Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2024

সংযমী পুজো উদ্‌যাপনের বার্তা শহরের বহু স্কুলে

বেসরকারি কয়েকটি স্কুলের অধ্যক্ষরা অবশ্য জানিয়েছেন, পুজো কী ভাবে কাটাবে পড়ুয়ারা, সেই বিষয়ে তাঁরা কিছু চাপিয়ে দেননি।

Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৪০
Share: Save:

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর খুন ও ধর্ষণের ঘটনার পরে পেরিয়ে গিয়েছে এক মাসেরও বেশি সময়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘পুজোয় ফিরুন, উৎসবে ফিরুন।’’ কিন্তু যেখানে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কার্যত গণ আন্দোলনের চেহারা নিয়েছে, সেখানে কি পুজো আর-পাঁচটা বছরের মতো হবে? তেমন যে হবে না, তা আঁচ করেই পুজো অন্যরকম ভাবে যাপন করার পরামর্শ দিচ্ছেন অধিকাংশ স্কুলের শিক্ষকেরা।

যেমন হাওড়ার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবনের প্রধান শিক্ষিকা মোনালিসা মাইতি বলেন, ‘‘আমি পড়ুয়াদের বলেছি, এ বার পুজোয় তোমরা মনুষ্যত্বের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাও। এখন যে সময়ের মধ্যে দিয়ে চলছ, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উদ‌্‌যাপন করো।’’

কী ভাবে সেই উদ্‌যাপন হতে পারে, তার দিশাও দেখিয়েছেন মোনালিসা। তিনি জানান, নবম থেকে দ্বাদশের ছাত্রীদের নিয়ে একটি দল গঠন করার কথা বলেছেন। তারা উপহার হাতে পৌঁছে যাবে নিঃসঙ্গ বা পরিবার থেকে বিচ্যুত শিশুদের কাছে। যারা কাজ করে কারখানা বা দোকানে। থাকেও সেখানেই। মোনালিসা বলেন, ‘‘এটা নবম থেকে দ্বাদশের মেয়েরা করবে। ছোটরা হয়তো প্রতিবাদটা পুরোটা বুঝবে না। কিন্তু তাদেরও বলা হয়েছে, এ বারের পুজোটা অন্যরকম।’’ মোনালিসার মতে, জোর করে কিছু চাপিয়ে না দিয়ে পুজোয় ভাল কিছুর জন্য যদি একটু আনন্দ ত্যাগ করা যায়, তা হলে সেটা করারই পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।

বেলগাছিয়া মনোহর অ্যাকাডেমির শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্তর মতে, পুজোয় অংশগ্রহণ কোরো না, এমন বলা যায় না। কারণ, সবাই পুজোর জন্য অপেক্ষা করে। কিন্তু তবুও তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, কোনও কাজের মধ্যে দিয়ে সামাজিক বার্তা দিতে। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের কাছের পুজোটি উদ্বোধনের জন্য পাঁচ জন মেয়েকে আমরা নির্বাচন করেছি। তাঁদের কেউ নিঃসঙ্গ, কেউ বাঁচার জন্য লড়াই করছেন অন্যরকম ভাবে, কেউ ভিন্ন ভাষাভাষী। এই ভাবে পড়ুয়াদের মধ্যে মানুষকে সম্মান করার একটা বার্তা দিতে চাই। পরস্পর সম্মানবোধ বাড়লে আর জি করের মতো ঘটনা কমবে।’’

নিজেদের বিবেচনা বোধ অনুযায়ী পুজো কাটানোর কথা বলেছেন দমদম সুভাষনগর হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইদুল ইসলাম। সাইদুল বলেন, ‘‘এ বারের পুজো যে আলাদা, সেটা উঁচু ক্লাসের ছেলেরা এমনিই বুঝতে পেরেছে। ছোটদের যতটা সম্ভব বোঝানো হয়েছে। বলা হয়েছে, কারও দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে নিজে বিবেচনা করতে।’’

ভবানীপুর মিত্র ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, ‘‘এ বার পুজো নিয়ে ছাত্ররা সে ভাবে আলোচনা করছে না। উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা অনেকেই খুব সচেতন। প্রাক্তনীদের মিছিলে অনেকে স্কুলপোশাক না পরে যোগও দিয়েছে।’’ রাজা জানান, একাদশ ও দ্বাদশের কিছু ছাত্র জানিয়েছে, তারা এ বার রাত জেগে ঘোরা, রেস্তরাঁয় খাওয়া থেকে দূরে থাকবে। রাজা বলেছেন, ‘‘আমরা বলেছি অঞ্জলি দাও, পুজোর অনুষ্ঠানে অংশ নাও। কিন্তু সংযত থেকো।’’

বেসরকারি কয়েকটি স্কুলের অধ্যক্ষরা অবশ্য জানিয়েছেন, পুজো কী ভাবে কাটাবে পড়ুয়ারা, সেই বিষয়ে তাঁরা কিছু চাপিয়ে দেননি। মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লসের
ডিরেক্টর দেবী কর বলেন, ‘‘নিজে থেকে আমরা কিছু বলিনি। তবে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা যথেষ্ট সচেতন। এ বার পুজো অন্যরকম। সংবেদনশীল থাকা জরুরি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2024 R G Kar Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE