Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Institute Of Neuroscience

তারের জাল বেঁধে সজাগ হাসপাতাল, প্রশ্ন থাকছেই

এক মেডিক্যাল কলেজের কর্তার কথায়, “প্রতিটি শৌচাগারকে খতিয়ে দেখার জন্য পূর্ত দফতরকে জানানোর পরিকল্পনা করছি।”

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২২ ০৬:৪৩
Share: Save:

প্রতিটি কেবিন থেকে ওয়ার্ড— সর্বত্র জানলার ভিতর ও বাইরের দিকে তারের জাল লাগানো হবে। শনিবার সুজিত অধিকারীর মৃত্যুর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার এমনই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে কর্মরত দুই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে আলোচনা করে, সুরক্ষা ও নিরপত্তার দিকটি আরও মজবুত করারও ব্যবস্থা হচ্ছে। যদিও প্রশ্ন, অন্য হাসপাতালেও যেখানে প্রয়োজন, সেখানে এমনটা হবে তো?

রবিবার ওই হাসপাতালের সিইও-চিকিৎসক অভীক রায়চৌধুরী জানাচ্ছেন, শৌচাগারের সুরক্ষা ব্যবস্থাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রতিটি তলের প্রতিটি জায়গায় আরও নজরদারি বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “জানলার পাল্লার উপর ও নীচে স্ক্রু আটকে রাখায় তা সহজে খোলার উপায় ছিল না। কিন্তু রোগী সেটা ভেঙে ফেলবেন, তা কল্পনাও করা যায়নি। কিন্তু ঘটনা যখন ঘটেছে, তখন পরিকল্পনা করতে হবে আরও জোরদার কী ব্যবস্থা করা যায়।”

কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, প্রতিটি জানলার ভিতর ও বাইরের দিকে এমন তারের জাল লাগানো হবে, যাতে সেটা সাধারণ কোনও কিছু দিয়ে কাটা বা ভাঙা না যায়। শনিবার ওই হাসপাতালের আটতলার কেবিনের জানলা দিয়ে রোগীর কার্নিশে চলে আসা এবং পরে নীচে পড়ে যাওয়ার ঘটনার পরেই শহরের সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালগুলি নজরদারি বাড়ানোর উপরে জোর দিচ্ছে।

যেমন, ঘটনার পরেই ওই দিন বিকেলে সমস্ত কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে সুরক্ষার দিকে কী নজর রাখা প্রয়োজন, তা বুঝিয়েছেন ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রির অধিকর্তা অমিত ভট্টাচার্য। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে শৌচাগার, রান্নাঘর— সব জায়গা তিনি ঘুরে দেখেন। আবার লুম্বিনী পার্ক মানসিক হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাঁদের প্রতিটি ওয়ার্ডের যে সিলিং পাখা রয়েছে, তা একটি তার-জালের খাঁচার ভিতরে রয়েছে। সেগুলির প্রতিটির অবস্থা খুঁটিয়ে দেখেছেন ওই হাসপাতালের আধিকারিকেরা। শহরের আর এক মেডিক্যাল কলেজের কর্তার কথায়, “প্রতিটি শৌচাগারকে খতিয়ে দেখার জন্য পূর্ত দফতরকে জানানোর পরিকল্পনা করছি।”

পিয়ারলেস হাসপাতালের কর্তা-চিকিৎসক সুদীপ্ত মিত্রের কথায়, “জানলায় গ্রিল লাগানো যায় না। আমরির ঘটনার পর থেকে সে বিষয়ে নির্দেশিকা রয়েছে। কিন্তু এই ঘটনা একটা বড় শিক্ষা। তাই প্রতিটি ওয়ার্ডে ও কেবিনে বিশেষ নজরদারি চালু করার পরিকল্পনা করেছি।” আবার আমরি গোষ্ঠীর তিনটি হাসপাতালের জানলাই দ্বিস্তরীয় কাচের তৈরি বলে জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। সেটি রাবার দিয়ে ফিক্স করা থাকে। এক কর্তার কথায়, “সেটি খোলা তো যাবেই না, সহজে ভাঙাও যাবে না। প্রতিটি বারান্দা, সিঁড়ি ও ছাদে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কেন্দ্রীয় ভাবে তা পর্যবেক্ষণ করা হয়।” তাঁদেরও কোনও জানলা খোলা যাবে না বলেই জানাচ্ছেন ফোর্টিস হাসপাতালের আঞ্চলিক অধিকর্তা প্রত্যুষ শ্রীবাস্তব। তিনি জানাচ্ছেন, হাসপাতালের ছাদে যাওয়ার জন্য প্রতিটি তলে যে সিঁড়ি রয়েছে, তা পুরো বন্ধ করা থাকে। সেগুলি প্রতিনিয়ত পরীক্ষা করা হলেও, আবারও নিরাপত্তা রক্ষীদের জানানো হয়েছে।

উডল্যান্ডস হাসপাতালের সিইও এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর রূপালী বসু বলেন, রোগী সুরক্ষার যে ধরনের ব্যবস্থাপনা ওই হাসপাতালে রয়েছে, তা প্রতিদিন পর্যবেক্ষণ করা হয়। কিন্তু সুজিতের ঘটনায় একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, তা হল জানলার পাল্লার স্ক্রু ভাঙলেও তার আওয়াজ কেউ পেলেন না কেন? বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় রয়েছে সবার মধ্যে। কোনও রোগীর মধ্যে ন্যূনতম মানসিক অস্থিরতা থাকলে, তাঁকে সিঙ্গল কেবিন দেওয়া হয় না বলে জানিয়েছেন ডিসান হাসপাতালের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর তাপস মুখোপাধ্যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Institute Of Neuroscience Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy