দুর্গাপুরের সভায়। নিজস্ব চিত্র
নতুন জেলা হওয়ার পরে এলাকায় দলের প্রথম সভা। কিন্তু দুর্গাপুরে কংগ্রেসের সেই সভায় দেখা গেল না শহরে দলের প্রথম সারির অনেক নেতাকেই। সভায় দলের প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী এলাকার শিল্প পরিস্থিতি নিয়ে দোষারোপ করলেন রাজ্য সরকারকে। তবে দুর্গাপুরে ঠিক সময়ে পুরভোটের দাবি তোলা হবে বলে যে আশা কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা করেছিলেন, অধীরবাবু সে নিয়ে নীরবই রইলেন।
এ দিন সভা আয়োজনের পুরোভাগে ছিলেন কংগ্রেসের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী। কিন্তু সভায় গরহাজির থাকেন কংগ্রেস নেতা সুদেব রায়, বিকাশ ঘটক, উমাপদ দাস, তরুণ রায়, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা ভোটে তৃণমূল ছেড়ে আসা বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে প্রার্থী করার সময় থেকেই সমস্যা শুরু। প্রবীণ নেতাদের অনেকে এ ভাবে দলের সদস্যপদ না থাকা এক জনকে প্রার্থী করায় আপত্তি জানান। কিন্তু জেলা সভাপতি দেবেশবাবু তাতে কান দেননি বলে অভিযোগ। তার পরেই ভোটের প্রচারে দেখা যায়নি নেতাদের অনেককে।
বিশ্বনাথবাবু বিধায়ক হওয়ার পরেও দলের নানা কর্মসূচিতে পুরনো নেতাদের আর দেখা যায়নি। তবে দলের প্রদেশ সভাপতির সভায় অন্তত তাঁরা আসবেন, মনে করেছিলেন কর্মী-সমর্থকরা। এ দিন সভায় কয়েক জন কর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এমনিতেই সংগঠনের হাল তলানিতে। তার মধ্যে নেতাদের এমন দ্বন্দ্ব পরিস্থিতি আরও খারাপ করবে।’’ না আসার কারণ প্রসঙ্গে বিকাশবাবু জানান, তিনি এএসপি-র ট্রেড ইউনিয়নের কাজ নিয়ে আসানসোলে ব্যস্ত ছিলেন। উমাপদবাবুর অবশ্য অভিযোগ, ‘‘চার দশকেরও বেশি সময় দলে আছি। সভা যে হবে তা নিয়ে কোনও বৈঠক হয়নি। শুধু সোমবার একটি চিঠি পাই লেটার বক্সে।’’ তরুণবাবুর বক্তব্য, ‘‘অগণতান্ত্রিক ভাবে দল চলছে। সংগঠনের ক্ষতি হচ্ছে।’’
জেলা সভাপতি দেবেশবাবু বলেন, ‘‘কেন আসেননি তা তাঁরাই জানেন! দোষারোপ করে লাভ নেই।’’ সময়ে নির্বাচনের দাবি না তুললেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জানান, দুর্গাপুরে বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের নেতৃত্বেই দল পুরভোটে লড়বে।
এ দিনের সভায় অধীরবাবু অভিযোগ করেন, পরপর তিন বছর শিল্প সম্মেলন করে প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ, বিনিয়োগ কোথায় হয়েছে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘গত ছ’বছরে দুর্গাপুরে কোনও কারখানা হয়নি! দিনের পর দিন মানুষকে ধাপ্পা দেওয়া যাবে না।’’ তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করেন বলেই উনি বিনিয়োগ দেখতে পাচ্ছেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy