হাহাকার: মাওবাদী হামলায় নিহত জওয়ানের দেহ আঁকড়ে মেয়ের কান্না। ছবি: পাপন চৌধুরী
বিধানসভা ভোট গণনার দিন, মঙ্গলবার ছত্তীসগঢ়ের সুকমায় মাওবাদীদের রাখা ল্যান্ডমাইন ফেটে মারা গেলেন আসানসোলের বাসিন্দা, সিআরপি জওয়ান সঞ্জিতকুমার হরিজন (৩৩)। বুধবার নিহত জওয়ানের দেহ বিমানে করে প্রথমে কলকাতা, পরে গাড়িতে আসানসোলে নিয়ে যায় সিআরপি। চোখে জল, তবু সঞ্জিতের বৃদ্ধ বাবা রামঅবতার হরিজন বলেন, ‘‘দুই নাতিও যেন বড় হয়ে ফৌজি হয়।’’
কালীপাহাড়ির নিউ ঘুষিক খনি-আবাসনের বাসিন্দা সঞ্জিতের মা সোনিয়াদেবী ও স্ত্রী সরোজদেবীরা কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। সঞ্জিত ও সরোজদেবীর তিন সন্তান। বড় মেয়ে মুসকান সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। দুই ছেলে সাহিল ও অভয়ের বয়স যথাক্রমে আট ও দু’বছর। বাবার দেহ আঁকড়ে কেঁদে চলেছিল মুসকান। বাড়ির সবাই কেন এমন করছে, কেন প়ড়শিদের ভিড়, বুঝতে পারেনি দুই ছেলে। সাহিল ও অভয়ের দিকে তাকিয়ে রামঅবতার বলেন, ‘‘সোমবার বিকেলেই কথা হল ছেলের সঙ্গে। এখন ও নেই। তবে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। চাইব, নাতিরাও ফৌজি হোক।’’
২০০৬-এ কাজে যোগ দেন সঞ্জিত। ১৫০ নম্বর ব্যাটালিয়নে কনস্টেবল ছিলেন। রামঅবতারের দাবি, ‘‘মঙ্গলবার বিকেলে সুকমায় ছেলের অফিস থেকে বলল, দুপুরে ওরা ১৬ জন টহলে বেরিয়েছিল। মাওবাদীদের রাখা মাইন ফেটে ছেলে জখম হয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ এল খারাপ খবর।’’ সিআরপি সূত্রের খবর, টহল দেওয়ার পথে মাইনের উপরে পা পড়ে যায় সঞ্জিতের। জখম অবস্থায় হেলিকপ্টারে তাঁকে রায়পুরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে বাঁচানো যায়নি।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে ছটপুজোর সময়ে আসানসোলে এসেছিলেন সঞ্জিত। বাড়ি তৈরির জন্য জমি দেখে গিয়েছিলেন। মার্চে জমি কেনার কথা ছিল তাঁর। ‘‘সে সব এখন দূর অস্ত। আগে নাতনি, নাতিদের মানুষ করতে হবে’’, বলছিলেন রামঅবতার।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এ দিন বিকেলে নিহত জওয়ানকে ‘গান স্যালুট’ দেয়। উপস্থিত ছিলেন সিআরপি-র ডিআইজি (দুর্গাপুর রেঞ্জ) বিনয়কুমার সিংহ, কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সায়ক দাস প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy