অমর্ত্য সেন। ফাইল চিত্র।
অমর্ত্য সেনকে প্রতীচী বাড়ির ১৩ ডেসিমাল জমি খালি করার যে নির্দেশ দিয়েছে বিশ্বভারতী, তাকে ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। অনেকেই বলছেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে আত্মপক্ষ রাখার সুযোগ না-দিয়ে কার্যত ‘এক তরফা’ ভাবে এই নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
বুধবার রাতে নোটিস জারি করে বিশ্বভারতী জানিয়ে দেয়, অমর্ত্য এবং সংশ্লিষ্ট যাঁরা ১৩ ডেসিমাল জমি (নোটিসে বলা হয়েছে, প্রতীচীর উত্তর-পশ্চিম কোণের জমি) দখলে রেখেছেন, তাঁদের ১৫ দিনের মধ্যে বা ৬ মে-র মধ্যে তা খালি করে দিতে হবে। অন্যথায় অমর্ত্য এবং সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিকে উল্লিখিত জায়গা থেকে ‘উচ্ছেদ’ করা হবে। নোটিসে দাবি করা হয়েছে, ‘ওই জমি জনগণের সম্পত্তি। তা দখল করে রাখা যায় না। অধ্যাপক অমর্ত্য সেনকে অনেক সময় দেওয়া হয়েছে। তাঁকে সশরীর হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। উনি বা ওঁর কোনও প্রতিনিধি আসেননি’। বৃহস্পতিবার সেই নোটিস ‘প্রতীচী’ বাড়ির গেটে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতীচীতে গিয়ে পুরো ১.৩৮ একর জমির কাগজ অমর্ত্যের হাতে তুলে দিয়ে এসেছেন এ বছর জানুয়ারিতে। তার পরেও বিশ্বভারতী কী ভাবে তাঁকে ১৩ ডেসিমাল জমি খালি করার নির্দেশ দিতে পারে, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তা ছাড়া, অমর্ত্যের আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে প্রতীচীর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে বীরভূম জেলা প্রশাসনের হাতে। এর পরেও ‘উচ্ছেদ’-এর নোটিস ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। প্রশাসনের নজরে রয়েছে।’’ জেলা প্রশাসনের সূত্রে বলা হচ্ছে, অমর্ত্যের প্রয়াত পিতা আশুতোষ সেনের নামে ১.৩৮ একর জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল। তার রেকর্ড ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে রয়েছে। পরবর্তী কালে ১.৩৮ একর জমিই অমর্ত্যের নামে রেকর্ড করানো হয়। সুতরাং সেই রেকর্ড সংশোধন না-করে তাঁকে উচ্ছেদ-নোটিস দেওয়া যায় না।
প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “এ-সব উপাচার্যের পাগলামো ছাড়া আর কিছুই নয়। অমর্ত্য সেনের মতো বিশ্ববরেণ্য মানুষের সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহার তাঁর শোভা পায় না।” আর এক আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “এক সময় রবীন্দ্রনাথ ও রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর জ্ঞানীগুণী মানুষজনকে শান্তিনিকেতনে নিয়ে এসেছিলেন। অথচ এখন শান্তিনিকেতন থেকে জ্ঞানীগুণীদের কী ভাবে তাড়ানো যায়, সেই চেষ্টা চলছে।” বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, “অমর্ত্য সেনের সম্মান নষ্ট না-করে, বিষয়টি নিজেদের মধ্যে সম্মান বজায় রেখেও মিটিয়ে নিতে পারত বিশ্বভারতী। এতে আখেরে বিশ্বভারতীরই সুনাম নষ্ট হচ্ছে।” ‘প্রতীচী’র দায়িত্বে থাকা গীতিকন্ঠ মজুমদার বলেন, “অমর্ত্য সেন এখনও ওই জমির ইজারাদার। রেকর্ড সংশোধন না করিয়ে কী ভাবে বিশ্বভারতী এই নোটিস দিতে পারে, তা ভেবেই অবাক লাগছে।” বিশ্বভারতী এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy