পূর্ব মেদিনীপুরের উপ শ্রম কমিশনারের ডাকা বৈঠকে যোগ না দিয়ে চিঠি পাঠিয়ে সময় চাইলেন হলদিয়ার মানেকসিয়া অ্যালুমিনিয়াম কারখানার মালিক পক্ষ।
বুধবার দুপুরে ওই কারখানার স্থায়ী কর্মীদের দাবিসনদ (চার্টার অব ডিমান্ড) সংক্রান্ত মতামত শুনতে মালিক পক্ষকে বৈঠকে ডেকেছিলেন জেলার উপ শ্রম কমিশনার মিহির সরকার। কিন্তু, এ দিন সকালেই মানেকসিয়ার গ্রুপ পার্সোনেল ম্যানেজার অনুপম মিত্র দাবিসনদের বিষয়ে মতামত দেওয়ার জন্য সময় চেয়ে মিহিরবাবুর কাছে চিঠি পাঠান। অনুপমবাবু তাঁর চিঠিতে উপ শ্রম কমিশনারকে জানিয়েছেন, পয়লা নভেম্বর চিঠি তাঁদের হাতে এসেছে। এত অল্প সময়ে দাবিসনদ বিষয়ে মতামত দেওয়া সম্ভব নয়। তাই তাঁদের যথেষ্ট সময় দিয়ে বৈঠক ডাকা হোক। স্থায়ী শ্রমিকদের দাবিসনদের একটি প্রতিলিপিও তাঁদের দেওয়ার অনুরোধ জানান অনুপমবাবু। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা দীর্ঘ স্থায়ী সমাধান করে কারখানা খুলতে চাই। সে জন্যই সময় প্রয়োজন।”
এর জেরে এ দিনের পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক আর হয়নি। উপ শ্রম কমিশনার ফের মালিকপক্ষ এবং স্থায়ী কর্মীদের নিয়ে ১২ নভেম্বর বৈঠক ডেকেছেন বলে জানা গিয়েছে। এ দিন উপ শ্রম কমিশনার মিহিরবাবু বলেন, “মানেকসিয়ার স্থায়ী কর্মীদের দেওয়া দাবিসনদ নিয়ে মতামত শুনতে মালিক পক্ষকে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু এ দিন সকালে মালিক পক্ষ চিঠি দিয়ে সময় চেয়েছেন। ফলে এ দিন আর বৈঠক হয়নি। ১২ নভেম্বর মালিকপক্ষ ও সংস্থার কর্মীদের নিয়ে বৈঠক হবে।”
অন্য দিকে, আগামীকাল শুক্রবার হলদিয়ার মিৎসুবিশি কেমিক্যালসের দাবিসনদ সংক্রান্ত জট কাটাতে বৈঠক ডেকেছেন জেলার উপ শ্রম কমিশনার। সেখানে মালিকপক্ষ এবং সব শ্রমিক সংগঠনগুলিকেও আসতে বলা হয়েছে। এই কারখানার আইএনটিটিইউসির নেতা মিলন মণ্ডল জানান, তিনি এ দিন মিৎসুবিশি কারখানার গিয়ে শ্রমিক সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে ছোট একটি বৈঠক করেছেন। সেখানে তাঁরা প্রাথমিক ভাবে দাবিসনদ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “৭ নভেম্বরের বৈঠকেই দাবিসনদ চূড়ান্ত হয়ে যাবে।” মিৎসুবিশির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিটুও দাবিসনদ নিয়ে বৈঠক করে। তবে সেখানে মতপার্থক্য থেকে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই কাখানার সিটু নেতা শান্তনু দাস। তাঁরা সকলেই তাকিয়ে ৭ নভেম্বরের দিকে।
সম্প্রতি মানেকসিয়ার অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বাড়ানো হলেও স্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রে তা হয়নি। স্থায়ী কর্মীরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গত মাসের ৩০ তারিখ থেকে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলন চলাকালীন কারখানার স্থায়ী কর্মীদের বিরুদ্ধে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার নীবেশকুমার সিংহকে মারধরেরও অভিযোগ ওঠে। এই পরিস্থিতিতে স্থায়ী কর্মীরা উপ শ্রম কমিশনারের কাছে দাবিসনদ জমা দেন। গত মাসের ৩১ তারিখে উপ শ্রম কমিশনার কারখানার মালিকপক্ষকে চিঠি দিয়ে স্থায়ী কর্মীদের দাবিসনদ বিষয়ে মতামত শুনতে বুধবার বৈঠক ডাকেন। এ দিকে শাসক দলের ‘দাদাগিরি’-সহ নানা অভিযোগে গত রবিবার এই কারখানা ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্কের’ নোটিশ ঝোলায়। মালিকপক্ষের উপস্থিতিতে স্থায়ী কর্মীদের দাবিসনদ নিয়ে এ দিনের বৈঠকে আলোচনার কথা থাকলেও ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ নিয়েও আলোচনা হত। তাই এ দিনের বৈঠকের দিকে কারখানার কর্মীরা তাকিয়ে ছিলেন। শেষমেষ তা না হওয়ায় তাঁরা হতাশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy