের সেরা বোলিং করেছিলেন। রবিবার সেটাকেও ছাপিয়ে গেলেন। টি-টোয়েন্টিতে প্রথম বার পাঁচ উইকেট পেলেন কেকেআরের বোলার। নিজের দ্বিতীয় বলেই ফেরান মার্করামকে। এর পর যত সময় গিয়েছে তত ক্ষুরধার হয়েছে বরুণের বোলিং। একই লাইনে বল রেখে গিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এমন ভাবে গুগলি ব্যবহার করছিলেন যেগুলি খেলতে অসুবিধা হচ্ছিল প্রোটিয়া ব্যাটারদের। রিজ়া হেনড্রিক্স, মার্কো জানসেন, হেনরিখ ক্লাসেন, ডেভিড মিলারদের পর পর আউট করে দেন তিনি। মিলারকে আউট করার পর হ্যাটট্রিকের সুযোগ এলেও কাজে লাগাতে পারেননি।
দুই শতরানের পর ব্যর্থ সঞ্জু
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে টানা দু’টি শতরান করে প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সঞ্জু স্যামসন। আবার ব্যর্থতার রাস্তায় ফিরলেন তিনি। ভারতীয় ওপেনার এ দিন খাতাই খুলতে পারেননি। তৃতীয় বলেই ফিরে যান। জানসেনের বলে লেগস্টাম্প ছেড়ে চালিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন সঞ্জু। কিন্তু ব্যাটের সঙ্গে বলের সংযোগ হয়নি। বল উইকেট ভেঙে দেয়। সঞ্জুকে খেয়াল রাখতে হবে যাতে এই ব্যর্থতা ধারাবাহিক না হয়ে যায়। অতীতে বার বার প্রত্যাশা জাগিয়েও তিনি সাড়া ফেলতে পারেননি। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তার খেয়াল রাখতে হবে ভারতীয় ওপেনারকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডিং
ভারতের ইনিংসে জুড়ে ভাল ফিল্ডিং করলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারেরা। যেখানেই বল যাচ্ছিল সেখানেই কোনও না কোনও প্রোটিয়া ফিল্ডার হাজির হয়ে যাচ্ছিলেন। অন্তত ৩০ রান বাঁচিয়েছেন তাঁরা। মার্করামের বলে কভারের উপর দিয়ে তুলে খেলতে গিয়েছিলেন তিলক বর্মা। লাফিয়ে উঠে এক হাতে বল তালুবন্দি করেন মিলার। এমনিতেই এই পিচে রান তোলা কঠিন হয়ে পড়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডারদের কারণে রান তুলতে আরও সমস্যা হয়ে যায়। চালিয়ে খেলতে বেশ কিছু ক্রিকেটার উইকেট খোয়ান। তবে শেষ ওভারে কোয়েৎজ়ি এবং মার্করাম একটি করে ক্যাচ ফেলেন।
মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা
ভারতের দুই ওপেনার এ দিন ব্যর্থ হয়েছেন ঠিকই। কিন্তু সেই শূন্যতা ঢেকে দিতে পারেননি মিডল অর্ডার ব্যাটারেরাও। সঞ্জু এবং অভিষেক শর্মা ফিরে গিয়েছিলেন দলের পাঁচ রানের মধ্যেই। সেই পরিস্থিতিতে সূর্যকুমার, তিলকদের আরও পরিণত মানসিকতা দেখানোর দরকার। সেটা তাঁরাই কেউই করতে পারেননি। তিলক তবু ভাল একটি ক্যাচে আউট হয়েছেন। তবে সূর্যকুমারের আউট মেনে নেওয়া যায় না। অ্যান্ডিল সিমেলানের উইকেট লক্ষ্য করে করা বলে মিড অন অঞ্চল দিয়ে চালাতে গিয়েছিলেন। বলে ব্যাট লাগাতেই পারেননি। প্যাডে গিয়ে লাগে। তবু এ দিন বুদ্ধি করে অক্ষর পটেলকে উপরে খেলানোয় কিছুটা লাভ হয়েছে। ২১ বলে ২৭ রান করে যান অক্ষর।
রিঙ্কুকে নিয়ে চিন্তা
শেষের দিকে চালিয়ে খেলার জন্য রিঙ্কু সিংহ প্রসিদ্ধ। তবে নিজের খেলার ধরন নিয়ে এ বার ভাবতেই হবে রিঙ্কুকে। চালিয়ে খেলবেন বলে ম্যাচের পরিস্থিতি না বুঝেই যদি শট খেলতে থাকেন, তা হলে আগামী দিনে জায়গা হারাতে হতে পারে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৫৩ রান বাদ দিলেন রিঙ্কু সাতটি ইনিংসে ২০ রানও পেরোতে পারেননি। দলের বিপদের সময় এ দিন তাঁর ধরে খেলা উচিত ছিল। কিন্তু স্লগসুইপ খেলতে গিয়ে কোয়েৎজির হাতে সহজ ক্যাচ দেন রিঙ্কু। বেশি বল খেলে ফেলে অধৈর্য হয়েই উইকেট খোয়ালেন কি না সে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy