Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
car

ভাড়াগাড়ির সঙ্কটে বহু আমলা

প্রশাসনের শীর্ষ অফিসারেরা সরকারি পুল থেকে বাতানুকূল গাড়ি পান। সরকারের কেনা সেই সব গাড়ি চালান চুক্তিতে নিযুক্ত চালকেরা। কিন্তু এই ধরনের গাড়ির সংখ্যা খুবই কম।

অফিসারদের জন্য বরাদ্দ নন-এসি লাক্সারি ট্যাক্সির ভাড়া ১৪ বছর বাড়েনি।

অফিসারদের জন্য বরাদ্দ নন-এসি লাক্সারি ট্যাক্সির ভাড়া ১৪ বছর বাড়েনি। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:১৫
Share: Save:

বাসভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে টানাপড়েনে যাত্রিসাধারণের ভোগান্তি চলছেই। একই ভাবে ভাড়া-সমস্যায় অফিস ও কাজের প্রয়োজনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ঘোর সঙ্কটের মুখোমুখি হতে চলেছেন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের আমলা ও অফিসারদের বড় অংশ। অফিসারদের জন্য বরাদ্দ নন-এসি লাক্সারি ট্যাক্সির ভাড়া ১৪ বছর বাড়েনি। ওই সময়কার বিএস২ (ভারত স্টেজ২) এবং বিএস৩ শ্রেণির বেশির ভাগ গাড়ির আর খুব বেশি হলে দু’-তিন বছর মেয়াদ রয়েছে। তার পরেই বেশির ভাগ গাড়ি বাতিল করে দিতে হবে। যে-সব গাড়ি বসে যাচ্ছে, সেগুলির জায়গায় এখনকার সরকারি হারে নতুন গাড়ি ভাড়া পাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ছে।

গাড়ি ছাড়া প্রশাসনিক প্রয়োজনে ছোটাছুটি কী ভাবে করা যাবে, তা নিয়ে চিন্তায় অফিসারেরা। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, সরকারের ভাড়া নেওয়া লাক্সারি ট্যাক্সিতে রোজ যাতায়াতের জন্য বরাদ্দ তেলের খরচ ছাড়াও দৈনিক গাড়িভাড়া হিসেবে ৪৬৫ টাকা দেওয়া হয়। এত দিন সেই টাকায় কোনও মতে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছিল ঠিকই, কিন্তু নতুন গাড়ির ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের কিস্তির টাকা, বিমা, পথকর, পারমিট এবং চালকের দৈনিক খোরাকিতে যে-খরচ পড়ছে, তাতে ৪৬৫ টাকায় কুলিয়ে ওঠা যায় না বলে জানাচ্ছেন গাড়িমালিকেরা। তাই মালিকদের তরফে সরকারি অফিসে ভাড়ায় গাড়ি দেওয়ার আগ্রহ কমছে। প্রায় একই কারণে নির্বাচনের সময় অফিসারদের ব্যবহারের জন্য গাড়ি জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়। কাজ চালানোর জন্য রাস্তায় পুলিশ নামিয়ে গাড়ি হুকুমদখল করতে হয় অনেক ক্ষেত্রেই।

গাড়িমালিকদের হিসেব, ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে নতুন গাড়ির দৈনিক কিস্তি পড়ে প্রায় ৫০০ টাকা। চালককে দিতে হয় আরও ৫০০। তার উপরে বাণিজ্যিক গাড়ির বিমা, পথকর, পারমিট বাবদ খরচ মেটাতে আরও ৩০০ টাকা চলে যায়। সব মিলিয়ে দৈনিক খরচ গিয়ে ঠেকে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকায়। সরকারের কাছ থেকে পাওয়া দৈনিক ৪৬৫ টাকায় কোনও খরচই চালানো যায় না। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, কাজ চালানোর জন্য বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক এবং মাঝারি আমলাদের অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের উদ্যোগী হয়ে পরিচিতদের মাধ্যমে গাড়ির ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।

প্রশাসনের শীর্ষ অফিসারেরা সরকারি পুল থেকে বাতানুকূল গাড়ি পান। সরকারের কেনা সেই সব গাড়ি চালান চুক্তিতে নিযুক্ত চালকেরা। কিন্তু এই ধরনের গাড়ির সংখ্যা খুবই কম। তাই নিচু তলার অফিসারেরা তা ব্যবহারের সুযোগ তেমন ভাবে পানই না। ফলে সমস্যা বেশি তাঁদেরই।

সমস্যার দিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সম্প্রতি পরিবহণ ডিরেক্টরেটের প্রধানকে চিঠি দিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটরস গিল্ড। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তেলের খরচ বাদ দিয়ে অন্তত ২০০০ দৈনিক ভাড়ার দাবি জানিয়ে আমরা পরিবহণ দফতরের কাছে চিঠি লিখেছি। সমস্যা দ্রুত না-মিটলে প্রশাসনিক কাজে ব্যবহারের গাড়ি পাওয়া মুশকিল হবে।’’

ঠারেঠোরে সেটা মানছেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরাও। রাজ্যের বিভিন্ন দফতর মিলিয়ে এখন চালু প্রায় ২০ হাজার গাড়ির বেশির ভাগই পুরনো। সেগুলি বসে গেলে তাদের জায়গায় নতুন গাড়ি পাওয়া কার্যত অসম্ভব হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

car Bureaucrats
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy